খেলা দেখলে ওয়ার্ল্ড কাপ দেখব, TMC-র খেলা কেন দেখব?: Parno Mitra
বরানগরের মত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন পার্নো মিত্র (Parno Mitra)। বিপক্ষে, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তাপস রায়, দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রে এবার বিজেপির প্রার্থী অভিনেত্রী পার্নো মিত্র (Parno Mitra)। ২০১৯ -এ টলিউডের একঝাঁক শিল্পী দিল্লিতে গিয়ে BJP-তে যোগদান করেন। তার মধ্যে অন্যতম মুখ ছিলেন পার্নো। বৃহস্পতিবার, পঞ্চম ও ষষ্ঠ দফার ভোটের বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়। তাতে দেখা যায়, বরানগরের মত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন পার্নো মিত্র। বিপক্ষে, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তাপস রায়, দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ।
বরানগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তাপস রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন পার্নো মিত্র। পার্নো, আপনার কাছে এটা কতটা কঠিন?
পার্নো মিত্র: নিশ্চই কঠিন হবে। কিন্তু যেখান থেকেই দাঁড়াতাম সেটাই কঠিন হতো। ইনফ্যাক্ট আমরা যাঁরা নতুন রাজনীতিতে এসেছি, আমাদের প্রত্যেকের কাছে সব আসনই কঠিন। কারণ এটা আমাদের প্রথমবার, তাই ওটা ভেবে ভয় পেয়ে লাভ নেই। আর পার্টির নেতারা যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং আমায় যোগ্য মনে করেছেন এই আসনের জন্য, নিশ্চয়ই কিছু একটা ভেবে করেছেন। সেটাই একটু সাহস দিচ্ছে। তাছাড়া আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি জানি, সবাই একথা বলছে। কিন্তু আমি সত্যিই থাকতে চাই। বরানগরের মানুষদের ব্যক্তিগতভাবে চিনতে চাই। আমি ২০০ শতাংশ দিয়ে কাজ করব। আমি ভোট তো ছিনিয়ে নিতে পারব না, শুধু ভালাবাসা দিয়ে মানুষকে কাছে টানব।
বরানগরের সঙ্গে কোনও যোগসূত্র আছে?
পার্নো মিত্র: না সেইভাবে নেই। ছোটবেলায় প্রচুরবার যাতায়াত হয়েছে, আমার বাবার মামাবাড়ি ছিল সিঁথিতে। কিন্তু তারপরে আর খুব একটা যোগাযোগ নেই, তবে মানুষ চিনতে আর কতক্ষণ? আমরা তো বাংলারই মেয়ে, ঠিক চিনে যাব।
হঠাত্ করে গিয়ে একটা জায়গা চেনা, সেই জায়গাটার সুবিধা-অসুবিধা জানা এবং ভোটে মানুষের কাছে কোন কোন ইস্যু নিয়ে যাবেন?
পার্নো মিত্র: প্রথমত বরানগরের মানুষের সঙ্গে বসে আমায় সমস্যাগুলো জানতে হবে। কী কী অসুবিধে রয়েছে সেটা দেখতে হবে। বাকি ইস্যু বলতে আমরা তো সবাই জানি। দশ বছর ধরে পরিবর্তনের আশা দিয়ে তা হয় নি। এখন আবার স্লোগান বদলে গেছে, বলছে খেলা হবে। আমরা তো খেলা দেখতে চাই না। খেলা দেখতে হলে ওয়ার্ল্ড কাপ দেখব, ভারতের খেলা দেখব, বিরাট কোহলিকে দেখব। ভোটের খেলা কেন দেখব? আমার মনে হয়, এটা উন্নয়নের সময়। আসল পরিবর্তন আসার সময় এসে গেছে, সেটাতেই মন দিতে হবে। আমি জানি যে, আমি বরানগরের মানুষের পাশে দাঁড়াব, যখনই তাঁদের প্রয়োজন হবে আমি থাকব।
পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে যে রূপোলি পর্দার তারকারা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, জিতে আসার পর তাঁদের আর এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। আপনি কতটা নিশ্চিত আপনি ব্যাতিক্রমী হবেন?
পার্নো মিত্র: দায়িত্ব নিয়েছি যখন, মাঠে নেমে পড়েছি। আমি যা করি, নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে করি। অভিনয়টাও মন দিয়ে করেছি। জিততে পারলে আমি সুখে দুঃখে সবসময় এই এলাকার মানুষের পাশে থাকব। এরমধ্যেই পরিকল্পনা করছি, এবার থেকে বরানগরেই থাকব।
অভিযোগ উঠছে, ২০১৯ এ আপনি যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু আপনাকে সক্রিয়ভাবে দেখা যায় নি, যেভাবে বিজেপির মহিলা মোর্চা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, আপনি ছিলেন না..
পার্নো মিত্র : আমায় যখন যেখানে ডাকা হয়েছে আমি গিয়েছি। তবে আমি নিজেকে সেইভাবে প্রচার করতে পারি না। আমি লকডাউনেও নিজের উদ্যোগে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে খাবার বিতরণ করেছি। আমপানের পর সুন্দরবন গিয়েছি, ত্রাণ পৌঁছেছি। নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল, প্ল্যানিংয়ে ছিলাম। আমি তখন ধারাবাহিকেও ব্যস্ত ছিলাম...
তাহলে আগামী দিনে কীভাবে ম্যানেজ করবেন?
পার্নো মিত্র: আমি তো বলছি, এটা যেহেতু একটা নতুন পদক্ষেপ, তাই আপাতত এটাকেই মন দিয়ে করতে চাই। ছবি ঠিক আছে দেখা যাবে, তবে এটাই এখন আমার প্রায়োরিটি। মানুষ বিশ্বাস করে ভোট দেওয়ার পর আমি জিতলে সবাই আশা করবে আমি তাঁদের সঙ্গে থেকে কাজ করব। আমি তাঁদের দুঃখ দিতে চাই না। আমি তাঁদের মত হতে চাই না, যাদের ভোটে জেতার পর টিকি খুঁজে পাওয়া যায় না। আমিও তো একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে। আমিও ভোট দিয়েছি, প্রয়োজনে নেতাদের পাশে পাই নি। সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, অসুবিধে হয়েছে। তাই আমি সেই অভিযোগ শুনতে চাই না। আমি সুখে, দুঃখে, আনন্দে বরানগরের মানুষের পাশে থাকতে চাই, আর আমি তা করব।