এই পুজো-তে বিসর্জনের আগে দেবীকে দেওয়া হত গার্ড অব অনার
কনকাঞ্জলির পর দেবীকে যে যা প্রনামী দিত, রাজবাড়ির তরফে তাকে দ্বিগুন ফেরত দেওয়া হত...
নিজস্ব প্রতিবেদন: মহালয়ার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে গেল মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গা পুজো। প্রাচীন রীতি মেনে এখানে পুজো শুরু হয় প্রতিপদ থেকে। রাজবাড়ির কূলদেবতা মদন গোপাল জিউয়ের মন্দির লাগোয়া পুকুর থেকে ঘটোত্তলনের মধ্যে দিয়ে পুজো শুরু হয়। রীতি মেনে সেই ঘট পঞ্চমী পর্যন্ত থাকবে দুর্গা মন্ডপের পাশের বেলতলাতে।
আরও পড়ুন- ‘তিনি আছেন এবং সর্বত্রই আছেন’
১৭৭৮ সালে মহিষাদলের রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের পত্নী রানি জানকীদেবি শুরু করেন মহিষাদল রাজবাড়ির দূর্গাপুজো। আগে তিথি অনুযায়ী সেই পরিমান চালের ভোগ নিবেদন করা হত। যেমন পঞ্চমীতে পাঁচমন, ষষ্ঠীতে ছয়মন কিন্তু কালের নিয়মে সেই নিয়ম আজ অতীত। প্রতিপদ থেকে ঘট ওঠার পর ওই জায়গায় একটি মঞ্চ তৈরী করে সেখানে বিভিন্ন শষ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়, পুজোর পর দেখা হয় সেই শষ্যগুলো থেকে কেমন গাছ হয়েছে, যা দেখে সেই বছর কত শষ্য হবে তার আন্দাজ নেওয়া হত এবং সেই মতো ঠিক হত রাজস্ব। রাজস্ব আদায়ের সেই রীতি আজ না থাকলেও প্রথা রয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- উপহার পাওয়া বেনারসী বৌদিকে দিয়ে এলেন মমতা
আগে সন্ধিপুজো-র সময় কামান ফাটানো হত, তাও আজ বন্ধ। রাজ বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনের আগে দেওয়া হত গার্ড অফ অনার। তারপর হিজলি টাইড্যাল ক্যানেল দিয়ে গেঁওখালির রুপনারায়ন নদীতে হত প্রতিমা নিরঞ্জন। এখন পেছনের দীঘিতেই বিসর্জন হয়। বিজয়া দশমিতে রাজবাড়ির বিশেষত্ত্ব ছিল, কনকাঞ্জলির পর দেবীকে যে যা প্রনামী দিত, রাজবাড়ির তরফে তাকে দ্বিগুন ফেরত দেওয়া হত। রাজবাড়ির সেই আভিজাত্য, আড়ম্বর আজ না থাকলেও রয়ে গেছে ঐতিহ্য, আর সেই টানে এখনো রাজবাড়ির পুজোয় ভিড় জমান আমজনতা।