TOP STORY: ধৃত দুই মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা সিআইডির

বর্ধমান কাণ্ডে গ্রেফতার  দুই মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করল সিআইডি। দুই মহিলা আলিমা ও রাজিয়াকে জেরার জন্য ভবানীভবনে আনা হচ্ছে। তাদের জেরা করবে সিআইডি। এরআগে তাদের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়। মামলা হয় ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক আইনেও । এবার যোগ হল রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা।

Updated By: Oct 8, 2014, 07:06 PM IST
TOP STORY: ধৃত দুই মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা সিআইডির

বর্ধমান: বর্ধমান কাণ্ডে গ্রেফতার  দুই মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করল সিআইডি। দুই মহিলা আলিমা ও রাজিয়াকে জেরার জন্য ভবানীভবনে আনা হচ্ছে। তাদের জেরা করবে সিআইডি। এরআগে তাদের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়। মামলা হয় ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক আইনেও । এবার যোগ হল রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা।

আগে এঁদের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ ছিল। ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক আইনেও মামলা হয়। নতুন করে যোগ হল রাষ্ট্রদ্রোহতিরা মামলা। একশ একুশ এ একশ বাইশ একশ তেইশ । ইউপিএর ধারা নম্বর ষোল আঠারোর  আঠারোর এ উনিশ কুড়ি ধারায় মামলা  হয়েছে আলিমা ও রাজিয়া বিবির বিরুদ্ধে।

শুধু খাগড়াগড়ই নয়। জেহাদি জঙ্গিদের সন্ত্রাসের জাল বর্ধমানের অন্যত্রও ছড়ানো ছিল। বাবুরবাগের লিচুতলায় সন্দেহভাজন চার জঙ্গির যে ডেরার হদিশ গোয়েন্দারা পেয়েছেন, তা থেকে উদ্ধার হয়েছে চারটি পিস্তল। বাষট্টি রাউন্ড কার্তুজ। মিলেছে বেশ কিছু পোড়া নথি। বর্ধমান কাণ্ডে মোস্ট ওয়ান্টেড কওসর এই বাড়িতেই গা ঢাকা দিয়ে ছিল বলে মোটামুটি নিশ্চিত গোয়েন্দারা।

মফস্বল এলাকার একটা বাড়ি। যেমনটা হয়। বাইরে থেকে বেশ ছিমছাম। কিন্তু এই বাড়ির ভিতরেও সন্ত্রাসের কারখানা। এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য কিছু টের পাননি। বাড়িতে পা দিয়ে গোয়েন্দারা কিন্তু বুঝে যান, এটা মোটেই সাধারণ বাড়ি নয়। উঠোনের কোণে ডাঁই হয়ে পোড়া কাগজ। সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। নোংরার স্তূপ ঘাঁটতেই বেরিয়ে আসে আইপিএলের টিকিট, ভাঙা সিমকার্ড, মোবাইলের ব্যাটারি।

দোতলায় গিয়ে গোয়েন্দারা দেখেন, গ্রিলের গেটে তালা। তালা ভেঙে শুরু হয় তল্লাশি। এরপরই বেরিয়ে আসে ছোটখাটো একটা অস্ত্রাগার। চারটে পিস্তল। দুটি নাইন এমএম। দুটি সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ। সঙ্গে বাষট্টি রাউন্ড কার্তুজ। একটি ম্যাগাজিন।

বর্ধমান কাণ্ডের শুরু থেকেই গোয়েন্দাদের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে রয়েছে কওসর। খাগড়াগড়ের বাড়ি থেকে তিনবার গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিল সে। বাবুরবাগের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে গোয়েন্দারা মোটামুটি নিশ্চিত, এখানেই গা ঢাকা দিয়েছিল কওসর। কওসরের স্ত্রীয়ের নামে একটি প্রেসক্রিপশন উদ্ধার করেছে পুলিস। শেখ কাদের নামে একজনের ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার হয়েছে। শেখ কাদের সম্পর্কে কওসরের শালা। খাগড়াগড় কাণ্ডে বীরভূমের কীর্ণাহারে যে রহস্যজনক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, শেখ কাদেরই সেই ব্যক্তি বলে গোয়েন্দাদের অনুমান। চতুর্থী ও পঞ্চমীর দিন পনেরোবার কল গিয়েছিল কাদেরের নম্বরে। শাকিলের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সিম পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

বাড়ির নীচেতলায় তিনটে ঘর। ওপর তলায় তিনটে। বাড়ির মালিক কাজি আবদুল রেজ্জাক। দুমাস আগে বাড়ি ভাড়া নেয় চারজন। দুজন পুরুষ, দুজন মহিলা। প্রতিবেশীদের চোখে শুরু থেকেই কেমন যেন ঠেকেছিল পাড়ার নতুন অতিথিরা।

দুই মহিলা আপাদমস্তক বোরখা ছাড়া বাইরে বেরোতেন না। মুখ ঠাকা থাকত নকাবে। হাতেও থাকত দস্তানা।  দুই পুরুষের বয়স পঁয়তিরিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে। দুজনের মধ্যে একজন লালরঙের একটি মোটরবাইকে যাতায়াত করত। বাইরে বেরোলে বেশিরভাগ সময়ই তার মুখ ঢাকা থাকত হেলমেটে। কেউ পরিচয় ও পেশা জিজ্ঞেস করলে  বলত, নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসা আছে। বাবুরবাগের বাড়ির নীচেতলায় তিনটি ঘরে ভাড়া থাকে কয়েকজন ছাত্র। দোতলায় ওঠায় নিষেধ ছিল তাদের।

দোসরা অক্টোবর। দুপুর সোয়া বারোটা। বিস্ফোরণ হয় বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাড়িতে। নিমেষে খবর পৌছে যায় বাবুরবাগের বাড়িতে। ভাড়াটিয়া ছাত্ররা তখন পুজো ও ইদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছে।  দুপুর দুটো নাগাদ একসঙ্গে বাড়ি ছাড়ে দুই পুরুষ ও দুই মহিলা। যাওয়ার আগে নষ্ট করে দেয় যাবতীয় নথিপত্র। তবুও কী শেষরক্ষা হল?

 

.