Laxmi Puja 2022 : 'লক্ষ্মীপুজোয় যৌথ পরিবারের সেই আনন্দ-আড্ডা আজ আর নেই'
'আমাদের বাঙাল বাড়ির পুজো নিরামিষ কোনওদিনই হয় না। ছোটথেকেই সেটা দেখিনি। পুজোর দিন মানেই দুপুরবেলায় ইলিশ মাছ। আজও সেটা হয়েছে। রাতের জন্য ভুনা খিচুরি, লাবড়ার তরকারি, পায়েস, লুচি, জলপাই-এর চাটনি। এই মেনুগুলিই ছোট থেকে পুজোর দিনে বাড়িতে হতে দেখে এসেছি, সেগুলিই চালিয়ে যাচ্ছি।' পুরনো কথা উঠে আসতেই সুরজিৎ বলেন, 'একসময় আমার ঠাকুমা এই পুজোর মধ্যমণি ছিলেন। তখন আমাদের যৌথ পরিবার ছিল, বাবার জ্যাঠতুতো-খুড়তুতো ভাইদের আসতে দেখেছি, খুব হৈ-হুল্লোড় হত।
Laxmi Puja 2022, শুভঙ্কর চক্রবর্তী : দু'বছর কোভিড পরিয়ড পার করে এবছর সাড়ম্বরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করছে বাঙালি। এবার পুজোর আয়োজনে কেউই কোনও খামতি রাখতে চাননা। আম আদমি থেকে তারকা, কমবেশি সকলেই ধনদেবীর আরাধনা করছেন। প্রত্যেকবারের মতো এবারও লক্ষ্মীপুজো করছেন গায়ক সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। Zee ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরা পৌঁছে গিয়েছিল সেখানে। স্ত্রী সহ পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে বসেই পুজোর আয়োজন করতে দেখা গেল গায়ক সুরজিৎকে।
Zee ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনেই গায়কের স্ত্রী স্বীকার করে নিলেন তাঁর স্বামী সত্যিই 'লক্ষ্মীমন্ত'। এদিন পুজোর জন্য নিজের হাতেই ভোগ রান্না করেন সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। মেনুতে কী? প্রশ্ন করতেই তিনি জানালেন 'আমাদের বাঙাল বাড়ির পুজো নিরামিষ কোনওদিনই হয় না। ছোটথেকেই সেটা দেখিনি। পুজোর দিন মানেই দুপুরবেলায় ইলিশ মাছ। আজও সেটা হয়েছে। রাতের জন্য ভুনা খিচুরি, লাবড়ার তরকারি, পায়েস, লুচি, জলপাই-এর চাটনি। এই মেনুগুলিই ছোট থেকে পুজোর দিনে বাড়িতে হতে দেখে এসেছি, সেগুলিই চালিয়ে যাচ্ছি।' পুরনো কথা উঠে আসতেই সুরজিৎ বলেন, 'একসময় আমার ঠাকুমা এই পুজোর মধ্যমণি ছিলেন। তখন আমাদের যৌথ পরিবার ছিল, বাবার জ্যাঠতুতো-খুড়তুতো ভাইদের আসতে দেখেছি, খুব হৈ-হুল্লোড় হত। পুজোর পর দুপুরে তাসখেলা, তারপর ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা, ঝগড়া সবই হত। ঠাকুমা এসে থামাতেন। সন্ধেবেলা গানবাজনার আসর, আমি তখন তবলাবাদক। আমার সেজকাকিমা গান করতেন, বড় পিসির ছেলে এসে সিনেমার ডায়ালগ বলত, এইসবই চলত তখন। সেইদিনগুলো বড়ই সুন্দর ছিল।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, 'এই যে পুজোর দিনে সকলে একত্রিত হওয়া, সেটাই আমার ভালোলাগার জায়গা। আত্মীয়রা আসেন আমার ব্যান্ডের ছেলেরা আছেন। আর সন্ধেবেলা আরও কিছু বন্ধুরা আসবেন।' লক্ষ্মীপুজোর দিনে সকলের জন্য গান শোনাতেও ভুললেন না গায়ক।
আরও পড়ুন-'প্রতিবাদী মুখ ভেবেছিলাম, আপনিও চটিচাটা!' স্বস্তিকা বললেন...
এদিন পুজোর দিনে পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে পড়েন সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, শনিবার ৮ অক্টোবর ভোররাত ৩টে ২৯ মিনিটে পূর্ণিমা পড়ছে, ৯ অক্টোবর রাত ২টো ২৫ মিনিটে ছাড়ছে। মনে করা হয়, এই লক্ষ্মীপুজোয় যে বাড়ির লোকজন রাত জাগেন সেই বাড়িতে লক্ষ্মীদেবী প্রবেশ করেন। যাঁরা রাত পর্যন্ত জেগে আরাধনা করেন, তাঁদের বিশেষ আশীর্বাদ করেন মা লক্ষ্মী। বলা হয়, লক্ষ্মীর আসার সময় যে বাড়ির গৃহস্থরা ঘুমিয়ে থাকেন, সেই বাড়ি থেকে মুখ ফেরান দেবী। বিশ্বাস হল, এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে মা লক্ষ্মী তাঁর বাহন পেঁচার পিঠে বসে পৃথিবী দর্শন করেন। বিশ্বাস করা হয়, এদিন চাঁদের আলোর বিশেষ নিরাময় ক্ষমতা আছে। এদিনের জ্যোৎস্না মনের শান্তির জন্য খুবই উপকারী। অনেকেই এই শারদ পূর্ণিমায় চাঁদের পুজো করেন, বাড়ির ছাদে পায়েস রাখেন। এদিন চাঁদের পুজো করলে ঘরে অর্থ-সমৃদ্ধি ও খাদ্যের কোনও অভাব ঘটে না।
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, শারদ পূর্ণিমার দিনে সাগর মন্থন হয়েছিল। এদিনই দেবী লক্ষ্মী সাগর থেকে উঠেছিলেন। সেই বিশেষ কারণেই এই দিনে লক্ষ্মীপুজো অতি বিশিষ্ট। শ্রী সম্পদ ও বৈভবের প্রার্থনায় এই তিথিতে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। কোজাগরী তিথি লক্ষ্মী-আরাধনার তিথি হিসেবে খুবই উৎকৃষ্ট। ভক্তের প্রার্থনায় এদিন সাড়া দেন মা লক্ষ্মী।