'HIV পজিটিভ', তাই পা ভাঙা নিয়ে দেড় মাস ধরে বিনা চিকিৎসায় মালদা মেডিকেলে পড়ে রোগী
"এই রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বড় বড় কথা বলা হয় কিন্তু বাস্তবে কী অবস্থা তা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয়ে যায়।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এবার মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। ভাঙা পা নিয়ে হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন রোগী। কিন্তু ওই রোগী HIV পজিটিভ হওয়ায় তাঁর কোনও চিকিৎসা-ই করছেন না চিকিৎসকরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে চিকিৎসার দাবিতে এবার জেলাশাসকের মারফত মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই রোগীর পরিবার। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যক্ষ চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়।
মালদার ইংরেজবাজারের মাধবনগর এলাকার বাসিন্দা পেশায় রংমিস্ত্রি এক ব্যক্তি মে মাসের ২৯ তারিখ নাগাদ একটি নির্মীয়মাণ ভবনে কাজ করতে গিয়ে তিন তলা থেকে পড়ে গুরুতর জখম হন। তাঁর ডান পা ভেঙে যায়। তার পরিবারের সদস্যরা তাঁকে তখন শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসক জানাযন, তাঁর ডান পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এরপরই তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এইচআইভি পজিটিভ আসে। সেইসময় ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারকে জানায় যে এইচআইভি রোগীর চিকিৎসা করার মত পরিকাঠামো তাদের নেই। তাই তাঁরা যাতে কোনও সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান ওই রোগীকে।
সেইমতো জুন মাসে ওই রোগীকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, এইচআইভি সংক্রমণ থাকায় তাঁর অস্ত্রোপচার করছেন না হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন ওই রোগী। এদিকে এই অভিযোগ সামনে আসতেই সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির মালদা জেলার সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এই রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বড় বড় কথা বলা হয় কিন্তু বাস্তবে কী অবস্থা তা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয়ে যায়। যেসকল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর চিকিৎসা করছেন না, তাঁদের ওই রোগীর চিকিৎসা করতে হবে। ওই রোগীর চিকিৎসা করার জন্য যা যা করার, বিজেপি তাই করবে।
এই ঘটনা শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসুও। তিনি বলেন, বিনা চিকিৎসায় এই রাজ্যে কেউ মারা যাবে না। এটা সরকারের ঘোষিত নীতি। ওই রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। তাঁর সম্পূর্ণ চিকিৎসা করা হবে। শাসক দল ও সরকার তাঁর পাশে থাকবে। অন্যদিকে, মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "অভিযোগ পেয়েছি। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই রোগীর চিকিৎসা করা হবে। কেন এতদিন চিকিৎসা করা হয়নি সংশ্লিষ্ট বিভাগের যিনি আধিকারিক আছেন, তাঁর কাছে কারণ দর্শাতে বলা হবে।"
আরও পড়ুন, ৩ মাসের প্রসূতির পেটে লাথি, মাঝরাতে জানলা ভেঙে গৃহবধূকে খুনের চেষ্টা তৃণমূল নেতার!