ভারত মহাসাগর নিয়ে বহুদেশীয় বৈঠকে নেই ভারতই! নতুন কী কৌশল চিনের?
ভারত মহাসাগরের দ্বীপগুলির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে একটি সাধারণ মঞ্চ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। ২১ নভেম্বরে যে বৈঠকে হল সেখানে সেই প্রস্তাব নিয়েই আলোচনা হল কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। চিন অবশ্য জানিয়েছে, এই বৈঠকের সঙ্গে ওই প্রস্তাবের কোনো সম্পর্ক নেই।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারত মহাসাগরের ১৯টি দেশ নিয়ে একটি বৈঠক করছে চিন। ভারত মহাসাগর নিয়ে বৈঠক, অথচ সেই বৈঠকে নেই ভারতই। চলতি সপ্তাহে চিনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং প্রদেশে এই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের বিষয় ছিল-- 'শেয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট: থিয়োরি অ্যান্ড প্র্যাকটিস ফ্রম দ্য পার্সপেকটিভ অফ দ্য বলু ইকোনমি'। তবে ভারত মহাসাগর-সংক্রান্ত এই বৈঠকে ভারতের অনুপস্থিতি নানা প্রশ্ন উসকে দিয়েছে। বলা হয়েছে, ভারত মহাসাগর এলাকায় বাণিজ্য ও তার সম্ভাবনা নিয়েই ২১ নভেম্বর এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে ভারতকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে হাসিঠাট্টায় মেতে ওঠেন তো? না করলেই বিপদ, যেতে পারে চাকরি...
বৈঠকে আমন্ত্রিত দেশের তালিকায় ছিল-- ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল, আফগানিস্তান, ইরান, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, সিসিলি, মাদাগাস্কার, মরিসাস, জিবুতি, অস্ট্রেলিয়া। এই দেশগুলি ছাড়া তিনটি আন্তর্জাতিক সংগঠনও বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। এই প্রথম নয়। করোনাকালেও ভারতকে বাদ দিয়ে এশিয়ার অন্য দেশগুলিকে নিয়ে কোভিড টিকার বৈঠক করেছিল চিন।
চলতি বছরের শুরুতে ভারত মহাসাগরের দ্বীপগুলির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে একটি সাধারণ মঞ্চ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। ২১ নভেম্বরে যে বৈঠকে হল সেখানে সেই প্রস্তাব নিয়েই আলোচনা হল কি না, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, এই বৈঠকের সঙ্গে ওই প্রস্তাবের কোনো সম্পর্ক নেই।
এই বৈঠকে ভারত মহাসাগরের চারপাশের দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার মাত্রা বাড়িয়ে যে কোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি আরও ভালো ভাবে মোকাবিলা করার প্রস্তাব দিয়েছে চিন। এর জন্য চিন একটি সংগঠন গড়ার প্রস্তাবও দিয়েছে। যেখানে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সাহায্য করবে বেজিং। রাজনৈতিক ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের দাবি, আসলে টাকার টোপ দিয়ে ভারত মহাসাগরের দেশগুলিকে কাছে টানতে চাইছে চিন। পাশাপাশি ভারতকেও চাপে রাখতে চাইছে। এই ধরনের বৈঠক বা উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে এক হিসেবে ভারতকে চাপে রাখারই কৌশল নিয়েছে চিন।
প্রসঙ্গত, গত অগস্টে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে নোঙর ফেলেছিল চিনের এক জাহাজ। এটি গবেষণা ও সমীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে বলে চিন দাবি করলেও এর মাধ্যমে নজরদারিই চালানো হয় বলে মনে করছে ভারত। ভারতের আশঙ্কা, এই জাহাজে মজুত অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী সেন্সর ও রেডারের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর নজরদারি চালাবে চিন।