বর্ধমান, শিয়ালদহের নাম পরিবর্তনে প্রয়োজন রাজ্যের সম্মতির, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কেন্দ্র যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা করার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে, সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্টেশনের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাজ্যের মতামত নেওয়ার আবশ্যিকতা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: এবার বাংলার দুই স্টেশনের নাম বদলের উদ্যোগ কেন্দ্রের। বর্ধমান স্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করার প্রস্তাব ও শিয়ালদহ স্টেশনের নামে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করার সুপারিশ। মোঘলসরাই স্টেশনের নামে দিলদয়াল উপাধ্যায় করার পর এবার কি তবে বর্ধমান ও শিয়ালদহর পালা। রাজ্যের নাম পরিবর্তন আপাতত ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে, সেই রাজ্যেরই দুটি স্টেশনের নাম পরিবর্তনে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি।
এই নাম পরিবর্তন নিয়ে সাধারণ মানুষ তথ্য নিত্যযাত্রীদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। তবে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে পাটনায় গিয়ে নিত্যানন্দ রায় প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদলে বটুকেশ্বর দত্ত করা হোক। প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিল বিপ্লবীর পরিবার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার নিশ্চিতভাবে বর্ধমান স্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করবে। সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। ”
এবিষয়ে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের মেয়ে ভারতী দত্ত বাগচি বলেন, “আমার খুব ভালো লাগছে বিপ্লবীকে সবাই মনে রেখেছে। ওঁর আত্মা শান্তি পাবে।”
তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। অনেকেরই মত, বাংলার প্রস্তাব কেন্দ্র মানেনি অথচ বর্ধমান ও শিয়ালদহ স্টেশনের নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বহু বিপ্লবী কিন্তু উপযুক্ত সম্মান পাননি। তাই এবার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামেই রেলস্টেশনগুলির নাম রাখার উদ্যোগ কেন্দ্রের। যদিও এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধীরা। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যদি কেন্দ্র আমাদের রাজ্যের কোনও স্টেশনের নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে রাজ্যের সম্মতিরও তাতে প্রয়োজন। নাম পরিবর্তনের ছাড়পত্র দেয় রাজ্যই। এটা বিজেপির প্রস্তাব। সরকার চলে সংবিধান মেনে, রাজনৈতিক দলের ইচ্ছায় নয়।”
গঙ্গারামপুরে মঙ্গলবারের অনাস্থা বৈঠক বাতিল ঘোষণা করল হাইকোর্ট
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিষয়টি গোটাটাই রাজনৈতিক মোড় নিচ্ছে। কেন্দ্র যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা করার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে, সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্টেশনের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাজ্যের মতামত নেওয়ার আবশ্যিকতা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
তবে এসবের মাঝে নিত্যযাত্রীদের একাংশের দাবি, মনীষীদের নামে স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে দিলেই কি তাঁদের প্রতি সম্মান দেখানো হয়? নাকি এর পিছনেও রয়েছে কোনও রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা। আইন প্রণেতারা প্রস্তাব দিয়ে আর নাম বদলে দিয়ে তো খালাস, কিন্তু সমস্যায় পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। স্টেশনের নাম পরিবর্তনের ঠেলায় অনেকই বুঝতে পারেন না কোন স্টেশনে নামতে হবে তাঁদের। কলকাতা মেট্রোর একাধিক স্টেশনের নাম পরিবর্তন হয়েছে। নাম পরিবর্তন হয়েছে দেশেরও একাধিক স্টেশনের নাম।