কেউ কি শুভেন্দুকে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান থেকে 'সরিয়ে' দিতে চাইছেন!
জনসভায় শুভেন্দু নিজেকে 'নেতাইয়ের সেবক' হিসেবে উল্লেখ করলেন।
নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ধীরে ধীরে জনসমক্ষে আসতে শুরু করেছেন তৃণমূলের বিশিষ্ট নেতা ও রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। একট-দুটি করে জনসভাতেও উপস্থিত হচ্ছেন তিনি। কিন্তু সেখানে তাঁকে যেন ঠিক চেনা ছন্দে ও সুরে পাওয়া যাচ্ছে না।
যা নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে বাংলার রাজনৈতিক পরিসরে।
আজ, রবিবার তেমনই এক জনসভায় শুভেন্দু নিজেকে 'নেতাইয়ের সেবক' হিসেবে উল্লেখ করলেন। উল্লেখ্য যে, এই জনসভাটি তাঁর দলের কোনও বিশেষ কর্মসূচির অঙ্গ ছিল না।
সেখানেই শুভেন্দু বলেন, 'আমার লক্ষ্য থেকে, কর্ম থেকে, দায়বদ্ধতা থেকে কেউ কোনো দিন (আমাকে) সরিয়ে দিতে পারেনি, পারবে না।'
ঠিক এর পরই রাজ্য-রাজনীতি জুড়ে ঘোর আলোচনা চলছে, কেন এই সুরে কথা বললেন শুভেন্দু! তা হলে কি এ রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসরে তাঁর একান্ত নিজস্ব যে অবস্থান, তা থেকে কেউ বা কারা তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে! তৃণমূলে কি ইদানীং তিনি ক্রমশ প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন? 'সরে' কোথায় যাবেন তিনি? বিজেপি-তে কি তাঁর জন্য দরজা খুলে গিয়েছে?
আজকের অনুষ্ঠানে এসে ওই বাক্যটি দিয়েই নিজের বক্তব্য শুরু করেন শুভেন্দু। সেখানে সরাসরি রাজনৈতিক কথা একটিও বলেননি। সব চেয়ে বড় কথা, তৃণমূলের যে কোনও নেতা যে কোনও জনসভায় বা বক্তৃতা-মঞ্চে যে ভাবে কথা বলেন সাধারণত তার একটা চেনা ও বাঁধা কাঠামো থাকে। সেখানে একাধিকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেওয়া বা 'তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ' জাতীয় 'কল' থাকে। আশ্চর্যজনক ভাবে শুভেন্দুর ইদানীংকার জনসভার কথাবার্তায় এই বৈশিষ্ট্যগুলি অনুপস্থিত থাকে! যা আজও ছিল।
বক্তব্যের মাঝেও চমকে দেন শুভেন্দু। রবীন্দ্রনাথ 'কোট' করে বলেন, 'আমরা চলি সমুখপানে কে আমাদের বাঁধবে, রইল যারা পিছুর টানে কাঁদবে তারা কাঁদবে।'
এই যে ইদানীং শুভেন্দুকে দলের কর্মসূচিতে সে ভাবে সক্রিয় না দেখা গেলেও প্রায় প্রতিদিনই একটি করে সামাজিক কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে, এটা রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। এখন এটাই দেখার, কোন 'সমুখপানে' তিনি যান! আর 'পিছুর টানে'ই-বা কারা এবং কোথায় আটকে থেকে যান!
আরও পড়ুন: যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি আমাদের সেনা, লাদাখ নিয়ে চিনকে সতর্ক করলেন শাহ