Rohingya Crisis: আবারও মায়ানমারের রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশে!
মায়ানমারের রাখাইনের চলমান সংঘাতে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছেন।
সেলিম রেজা । সরওয়ার আজম: মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী সংগঠনের লড়াই তীব্র হচ্ছে। এ ঘটনার জেরে প্রাণ বাঁচাতে কৌশলে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফে ঢুকে পড়ছেন রোহিঙ্গারা (মায়ানমারের নাগরিক)। গত বৃহস্পতিবার সারাদিন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে আতঙ্কিত ছিলেন টেকনাফের বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তের সূত্রে জানা গেছে, মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপ এলাকায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির ও আরও একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনের সংঘাত চললেও সেটি এখন আরও তীব্র হয়েছে। শুক্রবার রাতে মায়ানমারের মংডুর বিভিন্ন এলাকা থেকে থেমে থেমে মর্টারশেল, গ্রেনেড-বোমা বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায়। রাখাইনে চলমান সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়লেও রোহিঙ্গাদের অনেকেই পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন।
বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন প্রায় ১২ হাজার রোহিঙ্গা। সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার চেষ্টায় রয়েছেন আরও প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা। ছয় মাস ধরে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত চলছে। এখন সংঘাত সবচেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দারা জানান, মায়ানমারের রাখাইনের ওপারে মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণে এপারের ঘরবাড়ি কাঁপছে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে মনে হয় বসতঘরের চালার ওপর বোমা এসে পড়ছে। রাতে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।
মায়ানমারের রাখাইনের মংডু টাউনশিপের বিপরীতে (পশ্চিমে) চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদী পেরোলেই বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা। টেকনাফের জনপ্রতিনিধিরা জানান, রাতের অন্ধকারে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের সুদাপাড়া, ফয়েজীপাড়া, সিকদারপাড়া ও নুরুল্লাপাড়া গ্রাম থেকে রোহিঙ্গারা নৌকা নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন। বেশিরভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকছেন জাদিমোরা, দমদমিয়া, কেরুনতলি, বরইতলি, নাইট্যংপাড়া, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ঘোলারচর, খুরেরমুখ, আলীর ডেইল, মহেষখালীয়াপাড়া, লম্বরী, তুলাতলি, রাজারছড়া, বাহারছড়া উপকূল দিয়ে। শুক্রবার রাতেই কেবল বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন চার শতাধিক রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের মংডুর উত্তরের প্যারাংপুরু ও দক্ষিণের ফাদংচা এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছেন।
মায়ানমারের রাখাইনের চলমান সংঘাতে সম্প্রতি তারা ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন। শুক্রবার রাতে নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফের কেরনতলির এক বাসিন্দার বাড়িতে আশ্রয় নেন ১৫ শিশু ও ৯ নারীসহ চার পরিবারের ৩০ জন রোহিঙ্গা। তাদের বাড়ি মায়ানমারের মংডু টাউনশিপের পাশের গ্রাম সুদাপাড়ায়। বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে নতুন করে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে এ পর্যন্ত কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, নতুন করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ৮ হাজারের মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন, Bangladesh: ফের বন্যার আতঙ্ক! অবিরাম বৃষ্টিতে ভাসছে একাধিক জেলা...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)