মাথার ভিতর মেলেনি গুলি, ময়নাতদন্ত শেষে শেষকৃত্যের পথে বিধায়কের দেহ
প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, একটি গুলি চালানো হয়েছিল। মাথায় ২টো ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিধায়ক খুনে ময়নাতদন্ত হল রবিবার সকালে। শনিবার সন্ধ্যায় সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাস। এরপর এদিন সকালে শক্তিনগর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তের পর বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। তারপর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিধায়কের দেহ নিয়ে বাড়ি থেকে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন পরিজন ও কর্মী-সমর্থকরা।
দলের কনিষ্ঠ বিধায়ক, সহকর্মী সত্যজিত বিশ্বাস খুন হওয়ার খবর পেয়ে আজ সকালেই নদীয়া গিয়ে পৌঁছন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গতকাল ফুলবাড়ি-মাজদিয়ার সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে খুন হন বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাস। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য এদিন সেই অনুষ্ঠান মঞ্চেই বিধায়কের মরদেহ শায়িত রাখা হয়। সেখানেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে তৃণমূল নেতৃত্বও। সেখানেই মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অনুব্রত মণ্ডল। দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান তৃণমূল কংগ্রেসের নদীয়া জেলার পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল।
(শকটে শায়িত সত্যজিত বিশ্বাসের মরদেহ)
প্রিয় নেতাকে শেষবারের মত চোখের দেখা দেখতে এদিন সকাল থেকেই ভিড় উপছে পড়ে হাঁসথালির মাঠে। প্রিয় নেতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে দেখা যায় স্থানীয় মানুষকে। দর-দূরান্ত থেকে অগুনতি মানুষ 'দাদা'কে একবার দেখার জন্য ছুটে এসেছেন হাঁসথালির ওই মাঠে। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল গোটা এলাকা।
আরও পড়ুন, ফুচকা নিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি স্বামী! বিধায়ক খুনে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল স্ত্রীর
অন্যদিকে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, একটি গুলি চালানো হয়েছিল। মাথায় ২টো ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। গুলি মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে বেরিয়ে যায়। খুলির ভিতর কোনও গুলি পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় বিধায়ককে। অনুষ্ঠানে হঠাত্ গুলি চলার আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন বিধায়ক। শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা বিধায়ককে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন, বিধায়ক-মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ছিল না পুলিস! গাফিলতির অভিযোগে অপসারিত ওসি
খুনের ঘটনায় শাসকদল বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক দখলের জন্যই জেলার মতুয়া মুখ সত্যজিত বিশ্বাসকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয় বলে অভিযোগ। এই খুনের ষড়যন্ত্রের পিছনে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের-ই হাত রয়েছে বলে দাবি শাসকদলের। খুনের ঘটনায় মুকুল রায় সহ ৪ জনের নামে এফআইআর দায়ের হয়। তারমধ্যে সুজিত মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডলকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করেছে পুলিস। খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে অভিজিত পুণ্ডারি নামে এক পড়শি যুবকের নাম।