প্রথমবার বন্ধ এভারেস্ট! তিন হাজার শেরপা বেকার, বাধ্য হলেন পেশা বদলাতে
এই সময় সারা বিশ্বের বহু পর্যটক নেপালে থাকেন। কিন্তু এবার একজন পর্যটকেরও দেখা নেই সেখানে।
নিজস্ব প্রতিবেদন— ২৪ মার্চ কাঠমাণ্ডু থেকে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প লুম্বা যাওয়ার ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। তার দু—তিনদিনের মধ্যেই হয়তো নেপাল সরকার অভিযাত্রীদের এভারেস্ট অভিযানের অনুমতিপত্র দিতে শুরু করত। কিন্তু করোনার জন্য সব ভেস্তে গিয়েছে। এবার এভারেস্ট অভিযান বন্ধ। এই প্রথমবার। সব থেকে খারাপ খবর, নেপালে এবার এভারেস্ট অভিযানের মরশুম শুরুই হয়নি। এভারেস্ট অভিযানের জন্য ৭৫ দিনের সময়সীমা বেধে দেয় নেপাল সরকার। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত চলে এই সময়। এবার মার্চ থেকেই করোনার হানার জন্য এভারেস্ট অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল সরকার। যার জেরে কর্মহীন হয়েছেন প্রায় তিন হাজার শেরপা।
এই সময় সারা বিশ্বের বহু পর্যটক নেপালে থাকেন। কিন্তু এবার একজন পর্যটকেরও দেখা নেই সেখানে। ভূমিকম্পে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরও নেপালে পর্যটকরা এসেছিলেন। এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পুরো খালি হয়ে রয়েছে। গত বছর মে মাসের শেষের দিকে এভারেস্ট অভিযানের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ফলে অভিযাত্রী, শেরপা ও গ্রাউন্ড স্টাফরা ফিরে এসেছিলেন। এবার সেখানে মরশুম শুরুই করা গেল না। জানা গিয়েছে, এভারেস্ট অভিযান থেকে নেপালের জিডিপি—র চার শতাংশ আয় আসে। সরকার আন্দাজ করেছিল, এবার অন্তত ২০ লাখ পর্যটক নেপালে ভিড় জমাবেন। কিন্তু কিছুই হল না। ফলে ভারতীয় মুদ্রায় নহাজার কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছে নেপাল সরকার। ১১ লাখ মানুষের চাকরি সঙ্কট রয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন শেরপারা। তাঁরা এবার পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন— করোনার সাইডএফেক্ট! গুগলে কর্মী নিয়োগে বড়সড় পদক্ষেপের কথা জানালেন পিচাই
গ্রামে চাষবাস করছেন অধিকাংশ শেরপা। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের সব থেকে নিকটবর্তী গ্রামটি ২০ কিমি দূরে অবস্থিত। গ্রামের নাম খারিখোলা। এই গ্রাম থেকে সাধারণত বেস ক্যাম্পে পৌঁছতে লাগে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। কিন্তু শেরপারা তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছতে পারে। এই গ্রামে অধিকাংশ শেরপা অভিযাত্রীদের এভারেস্টে চড়তে সাহায্য করেন। এবার কাজ নেই। তাই আপাতত চাষবাস শুরু করেছেন তাঁরা। প্রবল আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছে সেখানে। প্রসঙ্গত, নেপালের জনসংখ্যা তিন কোটি। সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নজন। কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। নজনের মধ্যে একজন সেরে উঠেছেন।