জীবনের জয়গান! ইঞ্জিনে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে শালিক, ছানা বড় না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ
ইঞ্জিন চালু করা হলে পাখির ছানা দুটি মারা যেতে পারে, এমনই আশঙ্কা করছেন রেলের আধিকারিকরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন— করোনা যথেষ্ট ছিল না! দোসর হয়ে জুটল আমফান। লাখ লাখ মানুষ প্রবল ক্ষতির মুখে। কারও মাথা গোঁজার আশ্রয় নেই। কারও আবার সবটুকুই কেড়ে নিয়েছে ভয়ঙ্কর ঝড়। একে তো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন। মহাসমস্যায় পড়েছেন গরীব মানুষ। কাজ নেই। সঞ্চয়ের অর্থও এর মধ্যে শেষ হয়েছে। আগামিদিনে খাবেন কী, তা নিয়েও অনেকে সংশয়ে রয়েছেন। চারিদিকে শুধুই মৃত্যু আর হাহাকার। ২০২০ সালটা যেন অভিশাপের মতো এসেছে মানুষের জীবনে। কিছুতেই দুঃসময় কাটছে না। প্রকৃতি যেন পুরনো কোনও ভুলের শোধ তুলছে মানবজাতির থেকে। এরই মধ্যে জীবনের জয়গান। ইঞ্জিনে বাচ্চা দিয়েছে শালিক পাখি। ছানা বড় না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনের লোকোশেডের ঘটনা। প্রায় দুমাস ধরে এমনিতেই ট্রেন চলাচল বন্ধ। লকডাউনের জেরে আরও বেশি কিছুদিন বন্ধ থাকতে পারে ট্রেন পরিষেবা। রেলের ইঞ্জিন এখন রয়েছে বিভিন্ন লোকেশেডে। আর নির্জন সেইসব ইঞ্জিনে পাখিরা বাসা বেঁধেছে। পার্বতীপুরের লোকোশেডে থাকা একটি ইঞ্জিনে বাসা বেঁধেছিল এক জোড়া শালিক। শালিক পাখি দুটি ডিম দেয়। তা তেকে দুটি বাচ্চার জন্ম হয়েছে। আর তাই রেল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে, যতদিন পর্যন্ত বাচ্চা দুটো বড় না হয় ততদিন ওই ইঞ্জিন চালানো হবে না। ইঞ্জিন চালু করা হলে পাখির ছানা দুটি মারা যেতে পারে, এমনই আশঙ্কা করছেন রেলের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন— সপ্তাহে তিন দিন ছুটি দিতে পারে এই দেশ, করোনা বদলে দেবে অনেক কিছুই
ওই ইঞ্জিনটি চালু করতে গিয়ে শালিক পাখির বাসা দেখতে পান রেলকর্মীরা। তাঁদের দেখে মা পাখি তার ছানা দুটিকে বুকে আগলে নেয়। তখনই রেলকর্মীরা সিদ্ধান্ত নেয়, ওই দুটি ছানা বড় না হলে সেই ইঞ্জিন চালানো হবে না। পার্বতীপুর লোকশেডের ইনচার্জ কাফিউল ইসলাম জানিয়েছেন, বাচ্চাগুলির প্রতি নিস্বার্থ মায়া থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছানা দুটির যাতে কোনওরকম ক্ষতি না হয় সেদিকেও কর্মীরা খেয়াল রেখেছেন। ইঞ্জিনটিকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।