গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য কতটা দায়ী আমাদের প্রতিটি ইমেল, জানলে শিউরে উঠবেন
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য যে শুধুমাত্র গাড়ি কিংবা ফ্যাক্টরি থেকে বেরোনো ধোঁয়াই দায়ী নয়। আমরা সবাই ডিজিটালিও এই পৃথিবীটাকে দূষিত করে ফেলছি
নিজস্ব প্রতিবেদন: আপনি কি জানেন, আপনার পাঠানো প্রতিটি ই-মেল গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য দায়ী। গোটা দুনিয়ায় প্রতি মিনিটে পাঠানো ই-মেল থেকে যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন হয়, সেটা একুশ হাজার কিলোগ্রাম কয়লা পোড়ানোর সমপরিমাণ। এব্যাপারে আপনি নাই বা জানতে পারেন। কিন্তু অজান্তেই আপনি এই ভুল বারবার করছেন। শুধু ইমেলই না, যদি আজকে সকালে আপনি হোয়াটসঅ্যাপে গুডমর্নিং কিংবা থ্যাঙ্ক ইউ পাঠিয়ে থাকেন। কিংবা ফেসবুকে ছবি কিংবা কারও স্টেটাস লাইক করেছেন, ইউটিউবে ভিডিও কিংবা অনলাইনে সিনেমা দেখেছেন তাহলে জেনে নিন।
আরও পড়ুন-কৃষকদের থেকে দেড়গুণ দামে জমি কিনবে সরকার, জমিজট কাটল লুধিয়ানা টু ডানকুনি ফ্রেট করিডরের
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের সঙ্কট আজ বিশ্বজুড়ে। তাপমাত্রা এতটাই দ্রুত গতিতে বাড়ছে যে একদিন আমরা এই পৃথিবীতে থাকতে পারব না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য যে শুধুমাত্র গাড়ি কিংবা ফ্যাক্টরি থেকে বেরোনো ধোঁয়াই দায়ী নয়। আমরা সবাই ডিজিটালিও এই পৃথিবীটাকে দূষিত করে ফেলছি। সেই ডিজিটাল দূষণের নাম হল ই-মেল।
এক ব্রিটিশ এনার্জি কোম্পানির রিসার্চে জানা গেছে যে ব্রিটেনে প্রতিদিন ৬ কোটি ৪০ লাখ অপ্রয়োজনীয় ইমেল করা হয়। যার মধ্যে বেশিরভাগটাই থ্যাঙ্ক ইউ মেল।
** এই ইমেলগুলোর জন্য প্রতিবছর ষোল হাজার চারশো তেত্রিশ টন কার্বন নির্গমন হয়।
** যা প্রতি বছর দিল্লি থেকে মুম্বইয়ের মধ্যে একাশি হাজার একশো বাহান্নটি বিমানের আসা যাওয়ায় কার্বন নির্গমনের সমপরিমাণ।
** তিন হাজার তিশো চৌত্রিশটি ডিজেল গাড়ি যে পরিমাণে কার্বন নির্গমন করে, শুধু ব্রিটেনে অপ্রয়োজনীয় ইমেল করে ততটাই কার্বণ নির্গমন করা হচ্ছে।
** শুধু ইমেলই নয়, ইন্টারনেটে আপনি কিছু সার্চ করলেও কার্বন নির্গমন হয়।
** তিরিশ মিনিটের একটি অনলাইন ভিডিও দেখলে দেড় কিলোগ্রাম থেকেও বেশি কার্বন নির্গমন হয়।
** একজন ফেসবুক ইউজার প্রতি বছর দুশো নিরানব্বই গ্রাম কার্বন নির্গমন করে থাকেন।
আরও পড়ুন-ভরসন্ধেয় দক্ষিণেশ্বর স্কাই ওয়াকে স্ত্রীকে কোপাল স্বামী
ভাবছেন হয়তো ইমেল থেকে কিভাবে কার্বন নির্গমণ হচ্ছে। চলুন সহজ ভাষায় বুঝে নিই-
** আপনার পাঠানো প্রতিটি ইমেল একটি ডেটা সেন্টারে গিয়ে স্টোর হয়।
** এই ডেটা সেন্টারের শক্তি লক্ষ-লক্ষ পার্সোনাল কম্পিউটারের সমান।
** তাই এই ডেটা সেন্টারগুলি একটি ছোট শহরের সমপরিমাণ বিদ্যুত ব্যবহার করে।
** সারা বিশ্বে উত্পাদিত বিদ্যুতের দশ শতাংশ এই ডেটা সেন্টারগুলি ব্যবহার করে।
** যেহেতু আজও কয়লা অথবা গ্যাস দিয়ে বেশিরভাগ বিদ্যুতের উত্পাদন হয় তাই প্রতিদিন পাঠানো কোটি-কোটি ইমেল পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলছে।
তাহলে নিজেই ভেবে দেখুন ডেটা জরুরি না পরিবেশ? আপনি যদি কাউকে থ্যাঙ্ক ইউ লিখে ইমেল নাও করেন তাতে সম্পর্ক খারাপ হবে না। কিন্তু পৃথিবীর পরিবেশ কিছুটা কম দূষিত হবে। বলার প্রয়োজন নেই যে এই ছোট-ছোট ইমেলগুলি পৃথিবীকে বিনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাহলে কাল থেকে ইমেলের মাধ্যমে থ্যাঙ্ক ইউ বার্তা পাঠানোর আগে একটু ভেবে দেখবেন।