Bhangor: মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়ি যাওয়ার পথে বাধা, ভাঙড় কলেজমোড়ে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ শওকত-আরাবুলদের
Bhangor:ঘটনাস্থলে ভাঙড় থানা, কাশীপুর থানার পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শওকত মোল্লা। তার পরেই রাস্তায় বলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শওকতরা। তাঁদের দাবি, মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়ি যাওয়াতে কেন বাধা দেবে পুলিস?
প্রসেনজিত্ সরদার: ফের উত্তাপ বাড়ছে ভাঙড়ে। ভাঙড় কলেজ মোড়ে বসে পুলিসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন তৃণমূল নেতা-সমর্থকরা। এনিয়ে উত্তপ্ত হল এলাকা। কেন এই বিক্ষোভ? শনিবার কাঁটালিয়ায় নিহত তৃণমূল কর্মী বাড়ি যাচ্ছিলেন আরাবুল ইসলাম, সওকত মোল্লা-সহ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। তাদের সেখানে যেতে বাধা দেয় পুলিস। তার পরেই ভাঙড় কলেজ মোড়ে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শওকতরা।
আরও পড়ুন-পুলিস মমতার লেঠেল; রাজ্যে ৩৫৫ ধারার পক্ষে সওয়াল শুভেন্দুর, সুকান্ত বললেন অন্য কথা
লাগাতার গন্ডগোলের জেরে ভাঙড় ১ ও ভাঙড় ২ অঞ্চল সহ কাশীপুর থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তার মধ্যে ভাঙড় থানা এলাকায় একুশে জুলাইয়ের কর্মীসভা সারে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি, তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা কাঁঠালিয়ার নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই ভাঙড় কলেজ মোড়ের কাছে পুলিস তাদের আটকে দেয়। চলে আসে ভাঙড় থানা, কাশীপুর থানার পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শওকত মোল্লা। তার পরেই রাস্তায় বলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শওকতরা। তাঁদের দাবি, মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়ি যাওয়াতে কেন বাধা দেবে পুলিস? পরিস্থিতি বুঝে বিশাল পুলিস বাহিনী এসে তাদের ঘিরে রাখে। পুলিস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। কাউকেই যেতে দেওয়া হবে না।
এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় গতকাল ভাঙড়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। ঠিক একইভাবে আজ মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়িকে শওকতদের যেতে বাধা দেয় পুলিস। বিক্ষোভ নিয়ে শওকত মোল্লা বলেন, ভোগালিতে ১৭৪ নম্বর বুথ প্রেসিডেন্টকে গত ৭ জুলাই আইএসএফের দুষ্কৃতীরা মারধর করে। তার বুকের পাঁজর ভাঙে, মাথায় ১৪টা সেলাই হয়। কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পর আজ সকালে তাঁর মৃ্ত্যু হয়। এখন মৃতদেহ এসেছে। আমরা তাঁর শেষকৃত্যে যাচ্ছি। পুলিস বলছে যেতে দেব না।
এদিকে, আাগামিকাল ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড় যেতে পারেন বলে খবর। তবে পুলিস তাকে সেখানে ঢুকতে দেবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাঁর বক্তব্য হল ভাঙড়ে শাসক দলের নেতারা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছেন। তাই তিনিও সেখানে যাবেন। ভাঙড়ে আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা স্বস্তিতে নেই। তাই তিনি সেখানে যাবেন। ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও তিনি ভাঙড়ের বিধায়ক।
অন্যদিকে, বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চালানোর পর রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বিক্ষোভ তুলে নেয় তৃণমূল। পুলিসের আশ্বাসে বিক্ষোভ উঠেছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, ছিল মৃত তৃণমূল কর্মীর শেষকৃত্যে তাদের যেতে দেওয়া হোক। তবে পুলিস আশ্বাস দিয়েছে ওই তৃণমূল কর্মীর উপরে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। বিক্ষোভ তুলে নেওয়া নিয়ে সওকত মোল্লা বলেন, আমাদের দাবি ছিল মোসলেম সেখের যারা খুনি, যাদের নামে আমরা এফআইআর করেছিলাম তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এর পাশাপাশি গত ১৫ দিন ধরে ভাঙড়ে যে তাণ্ডবলীলা, গণনার দিন পুলিসের উপরে যে গুলি বর্ষণ, তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এই তাণ্ডবের নায়ক কারা তাদের রঙ না দেখে গ্রেফতার করতে হবে। এনিয়ে রাজি হয়েছেন পুলিসের কর্তারা। একইসঙ্গে আমরা আইনকে সম্মান জানাই, আমরা আইএসএফের মতো বোমা-গুলি চলাতে পারি না। তাই আমরা আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিক্ষোভ তুলে নিলাম। ১৪৪ ধারা উঠে যাওয়ার পর আমরা তৃণমূল কর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়াব।