আশুতোষ কলেজে নিগৃহীত অধ্যক্ষ, অভিযোগের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের
ফের অশান্ত হল আশুতোষ কলেজ। এবার কলেজের মধ্যেই নিগৃহীত হলেন অধ্যক্ষ। গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ।
ফের অশান্ত হল আশুতোষ কলেজ। এবার কলেজের মধ্যেই নিগৃহীত হলেন অধ্যক্ষ। অভিযোগ, গত বুধবার বিকেলে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় একদল ছাত্র। তাদের বক্তব্য, আশুতোষ কলেজের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন কলেজের ভিতর রয়েছেন অধ্যক্ষ। শুধু ঘরে ভাঙচুর চালানোই নয়। অধ্যক্ষকে কার্যত জবরদস্তি তাঁর ঘর থেকে বের করে দেয় হামলাকারীরা। মারধর করা হয় আশুতোষ কলেজের ছাত্রছাত্রীদেরও। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি কলেজের ছাত্রদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠলেও, গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ।
বুধবার বিকেল তখন প্রায় সাড়ে পাঁচটা। নিজের ঘরেই ছিলেন আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ দীপক কর। হঠাতই তাঁর ঘরে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে একদল ছাত্র। নিজেদের শ্যামপ্রসাদ মুখার্জি কলেজের ছাত্র বলে দাবি করে তারা। নিজেদের একাধিক দাবি আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষের সামনে তুলে ধরে ছাত্ররা। অভিযোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষকে জানানোর কথা বলেন দীপকবাবু। এরপর ওই ছাত্ররা চলে গেলেও আধঘণ্টার মধ্যেই সদলবলে ফিরে আসে তারা। অভিযোগ, দোতলার একটি কোলাপসিবল গেট এবং অধ্যক্ষের ঘরের সুইং ডোর ভেঙে ঢুকে পড়ে তারা। তাদের একটাই বক্তব্য ছিল, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকলেজের সময় শুরু হয়ে যাওয়ার পরও কেন কলেজে রয়েছেন আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ। আর এই দাবিতেই অধ্যক্ষের ঘরে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় ওই ছাত্ররা।
শুধু অধ্যক্ষকেই নয়, সেসময় তাঁর ঘরে উপস্থিত অন্য শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদেরও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। আশুতোষ কলেজের ছাত্রছাত্রীদেরও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আশুতোষ কলেজ ভবনে সারাদিনে তিনটি কলেজের ক্লাস হয়। সকালে যোগমায়াদেবী কলেজ, দুপুরে আশুতোষ কলেজ এবং সন্ধেবেলা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি কলেজ। ফলে, তিনটি কলেজের সময়সীমাই পরস্পরের ওপর ওভারল্যাপিং। আর এভাবেই এতদিন ধরে পারস্পরিক সহাবস্থানে চলে আসছে তিনটি কলেজ। ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আশুতোষ কলেজ কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে এই কলেজ। অথচ এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটি সাম্প্রতিককালে বারবারই উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই ছাত্র সংঘর্ষে চোখে গুরুতর আঘাত পান শৌভিক হাজরা নামে এক ছাত্র। ছাত্র সংঘর্ষের জেরে গত এপ্রিল মাসে কলেজের ভিতরেই আক্রান্ত হয়েছিলেন এক এসএফআই নেত্রী। শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য দূর করতে একাধিক প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। কিন্তু, তাঁর কেন্দ্রেরই আশুতোষ কলেজে বুধবারের ঘটনা ফের কলেজে নৈরাজ্যের ছবিকে সামনে আনল।