EXCLUSIVE, Sushant Singh Rajput And MS Dhoni: সুশান্তের মৃত্যুতে খুব ভেঙে পড়েছিলেন মাহি, জানালেন ধোনির বায়োপিকের পরিচালক নীরজ পান্ডে
'রিল' লাইফের ধোনি তিন বছর আগে নিঃশব্দে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। বলিউড থেকে ভারতীয় ক্রিকেট মহল। সবাই প্রিয় সুশান্তের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে শোকবার্তা দিয়েছিল। তবে 'রিয়েল' ধোনি কিংবা তাঁর পরিবারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও বার্তা পাওয়া যায় নি।
সব্যসাচী বাগচী
তিন বছর আগের কথা। কোভিড আতঙ্ক (Covid 19) ও লকডাউনের (Lovkdown) চাপে আসমুদ্র হিমাচল বিদ্ধস্ত। ২০২০ সালের ১৪ জুন। সেই দুপুরের দিকে জাতীয় খবরের চ্যানেলগুলোতে একটাই ব্রেকিং নিউজ চলছিল.....'সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput) আর নেই!'
বলিউডের (Bollywood) উঠতি অভিনেতা। মাত্র ৩৪ বছরে থেমে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে খুব মাখোমাখো সম্পর্ক ছিল না। তবে কিছু সময়ের জন্য নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। খড়্গপুরের শুটিং করার সময় কয়েকটা দিন ওঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। কালের নিয়মে সেগুলো সব স্মৃতির পাতায় ঢুকে গিয়েছে।
তিন বছর হয়ে গেল প্রিয় সুশান্ত নেই। তবুও তাঁর ম্যানারিজম রয়ে গিয়েছে। তাই তো তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী টুইটারে #SushantSinghRajput ট্রেন্ডিং। সেই অভিশপ্ত দুপুরে মর্মান্তিক খবরটা পেয়েই রাঁচির এক ভদ্রলোকের বাড়িতে প্রথম ফোনটা করছিলেন। যিনি ফোন করেছিলেন তিনি হলেন ‘এম এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ (MS Dhoni The Untold Story) সিনেমার পরিচালক নীরজ পান্ডে (Niraj Pandey)। আর যাঁর কাছে সেই দুঃসংবাদ পৌঁছেছিল তিনি এক ও অদ্বিতীয় মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। মর্মান্তিক খবরটা ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই শোকস্তব্ধ ছিল বলিউড। কয়েক ঘন্টার জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন রিয়েল লাইফের ধোনি। কারণ, তাঁদের ‘রিল’ লাইফের ‘মাহি’ যে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন!
নীরজের কথা শোনার জন্য ক্রমাগত যোগাযোগ করা হচ্ছিল। ফোন, মেসেজ, হোয়াটসআ্যপের কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না। অবশেষে তাঁর আপ্ত সহায়ক দীপক সিংয়ের মাধ্যমে জি ২৪ ঘণ্টার কাছে ধরা দিলেন ‘এ ওয়েডনেস ডে’, ‘স্পেশ্যাল 26’, ‘বেবি’, ‘রুস্তম’, ‘নাম সাবানা’-র মত সুপারহিট সিনেমার পরিচালক। হাওড়ায় জন্ম নেওয়া এই পরিচালক প্রথমেই রেগে গেলেন। এবং বললেন, “এই দিনটা এলেই মনটা কেঁদে ওঠে। আমরা পেশাদার হলেও, শরীরে তো রক্ত-মাংস আছে। মন-মেজাজ একদম ভালো নেই। এরমধ্যে সকাল থেকে একই বিষয় নিয়ে কথা বলে যাচ্ছি। আর ভালো লাগছে না। সুশান্ত নেই। ভাবতেই পারছি না। ওর বাবা এখনও পাগলের মত আচরণ করেন।"
খবরটা পেয়ে ধোনির বাড়িতে ফোন করেছিলেন? নীরজ একনাগাড়ে বলে গেলেন, "মাহি ভাইয়ের বাড়িতে ফোন করা ছাড়াও, ওর দুই অন্তরঙ্গ বন্ধু মিহির দিবাকর ও অরুণ পান্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলাম। সবারই মনের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সুশান্ত আমাদের মধ্যে নেই। এটা মাহি ভাই বিশ্বাস করতে পারছিল না। ও খুব ভেঙে পড়েছিলেন। সাক্ষীও কষ্ট পেয়েছিল। আশাকরি এই বিশেষ দিনে ওদের মন-মেজাজ আমরা মতোই খারাপ হয়ে আছে।"
আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: সমীর ওয়াংখেড়ের মামলায় শাহরুখের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ! বম্বে হাইকোর্টে দাখিল মামলা...
আরও পড়ুন: Hero Alom: নির্বাচনের আগে বদলে ফেললেন লুক, বিয়ে করছেন হিরো আলম?
বায়োপিকে ধোনির চরিত্রে অভিনেতা বাছাই নিয়ে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ভীষণ খুঁতখুঁতে ছিলেন। তিনি গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার পরেই সুশান্তকে বেছে নেওয়া হয়। নীরজ যোগ করলেন, "রিল লাইফে মহেন্দ্র সিং ধোনি হওয়ার জন্য ও একটানা নয় মাস পরিশ্রম করেছিল। কিরণ মোরে স্যর আমাদের খুব সাহায্য করেন। সুশান্তের নিষ্টা দেখে মাহির মত কড়া ধাতের মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়।" শুধু নীরজ নন। এই সিনেমার প্রযোজক অরুণ পান্ডে’র সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। যদিও সুশান্তের প্রয়াণ নিয়ে মুখ খুললেন ধোনির আর এক বন্ধু মিহির দিবাকর। তিনি বলেন, "সেদিন দুপুড়ে খারাপ খবরটা শোনার পর থেকেই ধোনি চুপ করে গিয়েছিল। মাহি আজও কষ্ট পায়। আমাদের আড্ডা হলেই সুশান্তকে আলোচনা হয়। আসলে এমন হাসিখুশি ছেলে খুব কম দেখা যায়।"
'রিল' লাইফের ধোনি তিন বছর আগে নিঃশব্দে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। বলিউড থেকে ভারতীয় ক্রিকেট মহল। সবাই প্রিয় সুশান্তের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে শোকবার্তা দিয়েছিল। তবে 'রিয়েল' ধোনি কিংবা তাঁর পরিবারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও বার্তা পাওয়া যায় নি। সোশ্যাল মিডিয়া তো অনেক দূর, মাহি কিংবা ওঁর পরিবার জনসমক্ষে সুশান্তকে নিয়ে একটাও শব্দ খরচ করেননি।
এর কোনও বিশেষ কারণ? মিহির একটু থেমে উত্তর দিলেন, "পরিবারের কেউ মারা গেলে সেই পরিবারের মাথা কখনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বার্তা দেয়!মনে রাখবেন ওর ভাই মারা গিয়েছে!"
মহেন্দ্র সিং ধোনি মানেই তো নিত্য-নতুন চমক। আগেও সবাইকে অবাক করেছেন। এবারও সবাইকে চমকে দিলেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে ধোনিকে নিয়ে রহস্য বেড়েই চলছে। ঠিক যেমন সুশান্তের চিরঘুমে চলে যাওয়ার ব্যাপারটা এখনও রহস্যময়। কারণ আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত খুন? সেই উত্তর যে এখনও অধরা।