আবেশ এটা তোর জন্য

Updated By: Jul 30, 2016, 08:06 PM IST
আবেশ এটা তোর জন্য

স্বরূপ দত্ত

ওইটুকু ছেলে তুই, চলে গেলি অসময়ে
যতবার দেখছি, প্রাণ কেঁপে উঠছে ভয়ে।

তুই এখন শান্তিতে চোখ বুজে রয়েছিস
মা, দিদিমার কষ্ট এখন উপর থেকে দেখছিস?

কিচ্ছু জানতে চাই না, তোকে নিয়ে চারপাশে যা ঘটছে
সত্যি বলতো আবেশ, তোর আত্মার এখন কী মনে হচ্ছে?

তোর দিদাকে কত লোকে ডাকছে বলে ট্যাটু দিদিমা!
তোর হাতে আঠেরোশো টাকা দিয়েছে বলে, কত খারাপ তোর মা!

তুই তো নিজেই সদ্য সতেরো, বেড়ানোর কথা খেলে
তোর বন্ধুরাও স্মৃতিচারণ করছে, তুই নাকি বড় মিষ্টি ছেলে।

তবে, কেন হবে তোর এমন করুণ পরিণতি?
আফশোস হচ্ছে না? একটু আগে বুঝতিস যদি!

আজ মা, দিদার অসম্মাণ তোর কানে কি যায় না?
দেখলি আবেশ, এটাই জীবন, একবার চলে গেলে আর কেউ সুযোগ পায় না।

মায়ের কষ্ট একটু ভাবতো, তুই তো এখন অশরীরী, বুকটায় ঢুকে দ্যাখ তো
স্বামী নেই, ছেলে নেই, আজ মায়ের কষ্টটা একটু কমাতো।

আজ দিদারই কেমন লাগে? মেয়েটাকে একা ফেলে
জামাই, নাতি, সবাই তাঁর আগে গেল চলে!

দায়িত্ব না নিয়ে, কথা না শুনে, চলে গেলি যেই
এটাই অদৃষ্ট বুঝলি আবেশ, আজ কিনা তোরই বিচার নেই!

জানি আজ হয়তো তুই অনুতপ্ত একেবারে মন দিয়ে
মদ, প্রেম এসব কিছুরই সময় থাকে, শিখিয়ে গেলি প্রাণ দিয়ে!

আজ বুঝলি তো আবেশ, কী নিষ্ঠুর আমরা? তাই তোর মন আর কেউ বুঝবে না
সতেরোর বুকের আবার কষ্ট কী! কেউ কোনওদিন খুঁজেও দেখবে না।

কষ্ট হচ্ছে বলতে গেলে আগে বড় হতে হয়
ছোটদের কষ্ট বুঝবোই না, আমরা এতটাই নির্দয়।

রাগ করিস না, না চিনেও তোকে, এতগুলো কথা বললাম বলে
বিশ্বাস করি, আজ বুঝবি, কতটা কষ্ট হয়, কেউ মাত্র সতেরোতেই চলে গেলে।

এবার কিন্তু ওপরে বাবার কথা শুনে চলিস
মনপ্রাণ দিয়ে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করিস।

সবশেষে আশীর্বাদ রইলো, জীবন-মরণের ওপারেও
বাবার সাথে মিলেমিশে থাকিস, খেয়াল রাখিস তোর মায়েরও

এ পৃথিবীর কোনওকিছুই থেমে থাকে না কারও জন্য
এসব কথা তোর মাকে কে বোঝবে? তাঁরই যে আজ কোলশূন্য।
তাঁর যে আজ কোলশূন্য!

 

 

.