Zee ২৪ ঘণ্টা Impact: দাসপুরে শিকলবন্দি শৈশব, মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই-বোনকে উদ্ধার করল প্রশাসন
দুঃস্থ পরিবারের পাশে প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদন: আর্থিক অনটনে সংসার চালানো দায়! তার মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে ও মেয়ে। তাদের চিকিৎসা করাতে অসমর্থ ছিল পরিবার। বাধ্য হয়ে দুই সন্তানকে বাড়ির উঠনে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতেন অভিভাবকরা। দাসপুরের এই 'শিকলবন্দি শৈশব'-এর খবর তুলে ধরে Zee ২৪ ঘণ্টা। খবর সম্প্রচার হতেই দুঃস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়াল প্রশাসন।
পাড়ার অন্য ছেলেরা যখন খেলায় মগ্ন, তখন ছোট্ট ছেলেটির পা লোহার শিকলে বাঁধা। পাশে দিদিরও একই অবস্থা। শৈশবে খেলাধুলার অধিকার তো নেই-ই। বরং চরম আর্থিক সংকটে দু'বেলা দু'মুঠো খাবার পর্যন্ত জোটে না। হতদরিদ্র মা। ভাগ্যের নিষ্ঠুর প্রহারের কাছে ভেঙে পড়েছেন। চোখের জল মুছে বাধ্য হয়েছেন নিজের সন্তানদের শক্ত শিকলে বেঁধে রাখতে। স্নান, খাওয়া-দাওয়া ছাড়া সারাদিন শিকলে বাঁধা থাকে দুই ভাই-বোনের শৈশব। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের হরিরামপুরের রায় দম্পতি। তাঁদের দুই সন্তান। বড় মেয়েটির বয়স ১৪ এবং ছোট ছেলের বয়স ৮। তারা দু'জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। অনেক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও সুরাহা মেলেনি। দুই সন্তানকে সুস্থ জীবন ফিরিয়ে আনতে বাবা-মা শেষ পুঁজিটুকুও খরচ করে ফেলেছেন। একের পর এক ডাক্তারের কাছে ছুটে গিয়েছেন। হাজার হাজার টাকার পরীক্ষার শেষে ডাক্তাররাও জবাব দিয়ে দিয়েছেন।
এই খবর Zee ২৪ ঘণ্টায় সম্প্রচার হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরিবারের পাশে দাঁড়ায় পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েতের প্রধান, সদস্যরা এসে তাঁদের পায়ের শিকল খুলে দেন। আর্থিক ভাবে সাহায্যেও প্রতশ্রুতি দেন তাঁরা।
সন্তানদের জন্য মা'কে পাড়া-পড়শিদের কম গঞ্জনা শুনতে হয়নি। অগত্যা দু'জনকেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন তিনি। মহিলার রোজগার বলতে একশো দিনের কাজ। তাও অন্যের জব কার্ডে। তাঁর স্বামী ট্রলি চালান। সঙ্গে পুজো বা বিয়ে বাড়িতে বাজনা বাজান। সরকারি সহযোগিতা বলতে মেয়ের জন্য মাসিক ভাতা। ছেলের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা ও পার্শ্ব শিক্ষক তাপস মাজি জানান, অত্যন্ত দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই পরিবার। এই অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ওই শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: Weather Today: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রাজ্যে