আমেরিকার হাতে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব কিমকে!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক আমলা দাবি করেন, কিম জং উনের কাছে প্রস্তাব রাখা হয় উত্তর কোরিয়ার কাছে থাকা সব ধরনের পরমাণু সম্ভার তুলে দেওয়া হোক আমেরিকার কাছে
নিজস্ব প্রতিবেদন: মধ্যাহ্নভোজ না সেরেই বেরিয়ে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের হানোয়ে হওয়া উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক মাঝ পথেই ভেস্তে যায়। সম্পূর্ণভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে আমেরিকার দাবি সরাসরি নাকচ করে দেওয়া হয় পিয়ংইয়াংয়ের তরফে। ট্রাম্পের সামনে হঠাত্ কিমের এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল আন্তর্জাতিক মহলে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয় কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক আমলা দাবি করেন, কিম জং উনের কাছে প্রস্তাব রাখা হয় উত্তর কোরিয়ার কাছে থাকা সব ধরনের পরমাণু সম্ভার তুলে দেওয়া হোক আমেরিকার কাছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ছিল মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মস্তিষ্কপ্রসূত। ২০০৪ সালে তিনিই এই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন এই রাষ্ট্রদূত যখন ট্রাম্প জমায় নিরাপত্তা উপদেষ্ট পদে যোগ দেন, ফের এই প্রস্তাব নিয়ে চর্চা শুরু হয়। ২০০৩ সালে এই প্রস্তাবে সম্মতি জানাতে বাধ্য হন লিবিয়ার তত্কালীন প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গদ্দাফি। লিবিয়াতে সম্পূর্ণভাবে পরমাণু ভাণ্ডার ধবংস করা হয়, যা বিশ্বে ‘লিবিয়া মডেল’ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন- সিআরপিএফ কনভয়ে ধাক্কার পরই বানিহালে গাড়িতে বিস্ফোরণ
২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরে কিম জং উনের সঙ্গে প্রথম বৈঠক হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের। সে সময়ই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে সম্মতি জানিয়েছিলেন কিম। পরবর্তী সময়ে পরমাণু ঘাঁটি নষ্ট করে দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে এলেও, মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র জানায় পরমাণু অস্ত্র তৈরি চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি নষ্ট হওয়া একটি ঘাঁটি পনরুজ্জীবিত করা হয়। গত ফেব্রুয়ারির বৈঠকে কিমের হাতে একটি ফাইল তুলে দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ফাইলে কী দাবি করা হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা ছিল। সূত্রের খবর, চূড়ান্ত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ এবং তার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ চাওয়া হয়েছিল আমেরিকার তরফে। কিন্তু লিবিয়া মডেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অস্ত্রভাণ্ডার তুলে দেওয়ার খবর আসতেই ও দিনে কিম-ট্রাম্পের বৈঠকের ভেস্তে যাওয়ার কারণ আরও স্পষ্ট হয়। এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিকরা।