সম্প্রীতির ভাসানে নেই প্রাণের টান
করোনা থাবা বসাল ইছামতীর তীরেও
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারত-বাংলাদেশের 'আনঅফিশিয়াল' মিলনক্ষেত্র হল বসিরহাটের টাকির ইছামতীতীর। কেননা প্রতিবার এখানে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা ভাসানকে কেন্দ্রে করে এক মহা মিলনোৎসবের আবহ রচিত হয়। কিন্তু এ বারে সে সবই বন্ধ। করোনা সব কিছুতেই লাগাম পরাতে বাধ্য করেছে।
যদিও এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক অতীতের ইতিহাস বলছে, কয়েকবছর আগে এই দশমীর দিনে বিপুল মানুষের সমাগমে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল টাকি। নদীবক্ষে দেখা গিয়েছিল বিপুল বিশৃঙ্খলা। ঘটেছিল মৃত্যুও। আর তার পর থেকেই জনসমাগমের ওপর একটা নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়েছিল।
সেই ধারাই গত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। আর এ বারে করোনার আবহে সেই ধারাই যেন বেশি করে চোখে পডছে। কেননা, সেই ভিড় নেই, জনসমাগম অতি অল্প, সেই উল্লাস নেই, নেই সেই প্রাণের টানও।
টাকিতে বিকেলেই ভাসান হয়। এ বার কিন্তু নির্দেশ আছে, বিকেল পাঁচটার মধ্যেই সাঙ্গ করতে হবে নিরঞ্জন। সকাল সকাল তাই শুরুও হয়ে গিয়েছে বিসর্জন। দশমীর বিধিসম্মত পুজো শেষ হতেই তাই ইছামতীর তীরে শুরু একে একে আসতে শুরু করেছে প্রতিমা।
এ অঞ্চলে একটা প্রথা আছে। আগে 'পুববাড়ি'র প্রতিমা নিরঞ্জন হবে, তার পরে বাকি প্রতিমা নিরঞ্জন হবে। এখন অবশ্য আর সে ভাবে মানা সম্ভব হয় না। তবে এখনও এ অঞ্চলে রাজবাড়ির পুজো হিসেবে যে পুজোগুলি চিহ্নিত সেই প্রতিমাগুলিই আগে ভাসান হয়। তার পরে অন্যান্য বাড়ির পুজো বা বারোয়ারির ঠাকুর ঘাটে আসে।
ইছামতীর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, বেয়ারার কাঁধে চড়ে প্রতিমা এল টাকি রাজবাড়ির ঘাটে। এখনও তাতে বিলীয়মান আলোর মতো লেগে রয়েছে ঐতিহ্য আর বনেদিয়ানার মধুর স্পর্শ। যে উত্তাপটুকু নিয়ে বেঁচে থাকে, বেঁচে থাকবে বাঙালি সংস্কৃতি।
আরও পড়ুন: মুসলিমদের জন্য সংগ্রহশালার আবেদন ফেরাল বিজেপি