নর্দমার জলে ভাসছে টাকা! নোংরা জলে নেমে দুশো, পাঁচশোর নোট কুড়িয়ে নিচ্ছে লোকজন
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, অন্তত ৫০ জন মানুষ কয়েক হাজার টাকা পেয়েছেন ওই নর্দমা থেকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন- আজব জিনিস এই টাকা। কখনো আকাশ থেকে পড়ে। কখনও আবার মাটি খুঁড়লে পাওয়া যায়। তবে এবার ড্রেনের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে। একশো, দুশো, পাঁচশো টাকার নোট নোংরা জলে নেমে কুড়িয়ে নিচ্ছেন মানুষ। অবাক করার মতো এমনই কাণ্ড ঘটেছে বাংলাদেশের রাজশাহীতে। রাজশাহী রেল স্টেশনের সামনে রেলওয়ে হাসপাতালের সামনে একটি নর্দমা থেকে অনেকেই টাকা পেয়েছেন। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সেই নর্দমা। আর সেই নর্দমার জলের সঙ্গে নাকি একের পর এক নোট ভেসে যাচ্ছে। খবর পেয়ে সেখানে লোকজন ভিড় করেছেন। এমনকী, অন্য জেলা থেকেও লোক চলে এসেছেন টাকা পাওয়ার আশায়।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, অন্তত ৫০ জন মানুষ কয়েক হাজার টাকা পেয়েছেন ওই নর্দমা থেকে। একজন যুবক সবার প্রথমে নর্দমায় পাঁচশো টাকার একটা নোট ভেসে যেতে দেখেন। তিনি সেই টাকা তুলে নেন। তিনি জানিয়েছেন, আধ ঘণ্টা ধরে খুঁজে তিনি দুটো পাঁচশো ও একটি একশো টাকার নোট নর্দমা থেকে পেয়েছিলেন। এর পরই অনেকে নর্দমার জলে নেমে পড়েন। একেকজন তো দশ হাজার টাকার মতো নর্দমা থেকে পেয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। সেই যুবক অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি বিকেলের দিকে টাকা দেখতে পেয়েছিলেন। সকালেই নাকি অনেকে নর্দমা থেকে কয়েক হাজার টাকা তুলে নিয়েছিল। তবে গত দুদিন ধরে ওই নর্দমার ধারে শয়ে শয়ে লোক ভিড় জমিয়েছেন। টাকা পেয়েছেন যত লোক তার থেকে টাকা পাওয়া লোকদের দেখতে এসেছেন আরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন- দাউদ রয়েছে করাচিতেই, গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কবুল করল পাক সরকার
টাকার সঙ্গে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের হিসাবের কিছু কাগজ সেখানে পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি কল্যাণ তহবিলের কাগজপত্র ও ভাউচার। তবে সেই কাগজগুলি সাত-আট বছরের পুরনো। রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক জানিয়েছেন, তাঁদের কার্যালয়ের ১০-১২ বছর আগের পুরনো কাগজে পোকা ধরেছিল। তাই সেগুলো না পুড়িয়ে ভুল করে নর্দমায় ফেলা হয়েছে। তবে টাকার ব্যাপারে তাঁর কোনও ধারণা নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি অবশ্যয একটি পুরনো ঘটনার উল্লেখ করেছেন। টাকার সঙ্গে সেই ঘটনার যোগ থাকতে পারে। তিনি বলেন, ''বছর তিনেক আগে আমাদের গ্রুপের একজন কর্মচারী তাঁর কাছে গচ্ছিত একজন বাস মালিকের প্রায় আড়াই লাখ টাকা হারিয়ে ফেলেছিন। গ্রুপের কার্যালয়ে নিজের ডেস্কের ড্রয়ারে টাকাগুলো রেখেছিলেন সেই ব্যক্তি। কেউ হয়তো সেখান থেকে চুরি করে। সেই ব্যক্তি মালিককে আর টাকা ফেরাতে পারেননি। তাই এখনো অল্প অল্প করে সেই হারানো টাকা নিজের বেতনের একটি অংশ থেকে শোধ করে চলেছেন তিনি। গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁকে এক লক্ষ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়েছিল। হতে পারে যে টাকা চুরি করেছিল সে পুরনো কাগজের স্তূপেই লুকিয়ে রেখেছিল। কার্যালয় সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকায় টাকাগুলো আর সে বের করতে পারেনি। সেই টাকাই এখন কাগজের সঙ্গে নর্দমায় গিয়ে পড়েছে।''