আনন্দে বাঁচার জন্য ঠিক কী করতে চেয়েছিলেন? IIT বোম্বেতে গিয়ে বলেছিলেন সুশান্ত

নিজের সম্পর্কে নানান তথ্য আই আই টি-র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শেয়ার করতে দেখা যায় হাসিখুশি সুশান্তকে।

Edited By: রণিতা গোস্বামী | Updated By: Jun 20, 2020, 06:05 PM IST
আনন্দে বাঁচার জন্য ঠিক কী করতে চেয়েছিলেন?  IIT বোম্বেতে গিয়ে বলেছিলেন সুশান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদন: সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর তাঁর বিভিন্ন পুরনো ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে উঠে আসছে। ২০১৬ সালে আই আই টি বোম্বে-র একটি অনুষ্ঠানে কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন সুশান্ত। সেই ভিডিয়োটিও উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। যেখানে নিজের সম্পর্কে নানান তথ্য আই আই টি-র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শেয়ার করতে দেখা যায় হাসিখুশি সুশান্তকে।

সুশান্তকে বলতে শোনা যায়, ''আমি ছোট থেকেই ভীষণই অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিলাম। পরিবারে সবথেকে ছোট হওয়ার দৌলতে ভীষণই আদর পেয়েছি। তাই ছোট থেকে বাইরে বের হয়ে কীভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলব, বুঝতে পারতাম না। তাই খুব লজ্জা পেতাম, কথাই বলতে পারতাম না লোকজনের সঙ্গে। যদিও আমি এখনও ভালো কথা বলতে পারি না। বিশেষ করে স্টেজে কথা বলতে তো একদমই পারি না। কিন্তু যখন আমি অভিনয়ে এলাম, তখন আমি বিভিন্ন চরিত্রের মাঝে নিজেকে লুকিয়ে রাখি। যে যে চরিত্রগুলির মধ্যে দিয়েই আমি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। যদিও এই মুহূর্তে আমি একেবারই অভিনয় করছি না। তাই সবকিছু গণ্ডোগোল করে ফেলতে পারি। তাই আমার যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, তার জন্য আগে থেকেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছিলাম, তবে পড়া শেষ না করেই বলিউডে চলে আসি। তাই আজ যখন এখানে আসছিলাম, ভাবছিলাম, কী বলব?''

আরও পড়ুন-শ্রীলেখা মিত্রের স্বজনপোষণের অভিযোগ, মুখ খুললেন স্বস্তিকা!

এখানেই শেষ নয়, সুশান্তকে বলতে শোনা যায়, ''অর্থ আর পরিচিতিই সব সুখ দেয়, এই কথাটা বড় একটা মিথ্যা। আমি নিজেই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা একজন ছেলে। যখন আমি বড় হয়ে উঠছিলাম, অর্থের একটা বড় ভূমিকা ছিল। আর তাছাড়া আমার পরিবারের তিন প্রজন্ম জানে না পরিচিতি, খ্যাতি বিষয়টা কী? যেটা আমি এখন জেনেছি। তাই আমি শুরুটা যখন করেছিলাম, তখন কিছুই ছিল না। আমি পরিবার বলেছিল, আমাকে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। আর মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা করবে আমার দিদিরা। আমাকে বলা হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হলে সিভিল সার্ভিস দেবে, আর তখন থেকেই জীবনে সব সুখের রাস্তা খুলে যাবে। সেভাবেই শুরুটাও করেছিলাম, প্রচুর কোচিং, পড়াশোনা করি, শেষপর্যন্ত একাধিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সুযোগ পাই। শেষপর্যন্ত দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তিও হয়ে যাই। ভাবছিলাম, আমি বোধহয় সাফল্যের খুব কাছাকাছি আছি। কিন্তু কোথাও গিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। কোথাও গিয়ে আমি ঠিক সুখী ছিলাম, না, আমি আরও অন্যকিছু চাইছিলাম। এসবের মাঝে সিভিল সার্ভিসের জন্যও তৈরি হচ্ছিল, কিন্তু ঠিক ভালো লাগছিল না। তখন ভালো লাগানোর জন্য থিয়েটার করতে শুরু করি, নাচের ক্লাসে ভর্তি হই। এটা কিছুটা লজ্জা কাটানোর জন্যও করেছিলাম। এই থিয়েটার ও নাচ করতে আমার বেশ ভালো লাগতে শুরু করে। তখনই আমি সিনেমায় আসার কথা ভাবি। আর ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার মাত্র দুটো সেমিস্টার যখন বাকি, আর ছেড়ে দি।''

এছাড়াও অভিনয় জীবনের শুরু, পরিচিতি পাওয়ার শুরু থেকে আরও নানান কথা শেয়ার করেন সুশান্ত। যেখানে তিনি বলেছেন, ''ছোটবেলায় পড়াশোনার পর ৪ থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খেলার সুযোগ পেতাম, ওই সময়টা কখন আসবে আমি অপেক্ষা করে থাকতাম, এখন আমি অনেকটা সময়ের জন্য ও ৪ থেকে সাড়ে ৫টার সময়ে ফিরে যেতে পারি। এখন মাঝে মাঝে আমার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রফেসাররা ফোন করেন, কলেজের স্টুডেন্টদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। আমি মজা করে জিজ্ঞাসা করি, তাহলে কি আমার ডিগ্রিটা ফিরিয়ে দেবেন? ''

আরও পড়ুন-ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল ডিলিট করে দিলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের দিদি শ্বেতা?

তবে শুধু আইআইটি বোম্বেতেই নয়, মুম্বইয়ের শৈলেশ জে মেহতা স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট-এর একটি অনুষ্ঠানেও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সুশান্ত সিং রাজপুতের একটি কথোপকথন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

.