মিড-ডে মিলের চাল-ডিম গায়েব, জুটছে শুধু নুনভাত! খবর পেতেই স্কুলে হানা সাংসদ লকেটের
স্কুলবোর্ডে মিড-ডে মিলের মেনুতেও লেখা ফেনাভাত, নুন ও লঙ্কা।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ২৫ হাজার টাকার ডিম কেনা হয়েছে, কিন্তু ছাত্রীরা পায়নি একটাও। ২৫৬ বস্তা চালের কোনো হদিশ নেই। গত কয়েক মাস ধরে কখনো ফেনা ভাত, কখনও আলুসিদ্ধ ভাত খেতে হচ্ছে ছাত্রীদের। ডিআই থেকে ডিএম সর্বত্র
জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। মিড-ডে মিল নিয়ে এমনই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে হুগলীর চুঁচুড়ার বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে। দুর্নীতির এই অভিযোগ পেয়েই আজ সোজা স্কুলে এসে হাজির হন স্থানীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
মিড-ডে মিলে সোয়াবিন, ডিম, সবজি- ভাতের সঙ্গে এক একদিন এক-একটা দেওয়ার কথা। কিন্তু, স্কুলে গিয়ে দেখা যায় বাস্তব ছবিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অভিযোগ, মিড-ডে মিলে নুনভাত, ফেনাভাত খাচ্ছে পড়ুয়ারা। এমনকি, স্কুলবোর্ডে মিড-ডে মিলের মেনুতেও লেখা ফেনাভাত, নুন ও লঙ্কা। বিগত কয়েকদিন ধরে এই অবস্থাই চলছে স্কুলে। কখনও এই নুনভাতের সঙ্গে পাঁপড়ভাজা, কখনও একটু আলুসেদ্ধ। যে মিড-ডে মিল পড়ুয়াদের পুষ্টির কথা মাথায় রেখে দেওয়ার কথা, সেখানে তাদের দেওয়া হচ্ছে নুনভাত। পুষ্টির কোনও নামগন্ধ নেই সেখানে।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, স্কুলে কোনও প্রধান শিক্ষিকা বা টিচার-ইন-চার্জ নেই। এই অব্যবস্থার জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্কুল পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে। যদিও পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় দায় চাপিয়েছেন, স্কুলেরই চার শিক্ষিকার উপর। তিনি বলেন, ৪ জন শিক্ষিকার জন্য মিড-ডে মিলে অচলাবস্থা হয়েছে। পরিচালন সমিতির ঠিক করে দেওয়া টিআইসিকে অন্য শিক্ষিকারা মানছেন না। এরফলে সই করার অথরিটি না থাকায় এই অবস্থা। স্কুলে টাকা নেই এমন নয়। কিন্তু কেউ কোনও দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। গোটাটাই অন্তর্ঘাত বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন, '৪০০ জনের জন্য ২টো বাথরুম?' হাওড়ায় বস্তিবাসীদের অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে দুর্নীতির খবর পেয়ে আজ বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে ছুটে আসেন স্থানীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। স্কুলে এসে ঘুরে দেখেন পরিস্থিতি। কথা বলেন স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে। পড়ুয়াদের ফেনাভাত, নুনভাত খেতে দেখে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। হুঁশিয়ারি দেন, "ছাত্রীদের মুখের খাবার যারা কেড়ে নিয়েছে, তাদের রেয়াত করা হবে না।" স্কুলের মিড-ডে মিল নিয়ে এই অচলাবস্থা অবিলম্বে দূর করার আশ্বাস দেন সাংসদ।