জেনারেল কায়ানির জোড়া বৈঠকে বরফ গলার ইঙ্গিত
তিন দিনের টানটান উত্তেজনার পর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে রাজনৈতিক সঙ্কট কাটার ইঙ্গিত মিলল। শনিবার পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির সঙ্গে সাক্ষাত্ করে সেনাবাহিনী ও গণতান্ত্রিক সাম্প্রতিক বিরোধের ক্ষেত্রগুলি নিয়ে আলোচনা করলেন জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি।
তিন দিনের টানটান উত্তেজনার পর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে রাজনৈতিক সঙ্কট মেটার ইঙ্গিত মিলল। শনিবার পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির সঙ্গে সাক্ষাত্ করে সেনাবাহিনী ও গণতান্ত্রিক সাম্প্রতিক বিরোধের ক্ষেত্রগুলি নিয়ে আলোচনা করলেন জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি।
পাক নিডিয়ার দাবি, সাম্প্রতিক 'মেমোগেট' কাণ্ডের পাশাপাশি চিনা সংবাদমাধ্যমে জারদারির দেওয়া বিতর্কিত সাক্ষাত্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে প্রেসিডেন্ট-সেনাপ্রধান বৈঠকে। অন্য দিকে, পাক নৌপ্রধান ও বিমান বাহিনীর প্রধানের উপস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে গিলানি-কায়ানি আলোচনায় মেমোগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে পাক সেনার হলফনামা থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা সচিব পদ থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) নঈম খালিদ লোদিকে বরখাস্ত করা-সহ অনেক বিষয়ই উত্থাপিত হয় এদিন।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মনসুর ইজাজ নামে এক পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন শিল্পপতির ফাঁস করে দেওয়া মেমো'তে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও আমেরিকায় নিযুক্ত তত্কালীন পাক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানির নাম জড়িয়ে যায়।
ইজাজ দাবি করেন, মে মাসে হাক্কানির নির্দেশে তিনি একটি স্মারকলিপি বানিয়ে মার্কিন সেনাপ্রধান মাইক ম্যুলেনকে দিয়েছিলেন। সেই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছিল, গোপনে অভ্যুত্থানের ছক কষছে পাক সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট জারদারির নির্দেশে বানানো ওই মেমো'তে পাক সেনার সম্ভাব্য অভ্যুত্থান ঠেকাতে আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন ফৌজের সাহায্যও প্রার্থনা করা হয়েছিল।
হাক্কানি অবশ্য দাবি করেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে দুরত্ব তৈরি করতেই এই ভুয়ো স্মারকলিপির গল্প তৈরি করা হয়েছে। যদিও সেই সাফাইয়ে সন্তুষ্ট হননি জেনারেল কায়ানি। সেনাবাহিনীর চাপে ইস্তফা দিতে হয় হাক্কানিকে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় মামলা। এমনকী দিন কয়েক আগে পাক সেনার হামলার ভয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় হাক্কানিকে। এর পাশাপাশি সেনাপ্রধান কায়ানির ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সচিব, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) নঈম খালিদ লোদিকে বরখাস্ত করে নার্গিস শেঠিকে নিযুক্ত করা নিয়ে সেনা-সরকার সংঘাত চরমে পৌঁছয়।
শুধু সেনাবাহিনীর রোষ নয়, প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টেরও নিশানা হয়েছে পাক গণতান্ত্রিক সরকার। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার জাতীয় আইনসভার বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী গিলানি। বর্তমান সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে সরকারকে সমর্থন না দিলে পাকিস্তানে ফের সামরিক একনায়কতন্ত্র ফিরতে পারে বলে পার্লামেন্ট সদস্যদের সতর্ক করেন তিনি। অন্য দিকে এদিন বিতর্কিত পাক ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ জানিয়েছেন, সমস্ত বিতর্কের অবসান ঘটাতে শীঘ্রই দেশে ফিরবেন তিনি।