গ্রামে ২টো স্টেশনে সামান্য কিছু ঘটেছে, গুলি করে মেরে দিতে বলছেন? রণংদেহি মমতা
বুধবার NRC ও CAA-এর বিরোধিতায় হাওড়া ময়দান থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পদযাত্রা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রেলের সম্পত্তি ধ্বংস করলে 'শ্যুট অ্যাট সাইটে'র নির্দেশ দিয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গড়ি। গণতান্ত্রিক দেশে এমন নির্দেশের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়,''গ্রামে দুটি জায়গায় সামান্য কিছু ঘটনা ঘটেছে। সে কারণে গুলি করে মারার নির্দেশ দিচ্ছেন! এটা গণতান্ত্রিক দেশ।''
বুধবার NRC ও CAA-এর বিরোধিতায় হাওড়া ময়দান থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পদযাত্রা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিংসার জন্য বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন,''বিজেপি ছিল না। তখন দেশে অশান্তি হয়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল, তখন দাঙ্গা দেখেছিলাম। তারপরে আর কিছু হয়নি। লোকে শান্তিতে জীবন কাটিয়েছে। এখন কাশ্মীর জ্বলছে, অসম জ্বলছে, ত্রিপুরা জ্বলছে।''
মালদহে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হরিশচন্দ্রপুর ও ভালুকা স্টেশনে পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন বিজেপির দুই সাংসদ খগেন মুর্মু ও নিশীথ প্রামাণিক। অনুমতি না থাকায় তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিস। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতার মন্তব্য,''বাংলায় কেন দুটি স্টেশন জ্বলেছে? আমিও ৩ বছর রেলমন্ত্রী ছিলাম। প্রতিটা স্টেশনের একটা নাম থাকে- স্টেশন এ গ্রেড, বি গ্রেড, সি গ্রেড, ডি গ্রেড ও ই গ্রেড। গ্রামে দুটি জায়গায় সামান্য ঘটনা ঘটেছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে। আপনারা কী করেছেন? বলছেন সবাইকে গুলি করে দিন। এটা গণতান্ত্রিক দেশে চলে না। সকালে জানলাম দুই সাংসদ রেল স্টেশন দেখতে যাবে। এত দেখতে গেলে দিল্লিতে যাও না। অমৃতসরে যাও। সব কুছ হোতা হ্যায় তব অন্দর মে গুস যাতা হ্যায়। গড়বড় করনে নেহি দেগা। ''
বলে রাখি, শুক্রবার থেকে রাজ্যে ছড়িয়েছে Citizenship Amendment Act বিরোধী বিক্ষোভ। আর সেই বিক্ষোভের নিশানায় পড়েছে ভারতীয় রেল। হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশনে চলেছে দেদার ভাঙচুর। করমণ্ডল এক্সপ্রেস লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে পাথর। মুর্শিদাবাদের লালগোলা ও বেলডাঙা স্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কৃষ্ণপুরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৪টি ট্রেন। এছাড়াও একাধিক স্টেশনে ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা।
একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন মমতা। বলেন,''রাস্তা অবরোধ করবেন না। রেল জ্বালাবেন না। নির্দিষ্ট জাতি বা ধর্মের আন্দোলন নয় এটা। সব ধর্ম ও জাতির আন্দোলন হোক। সবাই সমর্থন করছে, আপনারা কেন বিভেদ করছেন?''
অমিতের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, আপনার দলকে নিয়ন্ত্রণ করুন। দেশকে নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেটা ভুলে যাবেন না। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করুন।
আরও পড়ুন- 'বাংলায় অনুপ্রবেশ ভয়ঙ্কর সমস্যা', ২০০৫ সালে সংসদের ভিডিয়ো ভুয়ো, দাবি মমতার