মুক্তি পেলেন লক্ষ্মণ শেঠ

অবশেষে গ্রেফতার হওয়ার ১২২ দিন পর আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেলেন সিপিআইএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। জামিনের শর্ত অনুযায়ী তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যেতে পারবেন না। মুক্তির পর লক্ষ্মণ শেঠ জানিয়েছেন, এখন তিনি কলকাতাতেই থাকবেন।

Updated By: Jul 17, 2012, 11:44 AM IST

অবশেষে গ্রেফতার হওয়ার ১২২ দিন পর আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেলেন সিপিআইএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। জামিনের শর্ত অনুযায়ী তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যেতে পারবেন না। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সপ্তাহে দু`দিন তাঁকে তদন্তকারী সিআইডি অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে হবে। মুক্তির পর লক্ষ্মণ শেঠ জানিয়েছেন, এখন তিনি কলকাতাতেই থাকবেন। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করার পাশাপাশি লক্ষ্মণ শেঠ তাঁর পাশে থাকার জন্য দলীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
গ্রেফতার হওয়ার ১১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই ২০০৭ সালের নন্দীগ্রাম নিখোঁজ কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত, তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়। ৫০,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে কলকাতা হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয় তাঁকে। জামিনের আবেদনের শুনানি চলাকালীন  বিচারপতি অসীমকুমার রায় ও বিচারপতি তৌফিকউদ্দিনকে নিয়ে গঠিত কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিআইডি-র কাছে জানতে চায়, নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় জমা পড়া অতিরিক্ত চার্জশিটে লক্ষ্মণ শেঠ সম্পর্কে কোনও তথ্যপ্রমাণ না থাকায় তাঁকে জেলে রাখার যৌক্তিকতা কী ? সিআইডির উত্তর সন্তোষজনক মনে না হওয়ার পর হাইকোর্ট লক্ষ্মণ শেঠের জামিন মঞ্জুর করে। 
গতকাল, হলদিয়া আদালতে লক্ষ্মণ শেঠের আইনজীবীরা তাঁর জামিন সংক্রান্ত নথি  জমা দেন। হলদিয়া আদালতের এসিজেএম-এর দেওয়া রিলিজ অর্ডার আলিপুর সংশোধনাগারে এসে পৌঁছনোর পর আজ ছাড়া পেলেন তমলুকের প্রাক্তন সিপিআইএম সাংসদ।
গত ১৭ মার্চ মুম্বইয়ের চেম্বুর এলাকার একটি গেস্টহাউস থেকে তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ গ্রেফতার করে সিআইডি। লক্ষ্মণ শেঠের সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়, নন্দীগ্রাম নিখোঁজ কাণ্ডে অভিযুক্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই প্রথম সারির সিপিআইএম নেতা- পাঁশকুড়া (পূর্ব)-র প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় সাহু এবং সিপিআইএম-এর নন্দীগ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা কৃষকসভার জেলা সভাপতি অশোক গুড়িয়াকে।রাজ্য পুলিসের তরফে জানান হয় তাঁরা হায়দরাবাদ থেকে মুম্বই এসেছিলেন। তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। লক্ষ্মণ শেঠের গ্রেফতারের পর শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তোলে সিপিআইএম।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি হলদিয়ার এসিজেএম আদালতে নন্দীগ্রাম নিখোঁজ কাণ্ডের চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। চার্জশিটে ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে নন্দীগ্রামে সিপিআইএম এবং ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সংঘর্ষের ঘটনায় `নিখোঁজ` ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সমর্থকদের খুন করে দেহ লোপাট করার অভিযোগ আনা হয় ধৃত ৩ নেতার বিরুদ্ধে। খুন, প্রমাণ লোপ, ষড়যন্ত্র, অস্ত্র আইন-সহ একগুচ্ছ ধারায় মোট ৮৮ জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল ২১৫ পাতার এই চার্জশিটে। অবশ্য চার্জশিট পেশের আগেই আত্মগোপন করেছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ-সহ ৩ নেতা।
প্রসঙ্গত, আগে গত বছরের অগাস্ট মাসে দাসেরবাঁধ কঙ্কাল কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গড়বেতার সিপিআইএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রায় ৫ মাস জেলবন্দি থাকার পর চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে জামিন পান তিনি। সে ক্ষেত্রেও সুশান্তবাবুর উপর তার নিজের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে যাতায়াতের বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিল শীর্ষ আদালত।

.