স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভর্তিতে নারাজ একের পর এক হাসপাতাল, ১৩ ঘণ্টা পর মৃত্যু বৃদ্ধের
১৩ ঘণ্টার টানাপোড়েনের পর মৃত্যুর হয় রোগীর। গোটা ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়াল দুর্গাপুরের জব্বর পল্লীতে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম প্রৌঢ়কে নিয়ে একাধিক হাসপাতাল ঘুরেও মিলল না স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসার পরিষেবা। অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাবেন জেনে কোনও বেসরকারি হাসপাতালই ভর্তি নিতে চায়নি। ১৩ ঘণ্টার টানাপোড়েনের পর মৃত্যুর হয় রোগীর। গোটা ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়াল দুর্গাপুরের জব্বর পল্লীতে।
মৃতের নাম নির্মল মন্ডল। শনিবার দুপুরে বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এক ব্যক্তি। চিকিৎসার জন্য তাঁকে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কেউ ভর্তি না নেওয়ায় শেষমেশ রবিবার সকাল আটটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
উত্তেজিত গ্রামবাসীরা এরপর মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। রবিবার ভোর রাত থেকে দুর্গাপুরের জব্বরপল্লীতে এই রাস্তা অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরী হয়। বছর ৬২র নির্মল মন্ডল গতকাল দুপুর বারোটা নাগাদ পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর ফরিদপুর থানা এলাকার জব্বরপল্লীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ইস্পাত নগরীর আশিস মার্কেটে একটি ঘড়ির দোকান আছে নির্মলবাবুর। শনিবার দুপুরে দোকান বন্ধ করে যখন জব্বরপল্লীতে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন নির্মল মন্ডল। তখন একটি মোটর বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে তাকে।
এরপরেই প্রথমে দুর্গাপুর মহুকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয় তাকে। সেখান থেকে পাঠানো হয় অনাময় সরকারী সুপারস্পেসিলাটি হাসপাতালে। সেখান থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করার কথা বললে নির্মল বাবুর পরিবারের সদস্যরা তাকে কলকাতা না নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে যায়।
অভিযোগ স্বাস্থ্য সাথীর কথা শুনে হাসপাতাল নির্মল মন্ডলকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে। বলা হয় বেড নেই। এরপর আবার অন্য এক হাসপাতালের নিয়ে গেলে সেখানেও বেড না থাকার অভিযোগ করেছে পরিবার। শেষে ভোর তিনটে নাগাদ হাসপাতালের বাইরে গাড়িতে মারা যান নির্মল মন্ডল।
এরপর মৃতদেহ নিয়ে এসে উত্তেজিত জনতা মৃতের ক্ষতিপূরণ আর এলাকার ব্যস্ততম রাস্তায় বাম্পার আর ট্রাফিকের দাবিতে জব্বরপল্লী রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। আটকে পড়ে সমস্ত যানবাহন।দুর্ঘটনাস্থল কোনো থানা এলাকায় পড়ে এই নিয়ে শুরু হয় দুর্গাপুর থানা ও লাউদোহা থানার দড়ি টানাটানি। আর এর জেরে যানবাহনের লম্বা লাইন পড়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।