অবসরকালীন প্রাপ্য আটকে ৩ বছর, বিচারপতি নির্দেশ দিতেই শিক্ষিকার অ্যাকাউন্টে ঢুকল টাকা!
২০২০ সালে অবসর নেন শিক্ষিকা।অবসর সংক্রান্ত পাওনা-গন্ডা মেটানোর জন্য ২০১৯ সালে জমা পড়ে আবেদন। সরকারি কর্মীর গড়িমসিতে প্রায় দেড় লাখ টাকা বকেয়া ছিল তাঁর। ক্ষুব্ধ বিচারপতি কড়া নির্দেশ দেন, তিনি শ্মশান বাদ দিয়ে যেখানেই থাকুক, তাঁকে আদালতে হাজির করানো হোক।
রণয় তিওয়ারি: সরকারি কাজে দেরি। প্রাপ্য টাকা ৩ বছর আটকে। জানতে পেরেই কড়া নির্দেশ বিচারপতির। আর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়েই তড়িঘড়ি টাকা ঢুকল শিক্ষিকার অ্যাকাউন্টে। একইসঙ্গে কড়া ধমক দিলেন কলকাতার ডিআই-কে। নির্দেশ দিলেন,'শ্মশান বাদ দিয়ে যেখানেই থাকুক, ওই সরকারি কর্মচারীকে আদালতে হাজির করুন।' জানা গিয়েছে, গ্রামোন্নয়ন দফতরের মহাদেব সরেনের কাছে আটকে ছিল টাকা।
বঞ্চিতা ওই শিক্ষিকার নাম আশা শ্রীবাস্তব। ২০২০ সালে অবসর নেন তিনি। তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল ১ অক্টোবর, ২০২০। অভিযোগ, অবসর সংক্রান্ত পাওনা-গন্ডা মেটানোর জন্য ২০১৯ সালে জমা পড়ে আবেদন। প্রায় দেড় লাখ টাকা বকেয়া ছিল তাঁর। কিন্তু সেই টাকা-ই এতদিন ধরে আটকে ছিল। ঘটনার কথা জানতে পেরে সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডিআই-কে ডেকে পাঠান। এরপরই এদিনে ডিআই আদালতে এসে জানান যে শিক্ষিকা টাকা পেয়েছেন। কিন্তু কেন ওই শিক্ষিকার প্রাপ্য টাকা পেতে দেরি হল? জানতে চান ক্ষুব্ধ বিচারপতির। তারপরই কড়া নির্দেশ দেন, যে সরকারি কর্মচারীর জন্য টাকা আটকে ছিল, তিনি শ্মশান বাদ দিয়ে যেখানেই থাকুক, তাঁকে আদালতে হাজির করানো হোক।
প্রসঙ্গত এর আগেও দীর্ঘ ৩৬ বছরের লড়াইয়ের পর ৭৬ বছরের বৃদ্ধা শিক্ষিকাকে তাঁর প্রাপ্য দ্রুত পেতে কড়া নির্দেশ দেন বিচারপতি। ৭৬ বছরের ওই বৃদ্ধা শিক্ষিকাকে এরিয়ার সহ ২৫ বছরের বেতন দ্রুত মেটানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় তখন বলেছিলেন, "আমার ঘরে আসা বৃদ্ধ নাগরিককে খালি হাতে ফেরাতে পারি না।" ২০১৩ সাল থেকে ১০ শতাংশ হারে সুদ সহ টাকা জমা দিতে নির্দেশ দেন। ৮ সপ্তাহের মধ্যে পাওনা মেটাতে স্কুল এডুকেশন কমিশনকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন,
বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চাকা গড়াবে খুব শিগগিরই, হাই-স্পিড এই ট্রেনের রুট কী হবে?
১৯৭৬ সালে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে হাওড়ার শ্যামপুর হাইস্কুলে যোগদান করেছিলেন শ্যামলী ঘোষ। সমস্যা শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সাল থেকে। মাত্র ৪ বছর শিক্ষকতা করার পরই স্কুলের হেডমাস্টার তাঁকে আর আসতে হবে না বলে দেন। অভিযোগ, স্কুলে গেলেও তাঁকে লোক দিয়ে বের করে দিতেন হেডমাস্টার। এই ঘটনায় ১৯৮৬ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন শ্যামলী দেবী। এরপর ২০০৫ সালে অবসর নেন তিনি। যদিও স্কুলে তখনও তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর ২০১৩ সালে বিচারপতি অশোক কুমার দাস অধিকারী শিক্ষিকার যাবতীয় বেতন ও পেনশন দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পর পেনশন দেওয়া হলেও, বোর্ড বেতন দেয়নি।
আরও পড়ুন, রোগীদের কাছে পৌঁছচ্ছে না ওষুধ! ৩ ঘণ্টা পর কলকাতা মেডিক্যালে চালু সেন্ট্রাল ল্যাব