'পাশে আছি', নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মালদায় ২০০ আদিবাসী মেয়ের বিয়ে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী

৫ মার্চ গণবিবাহে 'রূপশ্রী' প্রকল্পের আওতায় ২০০ আদিবাসী কন্যার বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Reported By: কমলিকা সেনগুপ্ত | Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Feb 28, 2020, 10:28 PM IST
'পাশে আছি', নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মালদায় ২০০ আদিবাসী মেয়ের বিয়ে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী

কমলিকা সেনগুপ্ত

ভুবনেশ্বর থেকে ফিরেই মালদায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫ মার্চ মালদায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি গণবিবাহের অনুষ্ঠান রয়েছে। সরকারে 'রূপশ্রী' প্রকল্পের আওতায় এই গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। সেই গণবিবাহ অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এক মাস আগেই আদিবাসীদের বিয়ে দিয়ে ধর্মান্তরকরণ করার অভিযোগ ওঠে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে। মালদায় VHP আদিবাসীদের বিয়ে দিয়ে ধর্মান্তকরণ করছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারও করা হয়। এবার রূপশ্রী প্রকল্পের আওতায় গণবিবাহের আয়োজন করে তৃণমূল শিবির পাল্টা আদিবাসীদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চায় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। আদিবাসীদের সব প্রয়োজনে সবসময় তাঁর সরকার পাশে আছে, নিজে উপস্থিত থেকে সেই বার্তা-ই যেন দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উল্লেখ্য, 'রূপশ্রী' প্রকল্পে বিয়েতে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফে। যেসব পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি কম, তাদের ক্ষেত্রে মেয়ের বয়স ১৮ হওয়ার পর বিয়ের জন্য এককালীন ২৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। এখন এই 'রূপশ্রী' প্রকল্পের কথা আদিবাসীরা যাতে আরও ভাল ভাবে জানতে পারে, আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রকল্পের কথা যাতে ছড়িয়ে পড়ে, সেই কারণেই গণবিবাহের আয়োজন। বার্তা দেওয়ার প্রসঙ্গ উড়িয়ে এমনটাই দাবি করেছে ঘাসফুল শিবির। ৫ মার্চ গণবিবাহে 'রূপশ্রী' প্রকল্পের আওতায় ২০০ আদিবাসী কন্যার বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি পুরাতন মালদহে গণবিবাহ ঘিরে বাঁধে তুলকালাম। আটমাইলে আদিবাসী যুবক-যুবতীদের গণবিবাহের ব্যবস্থা করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ঝাড়খন্ড দিশম পার্টি। দুপক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। পুরাতন মালদহ থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বিশাল পুলিসবাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিবাহ অনুষ্ঠান। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের ১২ হাজার টাকা করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ উড়িয়ে ভিএইচপি জানায়, আদিবাসীরা সমাজেরই অংশ। বিয়ের অনুষ্ঠানের যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরাই এসেছিলেন। আদিবাসীদের ভুল বোঝানো হয়েছে।

আরও পড়ুন, আজ মমতার সঙ্গে সাক্ষাত, কলকাতা এসে কালীঘাটে যাবেন অমিত

আরও পড়ুন, ক্ষমতাসীন দল বলে যেন বেশি সুবিধা না পায়, পুরভোট নিয়ে সংবিধানের পাঠ দিলেন ধনখড়

এরপরই বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলতে শোনা যায়,''বদমাইশি করে মালদহে আদিবাসী মেয়েগুলিকে ধর্মান্তরণ করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছিল বিজেপির লোকগুলো। আমরা আটকাই। শুধু আটকানোই, পুলিস ওদের বিয়ে দিয়েছে। আলিপুরদুয়ারেও হয়েছিল।'' তারপর দুর্গাপুরের প্রশাসনিক সভাতেও আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ নিয়ে দল ও প্রশাসনকে সতর্ক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন,''অনেক দুষ্টু লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওদের অনেক টাকা আছে। ৭ মাসে ৩০০ টাকা বেড়েছে গ্যাসের দাম। সেদিকে খেয়াল নেই। আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ করতে গিয়ে মালদহে কয়েকটা ছেলেমেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমরা গরিব হতে পারি তবে এটা মানবিক সরকার। পুলিস দেখলে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা করে দেবে। ২৫ হাজার টাকা করে রূপশ্রী তো আছেই। কোনও ধর্মান্তরণ করতে দেব না।''

.