চিঠি লিখে রেখে গিয়েছিল, চুরির ৩ দিনের মধ্যেই ফোন ফেরত দিয়ে গেল চোর
‘চিন্তা করবেন না। এক মাসের মধ্যেই ফোনটি ফিরিয়ে দিয়ে যাব।’
নিজস্ব প্রতিবেদন: অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। কথা রাখল চোর। চার্জার সমেত নতুন মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিল চোর।
দিন তিনেক আগেই শোয়ার ঘরের ড্রেসিং টেবল থেকে উধাও হয়ে যায় পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার কলপুকুরপাড় গ্রামের সজন মিঞার নতুন স্মার্টফোন। ঘুম থেকে জেগে ফোন না দেখতে পেয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছিলেন ওই যুবক। তবে ফোন রাখার জায়গায় পড়েছিল ছোট্ট একটা চিরকুট। তাতে লেখা, ‘চিন্তা করবেন না। এক মাসের মধ্যেই ফোনটি ফিরিয়ে দিয়ে যাব।’ চিরকুটের নিচে ছিল ফোনের মধ্যে থাকা সিম দুটিও। সেদিন অনেকেই চিঠি নিয়ে হাসাহাসি করেছিলেন।
আরও পড়ুন: পাত্রী দেখতে গিয়ে তাঁর বাড়িতে বারাকপুরের পাত্র যা ঘটালেন, তা এই রাজ্যে কেন দেশে কোথাও আগে ঘটেনি!
তবে চোর যে অনেক অ্যাডভান্স তার প্রমাণ দিল চোর নিজেই।একমাস সময় নিল না, ‘এক কথার চোর’। তিনদিনেই মোবাইল ফিরল ঘরে। রবিবার সকালে গোয়াল পরিষ্কার করতে গিয়ে সজনের মা দেখেন সযত্নে মোবাইল ও চার্জারটি সেখানে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমন্ত ছেলেকে ডেকে তোলেন তিনি। নতুন মোবাইল হারিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন সজন। ঘুমচোখে হারানিধি ফিরে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: রাতের খাবার খেয়ে উঠোনে গিয়ে বাড়ির কর্তা যে দৃশ্য দেখলেন, তাতে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ল তাঁর
তড়িঘড়ি ভাতার থানায় পৌঁছে যান। তবে মোবাইল ফেরানোর কৃতিত্ব চোরকে নয়, পুলিশকেই দিচ্ছেন ওই লটারি বিক্রেতা যুবক। তাঁর দাবি, অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ একটি ফন্দি আঁটে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাধ্যে এলাকায় রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল খুব শিগগির চোর ধরা পড়বে। এই মোক্ষম দাওয়াই কাজে এসেছে। ধরা পড়লে থার্ড ডিগ্রি পড়তে পারে। তাই আগে ভাগেই ফোন ফিরিয়ে দিয়ে শাস্তির খাঁড়া থেকে বাঁচল চোর।
আরও পড়ুন: এ কী হল কেষ্টর! সকলের সামনে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন অনুব্রত মণ্ডল
সজন মিঞা দু’সপ্তাহ আগে ১০ হাজার টাকায় স্মার্টফোনটি কেনেন। সেই চুরি যাওয়া মোবাইল ফিরে পেয়ে আত্মহারা তিনি। বলেন, ‘চোর চিঠি লিখে ফেরত দেওয়ার কথা বললেও বিশ্বাস করতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি মোবাইলটি ফিরে পাব।’ কী করে হল এই অসাধ্য সাধন।আসলে ওই ‘শিক্ষিত’ চোর পরে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিল মোবাইলের আইএমইআই নম্বর ধরে তদন্ত শুরু হলে সে ধরা পড়ে যাবে। তাই মানে মানে মোবাইলটি ফেরত দিয়ে গিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, চোর ফোনটা চুরি কেন করল? চুরিই যদি করার ছিল, তাহলে এক মাসের মধ্যে ফিরিয়ে দেবে বলে চিঠিই বা কেন লিখে রেখে গিয়েছিল? যাই হোক, সজন মিঞার ভাগ্য ভালো, যে এই চোরের পাল্লায় পড়েছিলেন, তা না হলে তো, চুরি যাওয়া জিনিস এই ভাবে বাড়িতেই ফেরত পাওয়ার সৌভাগ্য তো সবার হয় না!