গুলি করেই খুন দেবাঞ্জনকে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ বুলেটের দুটি ক্ষতচিহ্নের কথা

খুনের ঘটনার তদন্তে গাফিলতির জন্য নিমতা থানার আইসি-র বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Reported By: কমলিকা সেনগুপ্ত | Updated By: Oct 18, 2019, 03:06 PM IST
গুলি করেই খুন দেবাঞ্জনকে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ বুলেটের দুটি ক্ষতচিহ্নের কথা

নিজস্ব প্রতিবেদন : গুলি করেই খুন করা হয়েছে দেবাঞ্জন দাসকে। নিমতায় যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সাফ খারিজ হয়ে গেল পুলিসের খাড়া করা গাড়ি দুর্ঘটনার তত্ত্ব। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ, নিহত দেবাঞ্জনের দেহে বুলেট ইনজুরি পাওয়া গিয়েছে। বুলেটের আঘাতের ফলে মোট দুটি ক্ষতচিহ্নের প্রমাণ মিলেছে নিমতার যুবকের শরীরে। অন্যদিকে, খুনের ঘটনার তদন্তে গাফিলতির জন্য নিমতা থানার আইসি-র বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে আইসি-র ভূমিকা। পাশাপাশি, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামে ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে শুরু হয়েছে তদন্ত।

প্রসঙ্গত, নিমতায় যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিসের গড়িমসিতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ ব্যারাকপুরের পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। এদিন নিমতা থানায় আসেন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। দেবাঞ্জনের গাড়িটি তিনি নিজে ঘুরে দেখেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট জানান, নিহত দেবাঞ্জনের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন এফআইআর নেওয়া হয়নি? তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা।   

নবমীর দিন রাতে বান্ধবীকে বাড়িতে নামিয়ে ফেরার পথে মৃত্যু হয় নিমতার দাগা কলোনির বাসিন্দা দেবাঞ্জন দাসের। পুলিসের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দেবাঞ্জনের বাবা। বিরাটি ব্রিজে গাড়ির ভিতর উদ্ধার দেবাঞ্জন দাসের রক্তাক্ত দেহ। তবে পুলিস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা বললেও ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ির চেহারা দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের। এরপর দশমীর সকালে অভিযোগ জানাতে নিমতা থানায় যান দেবাঞ্জনের বাবা। তখনই তাঁর নজরে আসে যে, গাড়ির ব্রেক প্যাডেলের কাছে পড়ে রয়েছে বুলেটের টুকরো। ড্যাসবোর্ডের নীচে পাওয়া যায় গুলির খোল। এরপরই এই ঘটনায় বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনেন নিহত দেবাঞ্জনের বাবা।

কিন্তু নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দশমীর সকালে তাঁরা যখন নিমতা থানায় অভিযোগ জানাতে যান, তখন তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর নেয়নি পুলিস। পাশাপাশি পুলিসের গাড়ি দুর্ঘটনার তত্ত্ব খারিজ করে দেবাঞ্জনের বাবা আরও অভিযোগ করেন, গাড়িটি যদি দুর্ঘটনার কবলে পড়ত, তাহলে চালকের সিটের এয়ারব্যাগ খুলে যেত। কিন্তু গাড়িতে থাকা এয়ারব্যাগ খোলেনি। ঘটনার পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও গাড়িটির এখনও কোনও ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়নি।

আরও পড়ুন, আড়াই মাসের সম্পর্কেই কি বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে 'খুন' নিমতার যুবক? মৃত্যু ঘিরে একাধিক প্রশ্ন

বুধবার রাতে জি ২৪ ঘণ্টায় এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিস। সূত্রের খবর, গতরাতেই মৃতের বাবার সঙ্গে কথা বলেন নিমতা থানার আইসি। এরপর আজ নিমতা থানায় ছুটে আসেন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। নিমতা থানার অফিসারদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সারেন তিনি। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কথা হয় সেই বৈঠকে। একইসাথে মনোজ ভার্মা নিজে গাড়িটি ঘুরে দেখেন। শেষমেশ ৮ দিন পর আজ প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা হয় গাড়িটি।

.