WB Assembly Election 2021: ভবানীপুরে দুয়ারে দুয়ারে অমিত শাহ, হাতে লিফলেট, পুরনো সহকর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্ণভোজ
ভোটের এই বড়াইয়ে ভবানীপুর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব মুখোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন- এই প্রথম পায়ে হেঁটে প্রচার। ভবানীপুরের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে লিফলেট হাতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুয়ারে দুয়ারে প্রচার বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের জন্য। ভবানীপুরে না দাঁড়িয়ে এবার নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ভোট হয়ে গিয়েছে। এবার রাজ্যে পঞ্চম দফায় ১৭ এপ্রিল ভোট ভবানীপুরে। ভোটের এই বড়াইয়ে ভবানীপুর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিপক্ষেই আবার বিজেপি প্রার্থী করেছে ‘দলবদলু’ রুদ্রনীল ঘোষকে। অভিনেতার সমর্থনে শুক্রবার ভবানীপুরের বাসিন্দাদের দরজায় লিফলেট হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের নম্বর টু। ভবানীপুরবাসী তাতেই অবাক।
মমতা না থাকলেও ভবানীপুর অত্যন্ত নজরকাড়া আসন, পথে নেমে এসে সেটাই শুক্রবার নতুন করে বুঝিয়ে দিলেন শাহ। কলকাতা শহরে এই প্রথম কোনও কেন্দ্রে হেঁটে প্রচারে গেলেন তিনি। রুদ্রনীলের হয়ে ভোট চাইলেন বেলতলা বস্তি এলাকায়। তার কারণ, গেরুয়াশিবির মনে করছে, ভবানীপুর এবার বিজেপির পক্ষে। সেটা বুঝতে পেরেই ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে গিয়েছেন মমতা। নন্দীগ্রাম থেকে মমতা নিজেরে প্রার্থী ঘোষণা করা ইস্তক বারবার বিজেপির শীর্ষ নেতাদের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন তিনি। মোদী থেকে শাহ, নাড্ডা থেকে দিলীপ ঘওষ সকলেই বারবার বলেছেন, ভবানীপুরে হার অবশ্যম্ভাবী বুঝেই স্কুটি ঘুরিয়ে নন্দীগ্রাম গেছেন ‘দিদি’।
বিজেপির ভবানীপুর নিয়ে আশাবাদী হওয়ার পিছনে রয়েছে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল। ২০১৬তে যেখানে ভবানীপুর থেকে মমতা জিতেছিলেন ২৫৩০১ ভোটে, সেখানে ২০১৯য়ে লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে তৃণমূল ভবানীপুরে এগিয়েছিল মাত্র ৩১৬৮ ভোটে। দেখা গিয়েছিল, ভবানীপুরে মমতার বাড়ি য়ে ওয়ার্ডে, সেই ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-ই এগিয়ে ছিল। ভবানীপুরের ৬৩,৭০,৭১,৭২ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডেও ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে ছিল।
এ ছাড়াও ভবানীপুরে শাহের দুয়ারে দুয়ারে ঘোরার পিছনের একটা অন্যতম বড় কারণ হল, ভবানীপুরের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই অবাঙালি। গুজরাতি ভাষাভাষীর একটা বড় অংশের মানুষ থাকেন এখানে। তাঁদের কাছ অবধি পৌছনো এবং তাঁদের সরাসরি একটা বার্তা দেওয়াও যে শাহের পায়ে হেঁটে নেমে আসার একটা বড় কারণ, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ভবানীপুরে তৃণমূলকে পরাজিত করতে পারলে এই বার্তাও দেওয়া যাবে যে, হারবেন বুঝেই ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে গিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মমতা।
শুক্রবার ভবানীপুরে জাস্টিস চন্দ্রমাধব রোডের একটি বাড়িতে মধ্যাহ্ণভোজ সারেন। এই বাড়িতে থাকেন রাজ্য বিজেপির পুরনো কর্মী সমরেন্দ্রপ্রসাদ বিশ্বাস। বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী ও তপন শিকদার রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে তিনি দু’বার বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়িতে মধ্যাহ্ণভোজ করে আদি বিজেপির কর্মীদেরও কি বার্তা দিলেন অমিত শাহ?