X= Prem Review : এক্স=প্রেম দেখে আবারও প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করছে ঊষসীর

 Zee ২৪ ঘণ্টার জন্য ফিল্ম রিভিউ লিখলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী

Edited By: রণিতা গোস্বামী | Updated By: Jun 12, 2022, 04:46 PM IST
X= Prem Review : এক্স=প্রেম দেখে আবারও প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করছে ঊষসীর

সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherji) পরিচালিত অন্যান্য ছবির মতোই তাঁর 'এক্স = প্রেম' (X= Prem) শুরু থেকেই আলোচনায়। অবশেষে ৩ জুন, শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে সৃজিতের এই ছবি। প্রিমিয়ারে ছবি দেখতে গিয়েছিলেন টলিপাড়ার বহু তারকা। কিন্তু কেমন হয়েছে সেই ছবি? ছবি দেখে এসে Zee ২৪ ঘণ্টার জন্য ফিল্ম রিভিউ লিখলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী (Usashi Chakraborty)।      

ঊষসী চক্রবর্তী

সৃজিতের ছবি 'এক্স = প্রেম' দেখে প্রথম কথা যেটা বলব, ছবি দেখে আবারও প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করছে। এটাকে কলেজ লাভ স্টোরি বলা হচ্ছে। তবে আমরা যাঁরা বহুকাল কলেজ পার করে এসেছি, তাঁদের আরও একবার কলেজ জীবন, কলেজ প্রেমের সময়ে ফিরে যেতে ইচ্ছে করবে। নস্টালজিয়ায় ভরপুর একটা ছবি। গোটা ছবিটা একটা ছোট্ট সফর বলা চলে। যাঁদের মনে হবে, আমাদের জীবনে হয়ত প্রেমটা শেষ হয়ে গেল, এটা আর হবে না। তাঁদের মধ্যেও এই ছবি কোথাও একটা আশা তৈরি করে দেবে, যে না এখনও কোথাও একটা প্রেম বেঁচে আছে। প্রেমটা কোনও হ্যাবিট (অভ্যাস) নয়। এই জায়গাটা আমার খুব ভালো লেগেছে। সম্পর্ক আর হ্যাবিট (অভ্যাস) যদি একই হত, তাহলে লোকে I Love you নয়, বলত I Habit you। ছবির এই ডায়ালগটা আমার খুব ভালো লেগেছে। প্রেমের প্রতি যে একটা ভরসা তৈরি করা, এইটা কিন্তু সৃজিত এই ছবির মধ্যে দিয়ে করে দিয়েছে। এটা হল প্রথম কথা। দ্বিতীয় কথা যেটা বলব, ছবিটা ভীষণ সৎ, এটার মধ্যে কোনও Pretension নেই। আমার সৃজিতকে ভীষণ জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করছে এই ছবির অনুপ্রেরণা কে? মিথিলা নাকি পুরনো কোনও প্রেমিকা? আমার বিশ্বাস,পরিচালক নিশ্চয় কাউকে না কাউকে ভেবে চিত্রনাট্য লিখেছেন। এটা ভীষণই একটা ব্যক্তিগত ছবি বলে আমার মনে হয়েছে। সেই ব্যক্তিগত বিষয়টা কোথাও  সমষ্টিতে উর্ত্তীণ হয়ে দর্শককে ছুঁয়ে গিয়েছে। সৃজিতের এই ছবির অনুপ্রেরণা যেই হোন না কেন, আমার ধারণা সেটা কোনও গর্জাস একটা প্রেম ছিল। 

আরও পড়ুন-Habji Gabji Film Review : হাতের মোবাইলটা ভাবিয়ে তুলল

এই ছবিতে বড় একটা সম্পদ মিউজিক। নবাগত সঙ্গীত পরিচালক সানাই সপ্তক দাস কিন্তু পুরো আসন দখল করে ফেলেছেন। সানাই নিজেও গান গেয়েছেন ছবিতে। ছবির গীতিকার ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী। আমরা বলতে পারি, ফিল্ম ইন্ডাস্টি একজন নতুন সুরকার, গীতিকার এবং গায়ককে পেল। ছবিতে সানাই-এর বোন অনুষ্কার গাওয়া গানটিও বেশ ভালো লেগেছে। ছবির দ্বিতীয় সম্পদ হল নায়ক-নায়িকা অর্থাৎ অনিন্দ্য সেনগুপ্ত এবং শ্রুতি দাস। এই যে আমি বলছি, ছবিটা দেখে আবারও প্রেম করতে ইচ্ছে করছে, সেটা ওদের রসায়নটার জন্যই। ছবিটা প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত অনুভূতি থেকে বানানো বলে মনে হয়েছে। দেবপ্রিয়ার চরিত্রে অরিজিতা মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় সত্যিই অসাধারণ। আমি বিশ্বাস করি, একজন ভালো অভিনেতার জন্য বড় চরিত্র লাগে না। দেবপ্রিয়ার চরিত্রটি ছোট হলেও অরিজিতা যতক্ষণ পর্দায় ছিল কারোর দিকে তাকাতে দেননি। অর্জুন চক্রবর্তীর অভিনয় সত্যিই প্রশংসনীয়, তবে ওর কাছে ভালো অভিনয় প্রত্যাশিতই ছিল। যাঁরা নবাগত, তাঁরা এই ছবিতে চমকে দিয়েছেন, এটাই বলার। আর এটা একেবারেই সৃজিতের ঘরানার ছবি। আমি বলব, এইরকম ছবি সৃজিত আরও বানান। ছবিটার মধ্যে কোনও উচ্চকিত বিষয় নেই। তবে অন্তর্লীন, সূক্ষ, মেদহীন ঝরঝরে, আবেগঘন একটা যাত্রা আছে। 

শুক্রবার আমার একটু কাছ ছিল বলে আমি ভেবেছিলাম, এক্স =প্রেম-এর প্রথম পর্যায়টা দেখে বেরিয়ে আসব। তবে ছবিটা যে এভাবে আমায় বেঁধে ফেলবে বুঝতে পারিনি। ছবির মধ্যে প্রচণ্ডভাবে একটা ফ্যান্টাসি রয়েছে। যেটা ফ্যান্টাসি জেনেও বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করবে। আমার মনে হয় সেটা একেবারেই পরিচালকের কৃতিত্ব। আর শুভঙ্কর ভারের সিনেমাটোগ্রাফি সত্যিই প্রশংসনীয়। সাদাকালো ছবিকে যেভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে তাতে সিনেমাটোগ্রাফার এবং একইসঙ্গে ছবির সম্পদক সংলাপ ভৌমিকের প্রশংসা না করলেই নয়। একটা প্রেমের ছবিকে কেন সাদাকালোতে করেছেন? সেটা আমার সৃজিতের কাছে প্রশ্ন থাকবে। তবে যে কারণেই করে থাকুন না কেন দেখতে ভীষণই ভালো লেগেছে। সর্বাঙ্গীণ ভাবে ছবিটা আমার মধ্যে একটা অভিঘাত তৈরি করেছে। আমার মনে হয় সেটাই ভালো সিনেমার যথার্থতা।

.