১৩ ও ১৪ জুন ঠিক কী কী হয়েছিল প্রকাশ্যে সুশান্তের কর্মী নীরজের বয়ান
মুম্বই পুলিসকে দেওয়া নীরজের ৩ পাতার লম্বা বয়ান উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্য ক্রমাগত জটিল হয়ে উঠছে। সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে সুশান্তের বাড়ির কর্মী নীরজের বয়ান। মুম্বই পুলিসকে দেওয়া নীরজের ৩ পাতার লম্বা বয়ান উঠে এসেছে 'ইন্ডিয়া টুডে'-র প্রতিবেদনে।
১৩ ও ১৪ জুন ঠিক কী কী ঘটেছিল? নীরজের দেওয়া বয়ানে ''১৩ তারিখ সুশান্ত স্যার সকাল ৭টায় উঠেছিলেন। আমি কুকরকে নিয়ে একটু বের হলাম। ৯টার সময় ফিরে এসে দেখি স্যার ঘরে বসে রয়েছেন। আমি ঘর পরিষ্কার করলাম। তারপর স্যারের মধ্যাহ্নভোজের জন্য খিচুড়ি রান্না করি। বিকেলের দিকে ঘর থেকে বের হয়ে স্যার টেরেস গেলেন। রাতে কিছু খাননি ম্যাঙ্গো সেক খেয়ে শুতে চলে গেলেন।''
আরও পড়ুন-CBI এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বড় তথ্য সামনে আনলেন সুশান্তের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তাররা
নীরজ জানান, ''১৪ জুন সকল সাড়ে ৬টায় আমি উঠি এবং কুকুরকে হাঁটাতে নিয়ে যাই। ৮টার সময় ফিরে আসি এবং উপরে স্যারের ঘর পরিষ্কার করতে যাই। তারপর স্যার ঠাণ্ডা জল চেয়েছিলেন আমার কাছে। জল খেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন হলঘর কি পরিষ্কার, তারপর হেসে চলে গেলেন। আমি যখন হল পরিষ্কার করছি, দেখলাম কেশব স্যারের জন্য কলা, জুস, ডাবের জল নিয়ে গেলেন। তারপর সাড়ে ১০টার সময় কেশব আবারও স্যারের ঘরে গেলেন দুপুরে কী খাবেন তা জানার জন্য, তবে কোনও সাড়া না পেয়ে, ভিতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে নীচে নেমে আসে। কেশব এই কথাটা সিদ্ধার্থ ও দীপেশকে জানায়। তাঁরা স্যারের ঘরে গিয়ে ডাকতে শুরু করলেন। কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। আমিও গিয়ে ডাকলাম দরজা খোলেননি। সিদ্ধার্থ স্যার ফোন করতে লাগলেন, ফোন কেউ তোলেনি। আমি ঘরের চাবি খুঁজতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু পাইনি। মীতু দিদিকে ফোন করলে দরজা খোলাতে বলেছিলেন, বললেন তিনি রাস্তাতেই আছেন, আসছেন। তারপর সিদ্ধার্থ স্যার চাবিওয়ালাকে ফোন করলেন।''
আরও পড়ুন-১৩ তারিখ রাত সাড়ে ১০টায় সমস্ত আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, বিস্ফোরক সুশান্তের প্রতিবেশী
নীরজের কথায়, ''বেলা ১.৩০ নাগাদ দুটো চাবিওয়ালা আসেন এবং দরজা খোলার চেষ্টা করেন, সময় লাগছিল তাই ভেঙে ফেলতে বলা হল। চেষ্টা করেন, চাবি ভাঙা হলে তাঁদের চলে যেতে বলা হয়, দীপেশ ওদের ২০০০ টাকা দিয়ে দেয়। এরপর দীপেশ উপরে এলে আমরা দরজা খুললাম, ঘর অন্ধকার ছিল, এসি চলছিল। দীপেশ আলো জ্বালতেই সিদ্ধার্থ ঘরের দিকে এগিয়ে দ্রুত বাইরে বের হয়ে এল। স্যারের মুখ জানালার দিকে ছিল, দেখলাম সবুজ রঙের কুর্তা গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন। আমি ভয় পেয়ে বাইরে বের হয়ে এলাম। সিদ্ধার্থ মীতুদিকে ফোন করলেন। সিদ্ধার্থ কাপড় কাটতে ছুড়ি দিতে বললেন। কাপড় কেটে দেহ নিচে নামানো হল। স্যারের দেহ বিছানার রাখা ছিল পা দুটো বাইরের দিকে। মীতু দিদি ঘরে ঢুকে গুলশনে তুমি এ কী করলে বলে চিৎকার করতে লাগলেন। মীতু দি আমায় স্যারের দেহ ঠিক করে রাখতে বললেন। আমরা তিনজন মিলে সোজা করে শোওয়ালাম। পা অবশ্য বিছানার মাথার দিকে ছিল। আমি গলার ফাঁস খুললাম। সিদ্ধার্থ স্যারের বুকে চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র চালু করার চেষ্টা করলেন, কোনও লাভ হয়নি। তারপর পুলিসে ফোন করলেন সিদ্ধার্থ। যে কুর্তা দিয়ে স্যার ফাঁস লাগিয়েছিলেন, ওইরকম ৩-৪টে কুর্তা স্যারের ছিল, সাধারণত, পুজোর সময় পড়েন উনি।''
আরও পড়ুন-সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে পৌঁছেছে ফরেন্সিক টিম ও CBI, চলছে তদন্ত