আতঙ্ক কাটিয়ে নতুন সকালে ছন্দে ফিরছে সিডনি

একেবারে নতুন সকাল সিডনিতে। এত বড় মাপের জঙ্গি হামলার পরেও অস্ট্রেলিয়ার দিন শুরু হল জীবনের জয়গান গেয়ে। ক'দিন আগে ফিল হিউজের মৃত্যুতে গোটা অস্ট্রেলিয়া শোক ভেঙে পড়েছিল। তারপর সিডনি ক্যাফের এই হামলা। সত্যিই অস্ট্রেলিয়া একেবারে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনোবল ভাঙা যায়নি অসিদের।  

Updated By: Dec 16, 2014, 09:05 AM IST
আতঙ্ক কাটিয়ে নতুন সকালে ছন্দে ফিরছে সিডনি

ওয়েব ডেস্ক: একেবারে নতুন সকাল সিডনিতে। এত বড় মাপের জঙ্গি হামলার পরেও অস্ট্রেলিয়ার দিন শুরু হল জীবনের জয়গান গেয়ে। ক'দিন আগে ফিল হিউজের মৃত্যুতে গোটা অস্ট্রেলিয়া শোক ভেঙে পড়েছিল। তারপর সিডনি ক্যাফের এই হামলা। সত্যিই অস্ট্রেলিয়া একেবারে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনোবল ভাঙা যায়নি অসিদের।  

অনেকটা ২৬/১১ মুম্বই হামলার আতঙ্ক মনে করিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি। জঙ্গি এক জন। পণবন্দি দুই ভারতীয় সহ ১৭। নাটকীয় টানাপোড়েনে পর্দা পড়ল প্রায় ১৭ ঘণ্টার লড়াই শেষে।   
মুহুর্মুহু গুলির শব্দ।... চারদিকে পুলিসে ছয়লাপ..

অথচ সিডনির মার্টিন প্লেসে দিনটা শুরু হয়েছিল আর পাঁচটা দিনের মতোই। শহরের প্রাণকেন্দ্র লিন্ডট চকোলেট ক্যাফেতে লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছিল।

হঠাত্‍ই ছন্দ পতন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, হাতে বন্দুক ও ব্যাগ হাতে তাঁরা ঢুকে যেতে দেখেন এক ব্যক্তিকে।

তারপর যা যা ঘটল, তাতে স্তম্ভিত গোটা পৃথিবী।

ক্যাফের ভিতরে থাকা কর্মী, গ্রাহকদের পণবন্দি করে শুরু হয় বন্দুকবাজের তাণ্ডব। ক্যাফের জানালায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয় সাদা-কালো একটি পতাকা। তাতে লেখা উর্দুতে কিছু লাইন।
এরপরই ভিতর থেকে কানে আসে, পরপর গুলির আওয়াজ। অস্ট্রেলিয়া জুড়ে জারি হয় হাই অ্যালার্ট। উদ্বিগ্ন অ্যাবট প্রশাসন তখন দফায় দফায় বৈঠকে ব্যস্ত। ক্যাফের চারদিকে ক্রমেই বাড়ছে পুলিসকর্মীদের ভিড়।

ভারতেও ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ। প্রধানমন্ত্রী প্রতি মুহুর্তে খোঁজ নিচ্ছেন ঘটনার। খবর আসে, পণবন্দিদের মধ্যে আছেন এক ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। নাম, অঙ্কিরেড্ডি বিশ্বকান্ত। কাজ করেন, ইনফোসিসে।

পণবন্দি-কাণ্ডের ঘণ্টা পাঁচেক পরের ছবি এটি। ক্যাফের ভিতর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন তিন পণবন্দি। আতঙ্ক কতটা, বলে দিচ্ছিল তাঁদের চোখমুখই। তারও ঘণ্টাখানেক পর মুক্তি পান আরও দুই পণবন্দি।

কিন্তু কে এই বন্দুকবাজ? কেনই বা এমন কাণ্ড? দাবি কী? এসব প্রশ্নের উত্তর তখনও অজানা।
ক্যাফেকাণ্ডের জেরে খালি করে দেওয়া হয় সিডনির অপেরা হাউস। বাতিল হয় সব অনুষ্ঠান।

ইতিমধ্যে সামনে আসে ওই বন্দুকবাজের পরিচয়। জানা যায়, অস্ট্রেলিয়া পুলিসের কাছে অচেনা নয় সে।

মান হারুন মনিস। বয়স পঞ্চাশের দোরগোড়ায়। ইরানি শরণার্থী। স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা ছাড়াও একাধিক যৌন নিগ্রহের মামলায় অভিযুক্ত হারুন।  

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাণ বাঁচিয়ে আরও কয়েক জন পণবন্দি বেরিয়ে আসেন ক্যাফের ভিতর থেকে। এরপরই ঝঢ়ের বেগে ক্যাফের ভিতর ঢুকে পড়ে পুলিস। গুলির শব্দে তখন কান পাতা দায়। আহত এক পণবন্দিকে স্ট্রেচারে বের করে আনা হয়।

পুলিসের গুলিতে বন্দুকবাজের মৃত্যুর সঙ্গেই ইতি হয় দিনভরের উদ্বেগ-আতঙ্কের। প্রাণ খোয়াতে হয়েছে দুই পণবন্দিকেও। আহত বেশ কয়েক জন। তবে অক্ষত আছেন দুই ভারতীয়। রক্তাস্নানের লড়াইয়ের পর মুক্তি। যাঁরা বেঁচে গেলেন, তাঁরাও কি কখনও ভুলতে পারবেন ভয়াবহ কয়েকটি ঘণ্টা!

 

.