গ্রহাণুর বুকে লাফ দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করল জাপানি যান, দেখুন ভিডিয়ো
গ্রহাণুর বুক থেকে নমুনা সংগ্রহ করার ভিডিয়ো প্রকাশ করল জাপানের মহাকাশ সংস্থা।
নিজস্ব প্রতিবেদন : চলতি বছর এপ্রিলেই গ্রহাণু রিউগুতে আঘাত করেছিল জাপানি যান হায়াবুসা-২। এবার রিউগু গ্রহাণু থেকে পাথরের টুকরো সংগ্রহ করল হায়াবুসা-২। গ্রহাণুর বুক থেকে নমুনা সংগ্রহ করার ভিডিয়ো প্রকাশ করল জাপানের মহাকাশ সংস্থা।
১১ জুলাই জাপানের সময়ে সকাল ১০টা নাগাদ রিউগুর কাছাকাছি পৌঁছে যায় হায়াবুসা-২। যান্ত্রিক হাতের মতো অংশ ব্যবহার করে রিউগু-এর মাটি থেকে পাথরের টুকরো তুলে নেয় জাপানি যান। ২৬ জুলাই এই প্রক্রিয়ার একটি ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়। হায়াবুসা-২-এ লাগানো ক্যামেরায় ওঠে সেই ভিডিয়ো। ভিডিয়োটির গতি ১০ গুণ বাড়িয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
This is a 10x speed animation captured with the small monitor camera (CAM-H) during 2nd touchdown. CAM-H was installed by public donation — thank you everyone! Image time: 2019/7/11 10:03:54 ~ 10:11:44 JST, at altitudes 8.5m ~ 150m. ( JAXA) https://t.co/ZrzegHABYU pic.twitter.com/owtaDxZx0m
— HAYABUSA2@JAXA (@haya2e_jaxa) July 26, 2019
এর আগে এপ্রিলে রিউগু-এর মাটিতে আঘাত করেছিল হায়াবুসা-২। সেই সময়ে গ্রহাণুটির বুকে প্রায় ১০ মিটার চওড়া একটি বড় গর্ত তৈরী করা হয়। তার পর সেই অংশ থেকে সংগ্রহ করা হয় পাথরের নমুনা। সেই কার্যকলাপের ছবিও প্রকাশ করে জাপানি মহাকাশ সংস্থা। এর আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেও গ্রহাণু থেকে পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তবে, আগের বারগুলির তুলনায় এবারের প্রক্রিয়াটি ছিল আরও জটিল। এবার সেই গর্তের অংশ থেকেই পাথরের নমুনা সংগ্রহ করতে প্রস্তুত হন বিজ্ঞানীরা। জাপানী মহাকাশ সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে,"সঠিক স্থানে পৌঁছনো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট ঝুঁকিসম্পন্ন ছিল"।
মহাবিশ্বের সব থেকে পুরনো জ্যোতিষ্কগুলির অন্যতম এই গ্রহাণু রিউগু। প্রায় ১ কিলোমিটার ব্যাসের রিউগু গ্রহাণু। স্ফটিক আকৃতি গ্রহাণুটি তৈরি পাথরখণ্ড ও ধুলো দিয়ে। সেখানেই ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি রহস্য জানতে যান পাঠিয়েছে জাপানিরা। হায়াবুসা - ২ নামের এই এই যানে রয়েছে একটি ছোট্ট বোমা। যাতে ভরা রয়েছে TNT-র মতো বিস্ফোরক। মূল যান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সেই বিস্ফোরকটি আছড়ে পড়ে গ্রহাণুর বুকে। ঠিক তখনই মূল যান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আরেকটি ক্যামেরা ঘটনার ছবি তোলে। বিস্ফোরণের অভিঘাত থেকে বাঁচতে বিস্ফোরণের সময় হায়াবুসা-২-কে গ্রহাণুর বিপরীত দিকে পাঠিয়ে দেন বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর কক্ষের সঙ্গে বেশ মিলে যায় রিউগুর কক্ষপথ। তাই একে নিয়ার আর্থ অ্যাস্টরয়েডের শ্রেণিতে রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। ৮৫০ মিটার ব্যাসের গ্রহাণুটি প্রতি ৪৭৪ দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী থেকে প্রায় ৯৫,৪০০ কিমি দূরে অবস্থান এই গ্রহাণুর।
২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে উৎক্ষেপণ হয় হায়াবুসা-২-এর। গত বছর জুনে গ্রহাণুটির কাছে পৌঁছয় হায়াবুসা ২। তার পর থেকে সেটির পৃষ্ঠে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে সে। ২০১৯ সালের শেষে, নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে পৃথিবীর দিকে ফিরতে শুরু করবে হায়াবুসা-২। ২০২০-এর শেষে পৃথিবীর মাটিতে ফেরার কথা জাপানি মহাকাশযানের।