Tapas Saha: ইডি-সিবিআই সাঁড়াশি চাপে এবার তাপস! 'দলের লোকই ফাঁসিয়েছে', দাবি নিজামে এসেও
৪ দিনের মাথায় পাল্টি খেলেন তাপস সাহার আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালও। আগের দিন প্রবীর কয়াল বলেছিলেন, তাপস সাহা তাঁকে দিয়ে টাকা তুলিয়েছেন। এদিকে আজ বললেন, তিনি ও তাপস সাহা দুজনেই ষড়যন্ত্রের শিকার। চাকরির বিক্রির সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন। একেবারে ডিগবাজি!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তাপস সাহাকে সিবিআই তলব। তলব পেয়ে নিজাম প্যালেসে হাজিরা নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়কের। হাজিরা দিতে এসে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাপস সাহা। তাঁর সাফ দাবি, 'দলের লোকই ফাঁসিয়েছে, আমি চক্রান্তের শিকার। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।' প্রসঙ্গত, গতকালই তাপস সাহাকে নোটিস পাঠায় সিবিআই। ওদিকে এবার ইডির নজরেও বিধায়ক তাপস সাহার দুর্নীতি। সিবিআইয়ের কাছে এই দুর্নীতি নিয়ে প্রাথমিকভাবে তথ্য নিয়েছে ইডি। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চাকরি বিক্রিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ। সেই আর্থিক লেনদেন নিয়েই প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিল ইডি। সিবিআইয়ের এফআইআরের সূত্র ধরেই তাপস সাহার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে পারে ইডি। এমনই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জল চোখে বিধায়ক তাপস সাহা দাবি করেছিলেন, 'দলের দুই যুবনেতার নাম বলতে চাপ দিচ্ছে সিবিআই। পরিকল্পনামাফিক সিবিআই তদন্ত করতে এসেছে। রাজনৈতিক স্বার্থে তদন্ত করছে সিবিআই। আমি রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের শিকার। ষড়যন্ত্র করছে আমাদের দল তৃণমূলের একাংশ। ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল-বিজেপি দলের লোকেরা। টিনা সাহা সহ অনেকে ষড়যন্ত্রে জড়িত। সিবিআইকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছি। আমার কাছ থেকে কিছুই পায়নি সিবিআই। সিবিআই বলছে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার দুটো মোবাইল নিয়েছে সিবিআই। আমার ছেলের কাগজপত্র নিয়েছে।'
যদিও সিবিআই-এর তল্লাশিতে গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলে খবর। সিবিআই সূত্রে খবর, তল্লাশি তাপস সাহার বাড়িতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি মিলেছে। পাশাপাশি, মিলেছে একাধিক সরকারি দফতরে নিয়োগের নথিও। বিধায়কের ফোনও বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। যদিও তাপস সাহা বার বার দাবি করে আসছেন, তিনি চক্রান্তের শিকার। তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না। তাঁর দাবি, '৪ বছরে টিনা সাহা ৪০ কোটির মালিক হয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে এবং সুমিত বলে দায়িত্বে রয়েছে আমাদের একটি ছেলে। এদের নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন টিনা সাহা ভৌমিক। যেদিন দল জানতে পারবে এই মেয়েটি এরকম, সেদিন দলের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। ওদের ভাঙিয়ে খাচ্ছে টিনা।'
এদিকে, তল্লাশি শেষে সিবিআই ফিরে যাওয়ায়, তাপস সাহাকে গ্রেফতার না করায়, সেদিন রাতে বিধায়কের বাড়ির বাগানে খাসির মাংসের পিকনিক করেন কর্মীরা! দলীয় কর্মীদের নিজে হাতে খাওয়ান বিধায়ক নিজে। বিধায়ক কার্যালয়ের পাশে তাপস সাহার বাড়ির বাগানেই কাটা হয় খাসি। তারপর সেই খাসির মাংস রান্না করে চলে ভূরিভোজ! যে প্রসঙ্গে তাপস সাহা জানান, তাঁর কর্মীরা যখন শুনেছেন তাপস সাহার বাড়ি থেকে সিবিআই কিছু পায়নি, সিবিআই তাপস সাহাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়নি, তখন কর্মীরা শুভেচ্ছা জানাতে সোজা বাড়িতে চলে আসেন। কর্মীরা নিজেরাই খাসি নিয়ে আসেন।
পাশাপাশি, ৪ দিনের মাথায় পাল্টি খেলেন তাপস সাহার আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালও। আগের দিন প্রবীর কয়াল বলেছিলেন, তাপস সাহা তাঁকে দিয়ে টাকা তুলিয়েছেন। এদিকে আজ বললেন, তিনি ও তাপস সাহা দুজনেই ষড়যন্ত্রের শিকার। চাকরির বিক্রির সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন। এসিবি হেফাজত থাকাকালীন জোর করে বয়ান লেখানো হয়। একেবারে ডিগবাজি!
আরও পড়ুন, Abhishek Banerjee: BSF-এর গুলিতে নিহতদের পরিবারের পাশে অভিষেক, কেন্দ্র না দিলে বাড়ি দেবে রাজ্য-ই!