ডেঙ্গি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ফিরহাদ হাকিমের, শুরু শরিকি কাজিয়া
রবিবার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের পর সোমবার পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গি নিয়ে করা মন্ত্যবের জেরে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের প্রথমসারির এই নেতা। তিনি বলেন, ''ডেঙ্গির প্রকোপের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রাকৃতিকভাবেই দু-এক বছর পর পর ডেঙ্গির ছড়ায়।''
রবিবার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের পর সোমবার পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গি নিয়ে করা মন্ত্যবের জেরে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের প্রথমসারির এই নেতা। তিনি বলেন, ``ডেঙ্গির প্রকোপের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রাকৃতিকভাবেই দু-এক বছর পর পর ডেঙ্গির ছড়ায়।`` প্রতিদিন রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক ভাবেই ডেঙ্গি পরস্থিতি অতন্ত্য উদ্বেগজনক। কলকাতা আর সল্টলেকের অবস্থা সবথেকে খারাপ। ফলস্বরূপ কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে রাজ্য সরকার এবং পুরসভাকে। বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আসা সমলোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে `পরিবর্তনের`সরকার। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের নেতারা সেই সব সমালোচনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
গতকালই, সরকার কেন, সেনাবাহিনী চাইলেও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, বলে মন্তব্য করেছিলেন অতীন ঘোষ। তারপর আজ ডেঙ্গি নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। রবিবার কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য চেপে যাওয়ার অভিযোগ আনেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার জবাব দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি করে বসেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী। এর সঙ্গে অবশ্য কংগ্রেসকে আবারও সিপিআইএম-এর 'বি-টিম' বলেন ফিরহাদ।
কলকাতা এবং সল্টলেকে ডেঙ্গি পরিস্থিতি দিন দিন আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। ম্যাক অ্যালাইজা টেস্টেও ধরা পড়েছে কীভাবে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী। ক্ষোভ জমছে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়েও। প্রতি ওয়ার্ডেই কেউ না কেউ অসুস্থ। সরকারি হিসেব বলছে এনএস-ওয়ান অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অনুযায়ী রবিবার পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী শুধুমাত্র কলকাতায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ১৬৬। রবিবার দিনই কলকাতায় মারা গিয়েছেন ৪ জন। এ নিয়ে কলকাতায় ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ১৭। রাজ্যের নিরিখে সংখ্যাটা ১৯। যদিও সরকারি হিসেব বলছে চলতি মরসুমে ডেঙ্গিতে মারা গেছেন মাত্র তিন জন। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে উল্টোডাঙার একটি নার্সিংহোমে চিকিত্সাধীন কলকাতা পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জীবন সাহা। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে কলকাতা ও কলকাতা পার্শ্ববর্তী এলাকায় ডেঙ্গি মহামারীর আকার নেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
এডিস ইজিপ্টি মশা বাহিত ডেঙ্গির ভাইরাস মিউটেশনের মাধ্যমে নিজেদের জেনেটিক চরিত্র বদলে ফেলায় বদলে যাচ্ছে ডেঙ্গির সাধারণ উপসর্গ গুলো। তাতেই ঘটছে বিপত্তি। বহু ক্ষেত্রে রোগ সনাক্তকরণে দেরী হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে রোগীদের প্রাণনাশের আশঙ্কা। আক্রান্ত রোগীর ভারে কার্যত বেসামাল কলকাতার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলি। আইসিইউ থেকে জেনেরাল বেড-জায়গা নেই কোথাও। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হ`তে হচ্ছে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারদের । কলকাতার পাশাপাশি ডেঙ্গির দাপটে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সল্টলেকের বাসিন্দারাও। তাঁরা অবশ্য সরাসরি অভিযোগের তির হেনেছেন পুরসভার উপর। তাঁদের মতে পরিস্থিতি সামালদিতে মোটেও তৎপর নয় পুরসভা।