Exclusive Abhishek: ডায়মন্ড মডেল সফল হলে পিসি মডেল ফ্লপ! বিরোধীদের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিলেন অভিষেক
একসময় ময়দান কাঁপিয়েছিল ফুটবল কোচ অমল দত্তের ডায়মন্ড সিস্টেম(Diamond System)। ডায়মন্ডহারবারেও বিপুলভাবে সফল করোনা নিয়ন্ত্রণে ডায়মন্ড মডেল
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনার তৃতীয় ঢেউ সামাল দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড মডেল-এর প্রশংসা হয়েছে গোটা রাজ্যেই। ট্রেস-টেস্ট-ট্রিট মডেলে কাজে করে দ্রুত পজিটিভিটি রেট কমেছিল ডায়মন্ডহারবারে। এই পদক্ষেপের সুনাম করেছে চিকিত্সক মহলও। এনিয়েও আবার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। জি ২৪ ঘণ্টায় এক একান্ত সাক্ষাতকারে বিরোধীদের কড়া জবাব দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
ডায়মন্ড মডেল(Diamond Model) নিয়ে নিন্দুকদের বক্তব্য, ডায়মন্ড মডেল যদি সফল হয় তাহলে ধরে নিতে হবে রাজ্য সরকারের মডেল ফ্লপ। এখানে পিসি মডেল বনাম ভাইপো মডেলের থিওরি সামনে আনা হচ্ছে। এনিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, কিছু লোক তো এমনটা বলবেই। কেউ যদি আক্রমণ করতে চায় তাহলে এভাবেই বলবে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির কাছ থেকে আর কী আশা করতে পারেন! ভদ্র ভাষায় তো ওরা কথা বলে না। কিন্তু আমি মনে করি ডায়মন্ড মডেলের আগে বা পরে যথেষ্ট তত্পরতার সঙ্গে কাজ করেছে রাজ্য সরকার। তবে যেটা ডায়মন্ডহারবারে আমরা ৭ দিনে করতে পেরেছি তা কলকাতায় হয়তো ১৫ দিন সময় লেগেছে। আমরা বলেছিলাম ডায়মন্ডহারবারে একদিনে ৩০ হাজার টেস্ট করব। আমরা পরীক্ষা করেছিলাম সেল্ফ টেস্ট কিট(Self Test Kit) দিয়ে। সিপিএম ওই টেস্ট কিট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমি চ্য়ালেঞ্জ করছি ওরা একটা পিআইএল করুক। বুঝে যাবে আমি সরকারের কাছ থেকে কটা কিট নিয়েছি, আর কটা কিট আমি কিনেছি। আমরা ৩০ হাজার সেল্ফ টেস্টিং কিট কিনেছি। কেন আমরা সেল্ফ টেস্টিং কিট ব্যহার করলাম? কারণ আরটিপিসিআর টেস্টে ফল আসতে সময় বেশি লাগে। সেল্ফ টেস্টিং কিটে সুবিধে হল ১০ মিনিটেই বুঝতে পারব যে আমি পজিটিভ নাকি নেগেটিভ। তাই পজিটিভ হলে জানতে জানতেই ২০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারি আমি। এটাই আমাদের ডায়মান্ডহারবারের করোনা সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করেছে। যারা পজিটিভ হয়েছে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। নেগেটিভ হলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একসময় ময়দান কাঁপিয়েছিল ফুটবল কোচ অমল দত্তের ডায়মন্ড সিস্টেম(Diamond System)। ডায়মন্ডহারবারেও বিপুলভাবে সফল করোনা নিয়ন্ত্রণে ডায়মন্ড মডেল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়(Abhishek Banerjee) এনিয়ে বলেন, ডায়মন্ড মডেল কথাটা মিডিয়ার তৈরি। এটা আমি কোথাও বলিনি। মিডিয়ায় যাকে ডায়মন্ড মডেল বলা হচ্ছে সেটা ডায়মন্ড হারবারের ২০ লাখ মানুষের প্রতি সাংসদ হিসেবে আমার ও প্রশাসনের দায়বদ্ধতা। যখন করোনার প্রথম ঢেউ এল তখন, সবেমাত্র কেস ধরা পড়ছে। লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়া হল। সেইসময় আমি ২১টা কমিউনিটি কিচেন খুলে কল্পতরু বলে একটি প্রকল্প চালু করেছিলাম। সেখানে রোজ ৩ লাখ মানুষকে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। এই ব্যবস্থা টানা ১৫ দিন চলেছে। তখন তো কেউ একে ডায়মন্ড মডেল বলেনি। আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তাই ডায়মন্ড মডেল বলছে। কোভিড সংক্রমণ যখন বাড়ছে তখন একজন সাংসদ হিসেবে আমি একটা চেষ্টা করেছি। এক্সপার্টদের মতামত নিয়েছি, আমার যা করনীয় তা চেষ্টা করেছি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হল মানুষ সজাগ ছিল। মানুষ সহযোগিতা করেছে। আমরা যদি প্রশাসনের সঙ্গে সহায়তা না করি তাহলে কোনও কিছু চালু করা যায় না। ডায়মন্ডহারবারের মানুষকে ধন্যবাদ। যখন বলেছি, ডবল মাস্ক পরে বাজারে বের হোন। সেটাই করেছেন তাঁরা। বিয়েবাড়ি থেকে সভাসমিতি, কোনও কিছুই তারা করেননি।
আরও পড়ুন-রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা প্রয়োজন, ' নিয়ম বদলের সুর' অভিষেকের গলায়!
করোনা মোকাবিলায় গত ৯ জানুয়ারি একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয় ডায়মন্ডহারবারে। এদিকে, অভিযোগ উঠছে মাসের একেবারে প্রথমে ডায়মন্ডহারবারে এমপি কাপের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছে। কেন এরকম ঝুঁকি নেওয়া হল? অভিষেক বলেন, এমপি কাপ হয়েছে পয়লা জানুয়ারি। দেখে নিন ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি পজিটিভিটি রেট কী ছিল। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে ২-৩ তারিখের পরে। তারপর ৮ জানুয়ারি প্রশাসনিক বৈঠক করি। কিন্তু যদি জানতাম সংক্রমণ এভাবে বাড়বে তাহলে এরকম করতাম না। তখন তো সবকিছুর অনুমতি ছিল। ২ জানুয়ারি থেকে করোনা বিধিনিষেধ ইস্যু করা হয়েছে। তার পর থেকে সব বন্ধ। দেখুন, আমি এমপি কাপ করেছি। আর নরেন্দ্র মোদী ত্রিপুরায় ৫০ হাজার লোক নিয়ে মিটিং করেছেন। তখন দেশে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে। এনিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারবেন নরেন্দ্র মোদীকে? ১১ তারিখের পরে পজিটিভিট রেট ৭ শতাংশের কমে নেমে এসেছিল ডায়মন্ডহারবারে।