Raiganj Murder: ঘনিষ্ঠ মুহূর্তেই সুপ্রিয়ার গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়, ম্যারাথন জেরার কবুল অভিযুক্ত প্রবালের
হেফাজতে থাকার সময় প্রবালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জলপাইগুড়ি বামুনপাড়া এলাকায় প্রবালের বাড়ি থেকে পুলিস খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র, সেদিনের প্রবালের পোষাক, ব্যাগ সহ আরও কিছু প্রমাণ ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছে
ভবানন্দ সিংহ: ম্যারাথন জেরায় ভেঙে পড়ল রায়গঞ্জের গৃহবধূ সুপ্রিয়া দত্ত খুনে মূল অভিযুক্ত প্রবাল সরকার। কীভাবে সে সুপ্রিয়াকে খুন করেছিল তার অনুপুঙ্খ বর্ণনা দিল অভিযুক্ত। এমাসের ১১ তারিখ নিজের বাড়িতে খুন হন রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা সুপ্রিয়া দত্ত। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ও মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে গত ১৭ নভেম্বর ফালাকাটা থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই গৃহবধূর বিশেষ বন্ধু প্রবালকে। ওই দিনই ১০ দিনের জন্য প্রবালকে হেফাজতে পায় পুলিস। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল সম্পর্কের টানাপোড়েনেই খুন হয়েছেন সুপ্রিয়া।
আরও পড়ুন-নকআউটে টিকে থাকল কোস্টারিকা! দুরন্ত জয়ের নায়ক ফুলার-নাভাস
প্রবালকে হাতে পেয়েই শুরু হয়ে যায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিস সূত্রে খবর, বিভিন্নভাবে পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল প্রবাল। কিন্তু টানা জেরায় রোজই একটু একটু করে তার বয়ানে অসংগতি ধরা পড়ে যাচ্ছিল। সেই অসংগতির সমাধান করতে গিয়ে আরও মিথ্যে বলে ফেঁসে যাচ্ছিল সে। শেষপর্যন্ত ৮ দিনের মাথায় জেরায় ভেঙে পড়ে। কীভাবে খুন, কেন এমন ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত তা পুলিসের কাছে স্বীকার করে নেয় প্রবাল।
পুলিস সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সুপ্রিয়াকে খুনের জন্য বাইকে চড়ে তার বাড়িতে আসে প্রবাল। সঙ্গে থাকা ব্যাগের মধ্যে ছিল একটি ধারাল ছুরি। ঘরে ঢোকার পর তার ব্যবহার এমনই ছিল যে তার মনোভাব ঘূণাক্ষরেও টের পায়নি সুপ্রিয়া। ঘরে ঢোকার বেশ কিছুক্ষণ পর সুপ্রিয়ার বেডরুমে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় অতর্কিতে সুপ্রিয়ার গলা ছুরি দিয়ে কোপ মারে প্রবাল। এখানেই থেমে থাকেনি প্রবাল, গলা কেটে ফেলার পর একই জায়গায় পরপর ৪ বার আঘাত করে প্রবাল। সেইসময় প্রবালের বাঁ হাতেও সামান্য ক্ষত হয়ে যায়।
এদিকে, খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য যা করার তা করে প্রবাল। প্রথমেই সে সুপ্রিয়ার দুটি মোবাইল ফোন ব্যাগে পুরে নয়। তারপর বাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর রায়গঞ্জ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বিলাসপুরে সবকটি ফোনকে সুইচড অফ করে দেয়। এর পর একাধিক বার নিজের আস্তানা বদল করে, মাথার চুল কামিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে শুরু করে।
অন্যদিকে, হেফাজতে থাকার সময় প্রবালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জলপাইগুড়ি বামুনপাড়া এলাকায় প্রবালের বাড়ি থেকে পুলিস খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র, সেদিনের প্রবালের পোষাক, ব্যাগ সহ আরও কিছু প্রমাণ ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছে। তবে এই খুনের মোটিভ নিয়ে যে স্বীকারোক্তি প্রবাল দিচ্ছে সেটা তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি বলেই পুলিস সুত্রে খবর। প্রবালকে হেফাজতে নিয়ে এই খুনের ঘটনার পুনঃনির্মাণের পরিকল্পনা করেছে পুলিস।