পদে পদে গাফিলতির চূড়ান্ত নিদর্শন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে
এতবড় ঘটনা। অথচ জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের ঘুম ভাঙতেই সময় লেগে গেল প্রায় দুঘণ্টা। আর হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা তো কহতব্যই নয়। পদে পদে গাফিলতির চূড়ান্ত নিদর্শন।
ওয়েব ডেস্ক: এতবড় ঘটনা। অথচ জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের ঘুম ভাঙতেই সময় লেগে গেল প্রায় দুঘণ্টা। আর হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা তো কহতব্যই নয়। পদে পদে গাফিলতির চূড়ান্ত নিদর্শন।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের দোতলায় হঠাত্ই আগুন লাগে। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। একটিমাত্র সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েই ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা। মারা যায় এক শিশু। মারা যান এক আয়া ও রোগীর এক আত্মীয়। দোতলায় আরও দুটি সিঁড়ি থাকলেও সেগুলি তালা দেওয়া ছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন মুর্শিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে লেগেছে আগুন, মৃত ২
এখানেই প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে। সরকারি হাসপাতালে কেন এমন ঢিলেঢালা পরিকাঠামো? এমার্জেন্সির সময় কেন দোতলার বাকি দুটি সিঁড়ির কোলাপসিবল গেটের তালা খোলা গেল না?
আর জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের তো ঘুম ভাঙল কয়েক ঘণ্টা পর। আগুন লাগল বারোটা কুড়িতে। আর হাসপাতালের ঢিলছোড়া দূরত্বে নিজের অফিসে বসে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর খবর পেলেন মহকুমাশাসক! তাও কিনা চব্বিশ ঘণ্টার ফোনে। অথচ বহরমপুর মহকুমাশাসকের দফতর থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে আসতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট।
মহকুমাশাসকের অবশ্য দাবি, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। অবশেষে তিনি যখন হাসপাতালে পৌছন, তখন পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় দুঘণ্টা। পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে হাসপাতালে পৌছন মহকুমাশাসক।
আরও পড়ুন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছিল না কোনও প্রাথমিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা! মৃত শিশু
ধোঁয়ায় ঢাকল হাসপাতাল। প্রাণ ভয়ে স্যালাইনের বোতল হাতে ছুটলেন রোগীরা। তিন জন মারাও গেল। স্থানীয় প্রশাসনিক ঢিলেমির নিদর্শনের সাক্ষী থাকল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে বিশেষ কমিটি গঠন করল নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাক্তন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বহরমপুর গেছেন। নবান্নে ডেকে পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য, দমকল এবং পুলিস কর্তাদের। মৃতদের পরিবার পিছু দু লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।