'ফার্স্ট বয়' হওয়াই কি লক্ষ্য রাশিয়ার, কতটা কার্যকরী হবে এই ভ্যাকসিন? জেনে নিন

 এই কম সময়ে হিতে বিপরীত হবে না তো? এই প্রশ্নই তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।  

Edited By: সোমনাথ মিত্র | Updated By: Aug 11, 2020, 05:15 PM IST
'ফার্স্ট বয়' হওয়াই কি লক্ষ্য রাশিয়ার, কতটা কার্যকরী হবে এই ভ্যাকসিন? জেনে নিন
প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রথম হতে ভালবাসে রাশিয়া। মহাকাশ হোক বা যুদ্ধক্ষেত্র প্রথম হওয়ার স্বাদ নিতে জুড়ি মেলা ভার রাশিয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন দুই শক্তিধর দেশ আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে, সে সময় আমেরিকা মোটামুটি পাকা করে ফেলেছিল মহাকাশে যাওয়ার।

কিন্তু কীভাবে 'গবুচন্দ্রের আবিষ্কার' জেনে গিয়েছিল রাশিয়া, যে আমেরিকার ঘোষণার চার দিনে আগেই মহাকাশে প্রথম যান পাঠিয়ে দিয়েছিল মস্কো। সেই থেকে শুরু। তারপর মহাকাশে প্রথম মানুষ পাঠানোর কৃতিত্বও রাশিয়ার। চাঁদে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকাকে টেক্কা দিতে না পারলেও, এ হেন বিশ্বমারীর সময়ে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে চমকে দিয়েছে পুতিনের দেশ। তার সঙ্গে কিছু আশঙ্কা, কিছু প্রশ্নও উঠে আসছে।

তাই রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সঙ্গে অনেকেই  স্পুটনিকের সঙ্গে তুলনা টানছেন। রাশিয়া তৈরি করে ফেলেছে বিশ্বের প্রথম করোনা প্রতিষেধক। ছাড়পত্র দিয়েছে রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রক। খোদ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মেয়ের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে সে ভ্যাকসিন। মনের জোর বেড়েছে সারা বিশ্বের। তাও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তড়িঘড়ি করে পরিস্থিতি মাথায় রেখে প্রতিষেধক এনেছে রাশিয়া। ২ মাসেরও কম সময়ে সম্পূর্ণ হয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই কম সময়ে হিতে বিপরীত হবে না তো? এই প্রশ্নই তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিন্তার ভাজ:
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ লরেন্স গোস্টিন জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তিত। তাঁর কথা অনুযায়ী হয়তো এটি শুধুমাত্র অকার্যকরীই নয় তার সঙ্গে বিপজ্জনকও হতে পারে।

মার্কিন সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ অ্যান্থনি ফউসিরও সন্দেহজনক মত রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, "আমি আশা করি রাশিয়া ও চিন প্রতিষেধকের পরীক্ষা করছে। কারণ পরীক্ষার আগেই প্রতিষেধক প্রস্তুত বলা অত্যন্ত সমস্যাজনক।"

রাশিয়ার ট্রায়াল:
রাশিয়া এখনও পর্যন্ত সকলের আছে বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ্যে এনেছে শুধুমাত্র প্রথম পর্বের ট্রায়ালের ফল। প্রথম পর্বের ট্রায়াল হয়েছিল ৭৬ জনের মধ্যে। তাঁদের বেশির ভাগই সেনাবাহিনীর সদস্য। ট্রায়াল সফল হয়েছিল। ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি কোনও ব্যক্তির। এমনটাই খবর মিলেছিল রাশিয়ার TAAS সংবাদমাধ্যমের তরফে। সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী গামালেয়ার ওই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ট্রায়াল শুরু হয় ১৩ জুলাই, শেষ হয় ৩ অগস্ট।

কীভাবে কাজ করে রাশিয়ার ভ্যাকসিন?
প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উদ্দীপিত করার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসকে দূর্বল করে দেয় এই ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিনটি মূলত SARS-coV-2 জাতীয় অ্যাডিনোভাইরাসের ডিএনএর উপর ভিত্তি করে তৈরি।

কবে মিলতে পারে বাজারে?
সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী রাশিয়া উপ প্রধানমন্ত্রী তাতায়না গোলিকোভা জানিয়েছেন, তাঁদের ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে সেপ্টেম্বরে। প্রথমে ভ্যাকসিন পাবেন সে দেশের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা। এখনও জানা যায়নি তাঁদের ভ্যাকসিনের দাম।

ভারত কি পাবে?
রাশিয়ার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী ডেনিস মান্তুরফ একটি সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি জানিয়েছেন এই বছরের মধ্যে ভ্যাকসিনের অনেক ডোজ বানিয়ে ফেলবে রাশিয়া। সে দেশের ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিলি ডমিত্রিভ জানিয়েছেন, ব্রাজিল ও  ভারত ভ্যাকসিনের জন্য উৎসাহী। এছাড়াও আরও অন্যান্য় দেশের সঙ্গে কাজ করছে রাশিয়া।

আরও পড়ুন: তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন! ঘোষণা রাশিয়ার, পুতিনের মেয়েকে প্রথম ডোজ

.