ওজন কমাতে পেরু চলুন...

ওজন বেড়ে যাচ্ছে? বেড়ে চলা ভুঁড়ির সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতে কমছে নিদ্রা? অন্যদিকে সব বুঝেও লোভনীয় খাওয়া দাওয়া থেকে কিছুতেই নিজের অবাধ্য জিভ, দাঁতকে বশে আনতে পারছেন না? ব্যায়ামের পরিশ্রমেও কি আপনার ভয়ানক অরুচি? চলে যান পেরুর নেভাদো হাসকারান পর্বতে। আপনার ওজন ম্যাজিকের মত কমে যাবে। এমনকি একই ওজন যন্ত্রে আপনার বাড়িতে এবং পেরুর নেভাদো পর্বতে ভিন্ন ওজন চোখে পড়বে আপনার। অবাক হচ্ছেন? হবেন না একটুও। কারণ কৃতিত্বটা আপনার, ওজন যন্ত্র কিংবা পেরুর নয়। পুরো কৃতিত্বের একমাত্র ভাগীদার পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ।

Updated By: Aug 20, 2013, 07:01 PM IST

ওজন বেড়ে যাচ্ছে? বেড়ে চলা ভুঁড়ির সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতে কমছে নিদ্রা? অন্যদিকে সব বুঝেও লোভনীয় খাওয়া দাওয়া থেকে কিছুতেই নিজের অবাধ্য জিভ, দাঁতকে বশে আনতে পারছেন না? ব্যায়ামের পরিশ্রমেও কি আপনার ভয়ানক অরুচি? চলে যান পেরুর নেভাদো হাসকারান পর্বতে। আপনার ওজন ম্যাজিকের মত কমে যাবে। এমনকি একই ওজন যন্ত্রে আপনার বাড়িতে এবং পেরুর নেভাদো পর্বতে ভিন্ন ওজন চোখে পড়বে আপনার। অবাক হচ্ছেন? হবেন না একটুও। কারণ কৃতিত্বটা আপনার, ওজন যন্ত্র কিংবা পেরুর নয়। পুরো কৃতিত্বের একমাত্র ভাগীদার পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ।
ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন স্থানে ম্যাধাকর্ষণের তারতম্যের জন্য স্থান ভেদে বস্তু বা ব্যক্তির ওজন পরিবর্তিত হয়। সাধারণভাবে হিসাবের স্বার্থে ভূপৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ নির্দিষ্ট ধরে নেওয়া হলেও বাস্তবিক চিত্রটা কিন্তু ভিন্ন। পৃথিবীর ঘনত্ব সর্বত্র সমান নয়। পরিবর্তিত ঘনত্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যায় মাধ্যাকর্ষণ বলও।
এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে একটি উচ্চ রেজোলিউসন ম্যাপ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর অপকর্ষ বলের জন্য বিষুবরেখা বরাবর মাধ্যাকর্ষণ অনান্য স্থানের তুলনায় কম। একই ভাবে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বের কারণে উচ্চ উচ্চতা যুক্ত স্থানেও মাধ্যাকর্ষণ কম।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিশ্চিয়ান হির্ট অফ কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উপগ্রহ ও টপোগ্রাফি থেকে প্রাপ্ত নথির ভিত্তি করে মাধ্যাকর্ষণ মানচিত্র তৈরি করেছেন। ৬০ ডিগ্রি উত্তর থেকে ৬০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশ অঞ্চলকে এই ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর মোট ভূখণ্ডের ৮০% আনা হয়েছে এই মানচিত্রের মধ্যে।
এই ম্যাপে ভিন্ন মাধ্যাকর্ষণ যুক্ত ৩০ লক্ষ স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাত এই ৩০লক্ষটি স্থানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ভিন্ন। তাই একই ব্যক্তির ওজন এই প্রত্যেকটি স্থানে ভিন্ন।
এই মানচিত্র অনুযায়ী পেরুর নেভাদো হাসকারানে মাধ্যাকর্ষণ সর্বনিম্ন। ৯.৭৬৩৯মিটার/সেকেন্ড২। সুমেরু মহাসাগরে মাধ্যাকর্ষণ সর্বোচ্চ। ৯.৮৩৩৭মিটার/সেকেন্ড২। এর অর্থ হল ১০০ মিটার উচ্চতা থেকে পতনশীল কোনও বস্তু নেভাদোর থেকে সুমেরু মহাসাগরে ১৬ মিলিসেকেন্ড আগে এসে পড়বে।
এর আর এক অর্থ হল সুমেরু থেকে নেভাদো গেলে কোনও ব্যক্তি তার ওজনের এক শতাংশ কমে যাবে। (কোনও ব্যক্তি বা বস্তুর ওজন = ওই ব্যক্তি বা বস্তুর ভর x পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ)
স্থান ভেদে কমে যাওয়া ওজন দেখে বোধহয় উৎফুল্ল হওয়ার বিশেষ কোনও কারণ নেই। কারণ মাধ্যাকর্ষণ পরিবর্তিত হলেও ভর কিন্তু সব ক্ষেত্রেই সমান। ওজন মেশিনেড় কাঁটার নড়াচড়া সাময়িক স্বস্তি দিলেও তা যে ভুঁড়ির দৈর্ঘ্য এক ইঞ্চিও কমাবে না তা বলাই বাহুল্য।

.