মোটা মানুষদের করোনায় আক্রান্ত হওয়া ও প্রাণহানির ঝুঁকি বেশি! দাবি বিশেষজ্ঞদের
এর পিছনে কী কী কারণ রয়েছে আসুন সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞদের মতামত...
নিজস্ব প্রতিবেদন: অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতা— বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষেরই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতার কারণে শরীরে একাধিক রোগ-ব্যাধি বাসা বাঁধে। ভাবছেন, করোনা আতঙ্কের আহবে হঠাৎ আবার অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতা নিয়ে মাথা ঘামানোর কী হল! কারণ, ফরাসি গবেষকদের দাবি, অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে বহুগুণ!
সম্প্রতি ফ্রান্সের লিলি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সঙ্কটজনক করোনা রোগীদের পর্যবেক্ষণের পর ফরাসি গবেষকদের দাবি, অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতার কারণেই করোনা রোগীদের শারীরিক পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে।
হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি ১২৪ জন করোনা রোগীকে পর্যবেক্ষণের পর এই গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক ফ্রাঙ্কোসিস পাট্টাউ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮৭ শতাংশ করোনা রোগীই স্থূলতার শিকার। তিনি জানান, স্থূলতার কারণে এমনিতেই দীর্ঘস্থায়ী কিছু রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। এই কারণে তাঁদের সহজেই থাবা বসাতে পারে করোনাভাইরাস। অতিরিক্ত ওজন আর স্থূলতায় ভুগছেন যে সমস্ত ব্যক্তি, তাঁদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক কম হয়। ফলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।
ফরাসি গবেষকদের মতে, অধিকাংশ মোটা মানুষেরই ডায়াবেটিস, কিডনি, হার্ট, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আগে থেকেই থাকে। আর এই ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধির উপস্থিতিতে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সমীক্ষা বলছে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশের শরীরে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, হার্ট, ওবিসিটি, উচ্চ রক্তচাপের মতো শারীরিক সমস্যা আগে থেকেই ছিল।
আরও পড়ুন: তাড়াহুড়োয় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার চেষ্টায় ঘটতে পারে আরও বড় বিপর্যয়! সতর্ক করল WHO
এর আগে ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ নাগরিক স্থূলতার শীকার। সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকায় এ পর্যন্ত যত জন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে প্রায় ৬৪ শতাংশের বিএমআই (BMI) ২৫ থেকে ৪০। মোট আক্রান্তের ৭ শতাংশের অবস্থা সঙ্কটজনক যাঁদের বিএমআই (BMI) ৪০-এরও বেশি। মার্কিন বা ফরাসি সমীক্ষা অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের ফলে অতিরিক্ত মোটা মানুষদের প্রাণহানির ঝুঁকি বেশি। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, শরীরের বাড়তি মেদ ঝরানোর বিষয়ে নজর দিতে হবে।