Inside Kim Jong-un’s ‘Taeyangho’: ফ্রেঞ্চ ওয়াইন, লাইভ লবস্টার এবং পারফর্মার, কী নেই কিমের বিলাসবহুল বুলেটপ্রুফ ট্রেনের ভেতরে
এই ট্রেন ভ্রমণের একটি ধীর কিন্তু বিলাসবহুল উপায়। 'তায়েংহো' নামের ট্রেনটির নামে মানে কোরিয়ান ভাষায় সূর্য। এই উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। ট্রেনটি ঘন্টায় মাত্র ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে চলতে পারে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়ায় সফর করেছেন। তিনি তার বিলাসবহুল সাঁজোয়া ট্রেনে এই ভ্রমণ করেছিলেন। এই ট্রেন ভ্রমণের একটি ধীর কিন্তু বিলাসবহুল উপায়। 'তায়েংহো' নামের ট্রেনটির নামে মানে কোরিয়ান ভাষায় সূর্য। এই উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। ট্রেনটি ঘন্টায় মাত্র ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে চলতে পারে। এই ট্রেনে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার কারণে এই অত্যন্ত ধীরে চলে। যদিও অন্যান্য দেশের বিভিন্ন ট্রেন ৩২০ কিমি প্রতিঘন্টা গতিতে চলতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে যে কিম জং-উন প্রায় ১১৮০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে ট্রেনে প্রায় ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় কাটিয়েছেন। উত্তরের সরকারি সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে। তার সঙ্গে দেশের ক্ষমতাসীন দল ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ছিলেন। কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম ‘রবিবার বিকেলে রাশিয়ান ফেডারেশন পরিদর্শনের জন্য তার ট্রেনে রওনা হয়েছেন’।
রাশিয়ান মিডিয়া আরও জানিয়েছে যে কিমের ট্রেন মঙ্গলবার সীমান্ত শহর খাসানে পৌঁছেছে এবং রেলওয়ের সূত্রে জানা গিয়েছে যে সুদূর পূর্বের শহর উসুরিস্কের দিকে যাচ্ছে এই ট্রেন।
২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায় যে কিমের এই ট্রেনটিতে প্রায় ৯০টি বগি রয়েছে। এতে কনফারেন্স রুম, দর্শক চেম্বার এবং শয়নকক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি স্যাটেলাইট ফোন এবং ব্রিফিংয়ের জন্য ফ্ল্যাট-স্ক্রিন টিভি-ও রয়েছে।
ট্রেনটিতে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে প্যারিস থেকে আনা ফরাসি ওয়াইন এবং তাজা গলদা চিংড়ির মতো খাবার পরিবেশন করা হয়। ২০০১ সালে কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে একই ট্রেনে ভ্রমণ করা দুই রাশিয়ানদের মতে এই ট্রেনে অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য নর্তকী এবং অভিনয়শিল্পীও রয়েছে। ২০০১ সালে মস্কো ভ্রমণ করেন কিম জং ইল।
আরও পড়ুন: Libya: সমুদ্রে ডুবল পুরো এলাকা! 'ড্যানিয়েলে'র মরণনাচে এক জায়গাতেই ২০০০ মৃত্যু...
কিম জং ইল, ১৯৯৪ থেকে ২০১১ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া শাসন করেছিলেন। তিনি পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে ২০০১ সালে ট্রেনে মস্কো যান। সেই সময় ১০ দিন সময় লেগেছিল এই ভ্রমণে। ২০১১ সালে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
ট্রেন ভ্রমণের ঐতিহ্য কিম ইল সুং শুরু করেছিলেন। তিনি ভিয়েতনাম এবং পূর্ব ইউরোপ ভ্রমণে নিজের লোকোমোটিভ ব্যবহার করেন। ট্রেনগুলিকে নিরাপত্তা এজেন্টরা পাহারা দেয় এবং সব রুট এবং স্টেশনগুলি পরীক্ষা করে যাতে কোনও নিরাপত্তা সমস্যা না হয়।
বিবিসি জানিয়েছে যে রাশিয়ান সামরিক কমান্ডার কনস্ট্যান্টিন পুলিকোভস্কি তার স্মৃতিকথা ‘ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস’-এ লিখেছেন যে ট্রেনটিতে রাশিয়ান, চিনা, কোরিয়ান, জাপানি এবং ফরাসি যেকোনও খাবার পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন যে নেতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য প্যারিস থেকে লাইভ লবস্টার এবং রেড ওয়াইনের কেস ট্রেনে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জর্জি তোলোরায়া, আরেকজন প্রাক্তন রাশিয়ান কূটনীতিক, ২০১৯ সালে একই ট্রেন যাত্রার সময় তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে গাধার মাংস এবং অ্যাবালোন, যা উপাদেয় খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়, সেটি পিয়ংইয়ং থেকে আনা হয়েছিল। তিনি আরও বলেছিলেন যে রাশিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ভদকা ট্রেনে একটি প্রধান খাদ্য ছিল।
আরও পড়ুন: Kim Jong Un: রাশিয়ায় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে দেখা করলেন কিম জন উন! কেন এই সফর?
উভয় রাশিয়ানই বর্ণনা করেছেন যে কীভাবে পারফর্মার এবং গায়করা ট্রেনে অতিথিদের বিনোদন করেন। কিম জং ইল সঙ্গীত এবং চলচ্চিত্রের প্রতি অনুরাগী ছিলেন এবং ডিভিডি এবং সিডির একটি বড় সংগ্রহ ছিল তাঁর। তাঁর একটি ব্যক্তিগত অর্কেস্ট্রা এবং একটি ফিল্ম স্টুডিও ছিল।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অনুসারে, ২০১১ সালে ট্রেনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কিম জং ইল মারা যান। তার স্থলাভিষিক্ত হন তার ছেলে কিম জং উন, যিনি তার বিদেশ সফরের জন্য ট্রেনে ভ্রমণের ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছেন।