কেন সরতে হল মুরসিকে
প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন একবছরের কিছু বেশি সময়। ক্ষমতায় এসেছিলেন গণতান্ত্রিক এবং আধুনিক মিশর গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে শেষপর্যন্ত থমকে যেতেই হল মহম্মদ মুরসিকে। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করল সেনাবাহিনী।
প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন একবছরের কিছু বেশি সময়। ক্ষমতায় এসেছিলেন গণতান্ত্রিক এবং আধুনিক মিশর গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে শেষপর্যন্ত থমকে যেতেই হল মহম্মদ মুরসিকে। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করল সেনাবাহিনী।
প্রতিশ্রুতি ছিল সমগ্র মিশরবাসীর জন্য গড়া হবে আধুনিক দেশ। কিন্তু, গত এক বছরে কতটা বাস্তবায়িত করতে পেরেছেন সেই প্রতিশ্রুতি? সেই প্রশ্নটার উত্তরই দিয়ে দিল তাহরির স্কোয়ার। মিশরের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মহম্মদ মুরসিকে।
জুন, ২০১২। মিশরের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মহম্মদ মুরসি।
কিন্তু, প্রায় গোড়া থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে উঠতে থাকে স্বজনপোষণের অভিযোগ। মুসলিম ব্রাদারহুডকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন মুরসি। ক্ষমতার অলিন্দে জায়গা করে নিচ্ছে ইসলামিক নেতারা। সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে ক্রমশ বাড়তে থাকা বেকারত্ব আর নিম্নগামী ইজিপশিয়ান মুদ্রার দামে।
বিপদ যে আসছে, তা সম্ভবত ভালোমতোই আঁচ করতে পেরেছিলেন মুরসি। আর সেই কারণেই নিজের ভুলগুলোকে অজুহাতের কবচ পরাতে উঠেপড়ে লেগে গিয়েছিলেন। ভুল হয় সংশোধন করার জন্যই। এমনই সাফাই ছিল মুরসির।
কিন্তু, গত নভেম্বরে যখন নিজের হাতে যাবতীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নিলেন, তখন থেকেই বাড়তে থাকে জনরোষ। মুরসির যুক্তি ছিল, দেশকে রক্ষা করতে হলে ক্ষমতা নিজের হাতে নেওয়া জরুরি ছিল। সময় যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে বিদ্রোহের আঁচ। তবে, মুরসিপন্থীরাও চুপ করে বসে ছিলেন না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুরসি প্রশাসন কতটা সক্রিয়, সেই প্রচার জোরকদমে চালিয়ে গিয়েছেন তারা।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার দুমাসের মধ্যেই সেনাবাহিনীর ক্ষমতা খর্ব করার কাজটা সেরে ফেলেছিলেন মুরসি। তত্কালীন সেনাপ্রধান মহম্মদ হুসেইন তান্তওয়াইকে পদত্যাগে বাধ্য করেন তিনি। আবার তান্তওয়াইকেই রেখে দেন নিজের উপদেষ্টা হিসেবে। হামাস এবং ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকার জন্য পশ্চিমি দেশগুলির কাছ প্রশংসাও কুড়িয়েছেন মুরসি। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না। আমেরিকায় ইঞ্জিনায়ারিংয়ে ডক্টরেট করা মানুষটিকে হারাতেই হল প্রেসিডেন্টের গদি।