গুড়িয়ার দেহে আঘাতের চিহ্ন, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
গুড়িয়ার দেহের ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য শরীরের যকৃত, ফুসফুস ও জরায়ুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শুক্রবার গুড়াপ থানার পুলিসের উপস্থিতিতেই এনআরএস হাসপাতালে গুড়িয়ার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।
গুড়িয়ার দেহের ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য শরীরের যকৃত, ফুসফুস ও জরায়ুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শুক্রবার গুড়াপ থানার পুলিসের উপস্থিতিতেই এনআরএস হাসপাতালে গুড়িয়ার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় গুড়িয়ার দেহ চুঁচুড়া হাসপাতাল থেকে এনআরএসে নিয়ে আসা হয়। চুঁচুড়া হাসপাতালে পরিকাঠামো না থাকায়, সেখানে গুড়িয়ার দেহের ময়নাতদন্ত করানো যায়নি।
ইতিমধ্যেই গুড়িয়া মৃত্যু রহস্যে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ প্যাটেলের ডিভিশন বেঞ্চ ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে। হাইকোর্টে ইতিমধ্যেই গুড়িয়ার মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন বাসবী রায়চৌধুরী নামের এক আইনজীবী। নিরপেক্ষ তদন্তের পাশাপাশি এ বিষয়ে পুলিসের ভূমিকা কী ছিল তার খোঁজ করা এবং যে চিকিত্সক গুড়িয়ার ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধেও তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গেই, রাজ্যে এরকম হোম কটি রয়েছে, সেগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তাদের লাইসেন্স আছে কি না, তার নজরদারিতে সরকারের কী ভূমিকা তা জানতে চাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে গুড়িয়ার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারকে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। এই মর্মে রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। একই সঙ্গে কমিশনের তরফে জেলার দুই প্রশাসনিক কর্তা, জেলাশাসক এবং পুলিস সুপারকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। কমিশনের তরফে রাজ্যের কাছ থেকে এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গুড়িয়ার রহস্য মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতা শর্মা বলেছেন, আপাতত গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছেন তারা। রাজ্যের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার গুড়িয়াকাণ্ডের তদন্তে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধনেখালির হোমে রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় এই নিয়ে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হল। আজ যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা হলেন, হোমের কলের মিস্ত্রি সন্দীপ দাস, ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি শেখ নাজিমুদ্দিন, দুলাল স্মৃতি সংসদ হোমের কোষাধ্যক্ষ অসীম মাইতি এবং হোমের দুই সদস্য জলধর সাধু খাঁ ও প্রভাস রঞ্জন ঘোষ।
এই ৫ জনের পাশাপাশি গতকাল ধৃত প্রফুল্ল সোরেন এবং তরুমল দাসকেও আজ চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে। প্রফুল্ল এবং তরুমল দেড়শো টাকার বিনিময়ে গুড়িয়ার দেহ মাটিতে পুঁতেছিল বলে অভিযোগ। ৭ জনকে আদালতে তোলার পাশাপাশি হোমের দারোয়ান মথুর পাত্র এবং রাঁধুনী নাজিমা খাতুনের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। গুড়িয়া কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শ্যামল ঘোষ এখনও ফেরার। তার দুই দাদাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। গুড়িয়ার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত হোমের সেক্রেটারি উদয় চাঁদ কুমার, গাড়িচালক সোমনাথ দে ওরফে সানি এবং রঞ্জিত ১৪ দিনের পুলিস হেফাজতে রয়েছে। আজ এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত হবে গুড়িয়ার।