টোকা, তবু ক্যামেরার কাজেই বাজিমাত

বিগ বাজেট বলিউডের দৌড়ে অনেক পিছিয়ে স্মল বাজেট ছবি। আরও বিশদে স্মল স্টার-সম্মিলিত বিগ বাজেট ছবির প্রতি আশা-ভরসা যেমন কমছে, তেমনই কমছে সম্ভাবনা। কম বিখ্যাত তারকাদের ওপর ভরসা করতে চান না এখনকার প্রযোজকেরা। একইভাবে, মিডিয়ার প্রচার ও দাক্ষিণ্য থেকেও বঞ্চিত হয় এইসব ছবি। ইদানীং এই ধরনের প্রচেষ্টা বেশিরভাগ সময়েই লক্ষ্মীর ভাঁড়ারে টান পডেছে। গুরমিত সিং-এর ছবি ওয়ার্নিং, সেদিক থেকে ওয়েলকাম ব্রেক বলা যায়!

Updated By: Oct 4, 2013, 08:24 PM IST

শর্মিলা মাইতি
ছবির নাম ওয়ার্নিং (থ্রি ডি)
রেটিং- ***
বিগ বাজেট বলিউডের দৌড়ে অনেক পিছিয়ে স্মল বাজেট ছবি। আরও বিশদে স্মল স্টার-সম্মিলিত বিগ বাজেট ছবির প্রতি আশা-ভরসা যেমন কমছে, তেমনই কমছে সম্ভাবনা। কম বিখ্যাত তারকাদের ওপর ভরসা করতে চান না এখনকার প্রযোজকেরা। একইভাবে, মিডিয়ার প্রচার ও দাক্ষিণ্য থেকেও বঞ্চিত হয় এইসব ছবি। ইদানীং এই ধরনের প্রচেষ্টা বেশিরভাগ সময়েই লক্ষ্মীর ভাঁড়ারে টান পডেছে। গুরমিত সিং-এর ছবি ওয়ার্নিং, সেদিক থেকে ওয়েলকাম ব্রেক বলা যায়!

২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া হলিউড ছবি "ওপেন ওয়াটার টু:অ্যাড্রিফ্ট" যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অবশ্য বিভিন্ন জায়গাতেই ফ্রেম-টু-ফ্রেম মিল পাবেন। তবে কপি কপি বলে চ্যাঁচামেচি করবার আগে একটিই কথা জানিয়ে রাখা ভাল- এই কাস্টিং-এ এমন ছবি বলিউডে থ্রি-ডি মুক্তি নিঃসন্দেহে একটি সাহসী পদক্ষেপ। একঝাঁক নতুন মুখ। মঞ্জরী ফাডনীশ বাদে আর সকলেরই বড় পর্দায় ডেবিউ। নতুনত্বটা সবসময়েই এক ঝলক মৃদুমন্দ বাতাস।
ফিজিতেই সারা হয়েছে পুরো ছবির শুটিং। এ বছরের শুরুতে মুক্তি পেয়েছিল একটি ছবি, হয়ত বিস্মৃত হয়নি এখনও দর্শক। টেবিল নাম্বার টোয়েন্টি ওয়ান। রাজীব খান্ডেলওয়াল ও টিনা দেশাই অভিনীত এই ছবিতে ফিজির নিসর্গদৃশ্যের অপূর্ব সব শট দেখা গিয়েছিল। এই ছবির আন্ডারওয়াটার শটগুলো দেখলে সত্যি দু-চোখের পলক পড়বে না। আরও গভীরে গিয়ে ফিজির দৃশ্যাবলী এত গভীর ও সুন্দরভাবে ধরা হয়েছে, অকল্পনীয়। ফিজির টুরিজম বোর্ড যে প্রাণ খুলে সাহায্য করেছেন, সেটা বলাই বাহুল্য। এই ছবিতে তারকার ঝাঁক সবাই স্কুলের ছাত্রছাত্রী। তাদেরই মধ্যে এক বন্ধুর বাড়ি ফিজিতে। তাই সবাই মিলে প্ল্যান করে, বড়সড় খরচ করে বিদেশভ্রমণটা সেরেই ফেলে। ফিজির সমুদ্রের প্রেমে এমনই পাগল হয় সকলে, যে একটি নিদারুণ ভুল করে ফেলে। সম্বিত্‍ ফিরলে নিজেদের তারা আবিষ্কার করে মাঝসমুদ্রে। জনপদ থেকে বহু দূরে। শুরু হয় তাদের অ্যাডভেঞ্চার-পর্ব।

শুধু অ্যাডভেঞ্চারই নয়, বিপদের মুখে খসে পড়ে অনেক মুখ ও মুখোশ। সুখের সময়ে যারা গলায় গলায় বন্ধু, তাদেরই স্বার্থপরতা হঠাত্‍ দাঁত-নখ বের করে আসে। দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতিও হারিয়ে যায় কোথায়। আবার এখান থেকেই শুরু হয় নতুন কোনও পথ চলা। পরিচালকের প্রথম ছবি। সংলাপ আর চিত্রনাট্য সম্পর্কে আরও বেশি সচেতনতা প্রয়োজন ছিল। অযথা দীর্ঘ সংলাপ কাটছাঁট করার দরকার ছিল। তবে সেইসব খুঁত ছাপিয়ে উঠেছে ক্যামেরা আর টেকনোলজির সঠিক ব্যবহার। কয়েকটি দৃশ্য হলিউড ছবির থেকে স্ট্রেট লিফট বলা যায়। বিশেষ করে, নিজেদের জামাকাপড় খুলে গিঁট বেঁধে দড়ির মতো ব্যবহার করার দৃশ্য কিংবা ভয়াবহ হাঙরের মুখে পড়ার দৃশ্যটি। টোকা হলেও ক্যামেরার কাজের নিখুঁতত্ব ভরিয়ে দেয় মন। থ্রি-ডি ছবি এর আগেও দেখেছি হাল আমলের বলিউডে। রাজ-থ্রি পুরো ছবিই রিলিজ করেছিল থ্রি-ডি ভার্সনে। বিক্রম ভট্টের ছবিকে দৌড়ে অনেক পিছনে ফেলে দেবে "ওয়ার্নিং"।
যা আসলে আশার আলো দেখাতে পারে সবার শেষে, তা হল মাউথ পাবলিসিটি। দেখে ভাল লাগলে দর্শকই প্রচারের কাজটা করে দেন। বিরাট ব্যয়ের হাত থেকে বেঁচে যান প্রযোজক। পুজোর মুখে নেহাত ভিড়ভাট্টা অসহ্য মনে হলে একবার দেখেই আসতে পারেন ওয়ার্নিং। সময় আর অন্যরকম অভিজ্ঞতা, দুটোরই সদ্ব্যবহার হবে।

.