কোন রোগ কমাতে কোন যোগ উপকারী! জেনে নিন...
মানসিক জড়তা ও অবসন্ন ভাব কাটাতে সাহায্য করে যোগাসন। রাগ, চঞ্চলতার মতো মনের বেশ কিছু অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব যোগাসনের মাধ্যমে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নিরোগ শরীর বজায় রাখতে নিয়মিত যোগাসন করা প্রয়োজন। শরীর ও মন— দুয়ের উপরেই যোগের প্রভাব অপরিসীম। যোগাসন মানসিক জড়তা ও অবসন্ন ভাব কাটাতে সাহায্য করে। যোগাসনের মাধ্যমে রাগ, চঞ্চলতার মতো মনের বেশ কিছু অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
শরীরচর্চার মাধ্যম হিসেবে যোগাকে বেছে নেওয়ার কারণগুলি হল:
• যোগা হল এক মাত্র প্রাকৃতিক উপায় যা শারীরিক গঠন ঠিক করে এবং গোটা শরীর জুড়ে কাজ করে।
• দৈনন্দিন ভিত্তিতে যোগব্যায়াম অনুশীলন করলে অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরতে সাহায্য করে৷
• যোগব্যায়াম যেকোনও জায়গায় এবং যেকোনও সময় করা যাতে পারে৷ এর জন্য কোনও নিদিষ্ট জায়গা বা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়না।
• নিয়মিত যোগাভ্যাস মন এবং শরীরের উপর সম্পূর্ণ সঠিক নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে যা রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে৷
আরও পড়ুন: ইনিই বিশ্বের প্রবীণতম যোগগুরু! বয়স মাত্র ৯৯!
এ বার জেনে নেওয়া যাক, কোন রোগ কমাতে কোন যোগাসন সবচেয়ে উপকারী...
১) শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা: এই জাতীয় সমস্যার মোকাবিলায় সিদ্ধাসন খুবই কার্যকরী। মেরুদণ্ড সোজা রেখে পা গুটিয়ে বসে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। এটি দেখতে অনেকটা পদ্মাসনের মতোই। সিদ্ধাসনে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় সেই সঙ্গে ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বাড়ে।
২) হজমের সমস্যা: হজমের সমস্যা কমাতে পবনমুক্তাসন বা সুপ্ত বজ্রাসন করা যেতে পারে। পবনমুক্তাসনে চিৎ হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে লাগাতে হবে। বাঁ পা তখন সোজা থাকবে। এর পরে একই ভাবে বাঁ পা ভাজ করে পেটে লাগতে হবে। ডান পা তখন সোজা থাকবে। গ্যাস, অম্বল, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমিয়ে খিদে বাড়ায়।
৩) হাঁটুর ব্যথা: হাঁটুর ব্যথা কমানোর জন্য উত্থানপদাসন করলে উপকার মিলবে। চেয়ারে বসে পা তোলা ও নামানো অর্থাৎ সিটেড লেগরাইজ বা পেলভিস ব্রিজ (চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে উপরের দিকে তোলাকে পেলভিস ব্রিজ বলা হয়) করা যেতে পারে। এতে থাইয়ের পেশি সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হয়।
আরও পড়ুন: এক নজরে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস! প্রতীক্ষা ও প্রত্যাশা...
৪) কোমরের যন্ত্রণা: কোমরের যন্ত্রণা কমাতে ভুজঙ্গাসনও করা যেতে পারে। উপুড় হয়ে শুয়ে একটা পা উপরে তুলে একপদ সলভাসন বা পবনমুক্তাসন করলেও ভাল ফল পাওয়া যাবে।
৫) ঘাড়ের যন্ত্রণা: ঘাড়ের যন্ত্রণার জন্য আইসোমেট্রিক প্রেসার অভ্যাস করলে ফল মিলবে। দু’হাত মাথার পিছনে নিয়ে মাথাকে হাত দিয়ে ঘাড় সোজা করে চাপ দিতে হবে। এ ভাবে মাথাকে চার দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চাপ দিতে হবে। চিৎ হয়ে শুয়ে (ভুজঙ্গাসন) থেকে চিবুকে হাত দিয়ে চাপ দিলেও ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে।
৬) পেট ও নিতম্বের চর্বি কমাতে: পেট ও নিতম্বের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে অর্ধকূর্মাসন খুবই কার্যকরী। মাটিতে বজ্রাসনে বসুন। এইবার হাত দুটি সোজা করে মাথার ওপরে তুলে নমস্কারের ভঙ্গিতে জড়ো করুন। পেট ও বুক যেন ঊরুর সঙ্গে লেগে থাকে। এই অবস্থায় মনেমনে কুড়ি পর্যন্ত গুনুন। ধীরে ধীরে সোজা হয়ে বসে শবাসনে বিশ্রাম নিন।