মর্মান্তিক! কানে শুনতে পায় না সন্তান, অবসাদে ১ বছরের ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী মা
দোতলা বাড়ির উপরের ঘরে ছেলেকে নিয়ে একাই ছিলেন বৈশাখী। পুত্রসন্তানকে বিষ খাইয়ে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : কানে শুনতে পেত না সন্তান। অনেক চিকিত্সার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। চিকিত্সকরা বলে দিয়েছিলেন, কানে কোনওদিনই শুনতে পাবে না সন্তান। আর সেই মানসিক অবসাদেই এক বছরের পুত্রসন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন মা। অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের হীরাপুরে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে, মৃতার নাম বৈশাখী মাজি। বৈশাখী আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এক স্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। স্বামী পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে কর্মরত। হীরাপুরের রাধানগরে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন বৈশাখী। স্বামী কর্মসূত্রে কাটোয়ায় থাকেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈশাখীর পুত্রসন্তান কানে একদমই শুনতে পেত না। বহু চিকিৎসা করানোর পরেও কোনও লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছিলেন, কানে কোনওদিনও শুনতে পাবে না ওই শিশু। চিকিৎসকদের কাছ থেকে এই কথা শোনার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বৈশাখী।
শেষে সোমবার রাতে এক বছরের পুত্রসন্তানকে বিষ খাইয়ে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হন বৈশাখী। সোমবার রাতে যখন এই ঘটনা ঘটে সেই সময় বৈশাখীর স্বামী কর্মসূত্রে কাটোয়ায় ছিলেন। দোতলা বাড়ির উপরের ঘরে ছেলেকে নিয়ে একাই ছিলেন বৈশাখী। আর নীচে একতলায় থাকেন শ্বশুর-শাশুড়ি। মঙ্গলবার সকালে বৈশাখী ঘুম থেকে না বউমাকে ডাকতে যান শ্বশুরমশাই। কিন্তু অনেক ডাকাডাকির পরেও দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় তাঁদের। খবর দেওয়া হয় বৈশাখীর বাপেরবাড়িতে।
এরপরই বৈশাখীর ভাই এসে দরজা ভেঙে ঘরের মেঝেতে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন শিশুটিকে। শিশুটির মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। আর ওদিকে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় বৈশাখীর দেহ। এই ঘটনায় খবর দেওয়া হয় হীরাপুর থানায়। পুলিস এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। শোকস্তব্ধ গোটা পাড়া।
আরও পড়ুন, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি, কালোবাজারির ভয়ে আশঙ্কিত একাংশ চিকিত্সক মহল